Thursday, November 13, 2025
Homeবিভাগচট্টগ্রাম১৭ ঠিকাদারের সঙ্গে জিএমের বৈঠক, নতুন টেন্ডার আহ্বানের প্রতিশ্রুতি

১৭ ঠিকাদারের সঙ্গে জিএমের বৈঠক, নতুন টেন্ডার আহ্বানের প্রতিশ্রুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্যাটারিং সার্ভিসের টেন্ডারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নতুন টেন্ডার আহ্বান করছিল না রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। নানান আলোচনা সমালোচনার পর অবশেষে নতুন টেন্ডার আহ্বানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেন। গত ২৫ জানুয়ারি রেলওয়ে ক্যাটারিংয়ের ১৭ ঠিকাদার সিন্ডিকেটদের নিয়ে করা বৈঠকে এসব প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

তবে অভিযোগ, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য ঠিকাদার সিন্ডিকেট বিপুল পরিমান টাকার বিনিময়ে মহাব্যবস্থাপককে দিয়ে এই বৈঠকের ব্যাবস্থা করেছে। বৈঠকে তিনি ১৭ ঠিকাদার সিন্ডিকেটের অবৈধ টেন্ডার বাতিল করেননি। উল্টো তাদেরকে নিয়ে রেলওয়ের সেবা ও খাবারের মান বৃদ্ধি নিয়ে অলোচনা করেছেন।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, বৈঠকে ঠিকাদারদের সহায়তাকারী সিসিএম (চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার) বিভাগের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত ২৩ জানুয়ারি বিভিন্ন পত্রিকায় ‘রেলওয়ের ক্যাটারিং সার্ভিসের টেন্ডারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ও করা হচ্ছে না নতুন টেন্ডার’ সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর বিপুল পরিমান টাকার বিনিময়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেন এই বৈঠকের ব্যাবস্থা করেন। ১৭ ঠিকাদার সিন্ডিকেটের অবৈধ টেন্ডার বাতিল না করে উল্টো তাদেরকে নিয়ে রেলওয়ের সেবা ও খাবারের মান কিভাবে উন্নতি করা যায় তা নিয়ে অলোচনা করেন তিনি। যা পুরোটাই ছিল লোক দেখানো এবং খুবই হাস্যকর একটি বৈঠক। পুরো আলোচনায় একবারও (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেন অবৈধ টেন্ডার এর কথা উল্লেখ করেন নি।

সূত্র মতে, গত ৩ মাস আগে এই অবৈধ টেন্ডার বাতিল করার জন্য বাংলাদেশ রেলওেয়ের ডিজির কার্যালয় থেকে চিঠি দেয়া হয় (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেন এবং সিসিএম নাজমুল হোসেনকে। অথচ সেই আদেশ অমান্য করেন তারা।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সিসিএম নাজমুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালে প্রাক তুলিকাভুক্ত করার জন্য ওপেন টেন্ডার ডাকা হয়। ৪৩ জন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রাক তুলিকাভুক্তির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু নানান ঝামেলার কারণে এখনো তালিকাভুক্ত করা হয়নি। সাবেক ডিজি ডি এম মজুমদার পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এই ১৭ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকেই বজায় রাখতে বলেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নবায়ন করলে সরকারের রাজস্বের কোন ক্ষতি হচ্ছে না। বরং প্রতিবার নবায়ন করলে সরকারের ১০ ভাগ রাজস্ব বাড়ে। কিন্তু নতুন টেন্ডার হলে রাজস্ব বাড়তেও পারে আবার কমতেও পারে। তবে নতুন টেন্ডার হলে রাজস্ব কিভাবে কমে যাবে সেটির কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেন নি।

সিসিএম নাজমুল ইসলাম বলেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে আবারও তালিকাভুক্ত করন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। যদি আসে তাহলে আগে তালিকাভুক্তির কাজ শেষ করার পর নতুন টেন্ডারের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে তালিকাভুক্তির কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে তার কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তিনি কোন সাড়া দেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঠিকাদাররা বলেন, এই বৈঠক রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য করা হযেছে। এ রকম বৈঠক আগে অনেক বারই হয়েছে। এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকতা আর ১৭ ঠিকাদার সিন্ডিকেটের কাছে পুরো রেলওয়ে জিম্মি হয়ে আছে। এদের জন্য আমরা সাধারণ ঠিকাদাররা বছরের পর বছর কোন কাজ পাচ্ছি না। এসবের কারনে অনেক নামকরা পুরানো  ঠিকাদার রেলওয়ের ঠিকাদারির কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। সরকার যদি রেলওয়ের এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকতা এবং সিন্ডিকেট ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ না নেয় তাহলে অচিরেই রেলওয়ের দীর্ঘ দিনের সুনাম নষ্ট হয়ে যাবে।

তথ্য মতে, নতুন ঠিকাদারদের তালিকাভুক্তির কাজ বিলম্ব করতে  ও ১৭ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকেই বারবার কাজ দেয়ার পিছনে আছেন রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সর্দার শাহাদাত আলী। তিনি পুর্বাঞ্চলের সিসিএস থাকা অবস্থায় বিভিন্ন স্টেশনের ৪৮টি দোকান তার পছন্দের ব্যাক্তিদের ইজারা দেন। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে নতুন টেন্ডার না দিয়ে সেগুলোই নবায়ন করে রেলওয়ে।

এসএস/বাংলাবার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments