Sunday, November 16, 2025
Homeপ্রচ্ছদকোটি টাকার বৃত্তি নিয়ে লন্ডনের ইটন কলেজে সিলেটের সৌমিক

কোটি টাকার বৃত্তি নিয়ে লন্ডনের ইটন কলেজে সিলেটের সৌমিক

নিজস্ব প্রতিবেদক:
 
বাংলাদেশের সিলেটের সন্তান সৌমিক হায়াত। গড়েছেন এক নতুন ইতিহাস। শুধু মেধার জোরে প্রায় এক কোটি টাকার (এক লাখ পাউন্ড) বৃত্তি পেয়ে লন্ডনের ইটন কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। প্রিন্স উইলিয়ামস, প্রিন্স হ্যারি, ব্রিটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনসহ সাবেক ১৯ জন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এই ইটনে পড়ালেখা করেছেন।
চলতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১ হাজার ২০০ আবেদনের বিপরীতে মোট ১২ জন ভর্তির সুযোগ পান। এর মধ্যে সৌমিক একজন। সৌমিক লন্ডনের হর্নচার্চ স্কুলের ছাত্র ছিল। হর্নচার্চ স্কুলের এই প্রথম কোনো শিক্ষার্থী ইটন কলেজে ভর্তি হওয়ার গৌরব অর্জন করে। সৌমিককে নিয়ে তার বাবা-মা, ভাই যেমন গর্বিত তেমনি গর্বিত পুরো বাংলাদেশ।
ব্রিটেনের ১৯ জন প্রধানমন্ত্রী তৈরি করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। হয়তো অদম্য এই বাংলার কৃতী সন্তান একদিন হতেও পারেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিংবা উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা।
ভর্তি হওয়া সম্পর্কে সৌমিকের মা আবেগাপ্লুত হয়ে বললেন, ‘ইটনে আমার ছেলে চান্স পাবে এটা ছিলে আমাদের স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য প্রয়োজনে আমাদের বাড়ি বিক্রি করে দেব তবু ইটনে পড়াব। সেই আশা পূর্ণ হয়েছে, ওর মেধার জন্য পূর্ণ স্কলারশিপ পেয়েছে এটা আমাদের জন্য আরো আনন্দের।
সৌমিক শুধু লেখাপড়া করে নয় সব মিলিয়ে যেন একজন ভালো মানুষ হতে পারে। সেই দোয়া চাই সবার কাছে। তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি এলিটদের সঙ্গে লেখাপড়া করব। অনেক ধনী কিংবা রাজ পরিবারের সন্তানদের সঙ্গে একই হোস্টেলে থাকতে হবে। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই আমাকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে’।
সৌমিক তিনি বলেন, ‘হয়তো আমার লক্ষ্য অনেক উঁচু সেই উঁচু থেকে আরো উঁচু হবে তবু আমি আমার অতীতকে ভুলে যাব না। আমি আমার ছোটবেলার বন্ধুদের কথা ভুলে যাব না। দেশের জন্য কিছু করতে পারলে সেটাই হবে আমার স্বার্থকতা’।
ইটন কলেজ:
ব্রিটিশ রাজা ষষ্ঠ হেনরি ১৪৪০ সালে ইটন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। লন্ডনের অদূরে বার্কশায়ারে উইন্ডসর দুর্গের কাছেই এর অবস্থান। এখানে মূলত ‘ইয়ার সেভেন’ (সপ্তম শ্রেণি) থেকে ‘এ লেভেল’ (উচ্চমাধ্যমিক) পর্যন্ত পড়ানো হয়। শুধু ছেলেরাই এখানে পড়াশোনা করে। এটি একটি আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২৫টি সুবিশাল বাড়িতে শিক্ষার্থীদের রাখা হয়। বর্তমানে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৩০০।
প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা কক্ষ। প্রতি বাড়িতে একজন হাউস মাস্টার, দুজন ডেপুটি হাউস মাস্টার ও সহকারী কর্মী রয়েছে। আছে গৃহকর্মী। নির্ধারিত বিশাল খাবারঘরে চলে নিয়মতান্ত্রিক ভোজ। কঠোর শৃঙ্খলায় রাখা এই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, সংগীত চর্চাসহ যেকোনো বিষয়ে মেধা বিকাশের সুযোগ রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা যাতে প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লাগাতে পারে, সেজন্য আছে সার্বক্ষণিক পরামর্শের ব্যবস্থা। এ প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক ফি প্রায় ৩৬ লাখ টাকা। এটা শুধু মৌলিক খরচ। বাড়তি প্রশিক্ষণ বা সেবার জন্য গুনতে হয় অতিরিক্ত অর্থ।
২০০২ সালে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ভর্তি নীতিমালায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনে। মেধাবীরা যাতে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য ২০ শতাংশ ‘অ্যাসিসটেড প্লেস’ বা বৃত্তিপ্রাপ্ত আসন চালু করে। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ২৭৩ জন শিক্ষার্থী গড়ে ৬৬ শতাংশ কম বেতনে পড়েছে। আর ৭৩ জন শিক্ষার্থী পড়ছে সম্পূর্ণ বিনা বেতনে।
 
এমডি/এমএইচ/বাংলাবার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments