নিজস্ব প্রতিবেদক:
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে রুবেল চৌধুরী ওরফে জামালের ‘মো. জামাল’ নামক আইডি থেকে মানহানিকর মন্তব্য করা হয় নুর ইসলামের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি মো. জামালের ফেইসবুক আইডিতে দেয়া এমন মন্তব্যের স্ক্রিনশট বাংলাবার্তার হাতে এসেছে । এতে দেখা যায়, নুর ইসলামকে ইয়াবা ও হিরোইন ব্যবসায়ি উল্লেখ করা সহ মানহানিকর শব্দ প্রয়োগ করে প্রচার করেন জামাল।
এদিকে জামালের এমন মানহানিকর মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন নুর ইসলাম। তিনি বাংলাবার্তাকে বলেন, জায়গা জমির বিরোধকে ঘীরে আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন উদ্দেশ্য প্রণোদিত মন্তব্য করে সমাজে আমার মানহানি করা হয়েছে। অনেকে হয়তো প্রকৃত ঘটনা না জেনেই জামালের উদ্দেশ্য প্রণোদিত মন্তব্য বিশ্বাস করতেও পারে। যার ফলে সমাজের মানুষের কাছে আমি ছোট হয়েছি।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ আইনে মানহানি একই সঙ্গে দেওয়ানি ও ফৌজদারি অপরাধ। দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারাতে বলা হয়েছে ‘মৃত ব্যক্তিরও খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট হয় এমন কোনো বক্তব্য দিলেও মানহানির মামলা হতে পারে।’
এর আগে চলতি বছরের ১২ মার্চের একটি ঘটনায় নুর ইসলাম নোয়াখালীর কবিরহাট থানায় রুবেল চৌধুরী ওরফে জামাল (নুর ইসলামের ভাই), আমিন উল্যা ও খতিজা খাতুনের ( নুর ইসলামের বাবা ও মা) বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
অভিযোগ পত্রে নুর ইসলাম বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন যাবৎ প্রবাসে থাকা অবস্থায় বাড়িতে বাবা মা ও পরিবারের জন্য টাকা পাঠাই। যা দিয়ে আমার বাবা মা জায়গা জমি ক্রয় করে। কিন্তু পরবর্তীতে সেই জায়গা গুলো থেকে তারা আমাকে বঞ্চিত করে তা আমার ভাইয়ের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়। আমি বাড়িতে ফিরে আসার পর বিবাদীগন আমার কোনো টাকা এবং সম্পত্তির হিসাব দিতে পারেনি।
অভিযোগ পত্রে আরও বলা হয়, নিম্নবর্নিত তফসিল সম্পত্তির ( নোয়াখালীর কবিরহাট থানার অন্তর্গত ২০৫ নং মৌজার ৩১৫ নং খতিয়ানে ১৬৮৬ দাগ, ৩১১ নং খতিয়ানে ১৬৮৪ দাগ, ৩১৪ নং খতিয়ানে ১৬৮৩ দাগ, ৩০১ নং খতিয়ানে ১৬৮২ দাগ, ৩১৬ নং খতিয়ানে ১৬৮৭ দাগে সর্বমোট ৬৫ শতাংশ বিরোধীয় ভূমি, যা ভিটি ও পুকুর) খরিদ সূত্রে দখলদার ও মালিক আমি।
বিবাদীরা দীর্ঘদিন যাবৎ আমার এসব জায়গাও দখল করার চেষ্টা করছে। আর্থিক সংকটের কারনে গত এক বছর যাবৎ নিজের জায়গাগুলো বিক্রির চেষ্টা করলে বিবাদীরা আমাকে মারধর সহ খুন জখমের হুমকি দিতে থাকে। যার ফলে কেউ আমার এসব জায়গা কিনতে আসে না। গত ১২ মার্চ একই ঘটনার জেরে বিবাদীরা আমাকে মারধরের জন্য তেড়ে আসে এবং হত্যার হুমকি দেয়।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারা অনুসারে- যে ব্যক্তি মানহানির উদ্দেশ্যে বা মানহানিকর জেনেও উদ্দেশ্যমূলক শব্দাবলির সাহায্যে কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে এমন কোনো নিন্দা প্রকাশ করে যে, এর ফলে উক্ত ব্যক্তির সুনাম নষ্ট হয়, সেই ব্যক্তি কিছু ব্যতিক্রম অবস্থা ছাড়া উক্ত ব্যক্তির মানহানি করেছে বলে ধরা হবে। বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির শাস্তি বর্ণনায় বলা হয়েছে, এই অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয়বিধ দন্ডে দণ্ডিত হতে পারে।
এছাড়া বাংলাদেশ তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন-২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) অনুযায়ী ফেসবুক বা কোনো গণমাধ্যমে কাউকে নিয়ে মানহানিকর বা বিভ্রান্তিমূলক কিছু পোস্ট ও ছবি বা ভিডিও আপলোড করলে তা সাইবার অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এর শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদণ্ড এবং ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা।
এমএইচ/বাংলাবার্তা