ট্রায়ালের চূড়ান্ত ধাপে গ্লোবের করোনা ভ্যাকসিন

237
নিজস্ব প্রতিবেদক:
 

অ্যানিমেল ট্রায়াল ‌শেষ করে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের তৃতীয় অর্থাৎ চূড়ান্ত ধাপের জন্য প্রস্তুত ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড। ভ্যাকসিন আবিষ্কারের অগ্রগতি, সাফল্য, প্রতিবন্ধকতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, জুলাই মাসে একটা সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম। সেখানে বলেছিলাম, ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে আমরা একটা রেগুলেটর অ্যানিমেল ট্রায়াল করবো। আমাদের ওই অ্যানিমেল ট্রায়াল শেষ পর্যায়ে। এই সপ্তাহের শেষ অথবা সামনের সপ্তাহের শুরুতে আরেকটা সংবাদ সম্মেলন করে রেগুলেটর অ্যানিমেল ট্রেলের ডাটা সবাইকে জানাবো।
 
ডা. আসিফ বলেন, এর মধ্যে আমরা একটা পাবলিকেশন জমা দেব। এই অ্যানিমেল ট্রায়ালের ডাটা নিয়ে আমাদের সিআরও বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) আর্টিকেল অ্যাপ্রোভালের জন্য আবেদন করবে। আর্টিকেল অ্যাপ্রোভাল পেয়ে গেলে এগ্রিমেন্ট শুরু করবো।
 
এটা নির্ভর করছে বিএমআরসি কত দ্রুত আমাদের প্রটোকলটা রিভিউ করে তারা অ্যাপ্রোভাল দেবে তার ওপরে।
 
স্বেচ্ছাসেবী বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রচুর স্বেচ্ছাসেবীদের সাড়া পাচ্ছি। অনেকে মেইল করছে, মেসেজ পাঠাচ্ছে- ‘যে আমরা স্বেচ্ছাসেবী হতে চাই’। আমরা যারা এর সঙ্গে জড়িত আছি, নিজেরাও স্বেচ্ছাসেবী হতে চাই।
 
‘এটা আসলে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রটোকলের উপর নির্ভর করে। এই ভলেন্টিয়ার রিক্রুটমেন্ট সিআরও করেন। এটা আমাদের কোনো কন্ট্রোল নেই। এটা সিআরও করবেন। যে ক্রাইটেরিয়া আছে সেই অনুযায়ী সিআরও সিলেকশন করবে কারা ভলেন্টিয়ার রিক্রুটমেন্ট করবে।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে ডা আসিফ বলেন, অ্যানিমেল ট্রায়ালের ডাটাসহ সব তথ্য-উপাত্ত অ্যাপ্রোভালের জন্য আবেদন করার পর আমাদের আর করার কিছু থাকে না। তখন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে কত দ্রুত বিএমআরসি এটা অ্যাপ্রোভাল দেবে। সিআরও সেটা কত দ্রুত করতে পারবেন, সে অনুযায়ী আমাদের মার্কেট অপারেশন কত দ্রুত দিতে পারবেন। আমরা বাইরের দেশের প্রটোকল ফলো করে একটা প্রটোকল বানিয়েছি, সেখানে আমাদের তিন মাসের মধ্যেই এ প্রক্রিয়াগুলো শেষ করা সম্ভব বলে মনে করি।
 
‘আসলে বিষয়টা এরকম যে আপনি তেজগাঁও থেকে উত্তরা যাবেন। রাস্তা ফাঁকা থাকলে আপনি আধাঘণ্টায় যেতে পারবেন। আর রাস্তা যদি ফাঁকা না থাকে তাহলে তো একটু দেরি হতে পারে। তো নিশ্চিতভাবে এটা এখন আমাদের কন্ট্রোলে নেই বলেও জানান তিনি।
 
এদিকে নিজের দেশে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলকভাবে নিজের শরীরে প্রয়োগ করতে চান গ্লোব বায়োটেকের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা।
 
জানা গেছে, তার ছোট ভাই কোভিড-নাইন্টিনে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাই ভাইরাসটির টিকা আবিষ্কার প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। নাজনীন সুলতানা বলেন, আমার ছোট ভাই চট্টগ্রাম মেডিকেলের ডাক্তার ছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমরা নিজের প্রডাক্ট ও দেশে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলকভাবে নিজের শরীরে প্রথম প্রয়োগ করতে চাই।
এমডি/এমএইচ/বাংলাবার্তা