Thursday, November 13, 2025
Homeজাতীয়দেশে প্রথমবারের মত ধর্ষণ মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ড

দেশে প্রথমবারের মত ধর্ষণ মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে দলবেঁধে এক মাদরাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। সেই সাথে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

এসময় আদালতে দুইজন আসামি উপস্থিত থাকলেও বাকি তিনজন জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছে। এতে দেশে প্রথমবারের মত ধর্ষণ মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হল।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে টাঙ্গাইল জজকোর্টের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারিক হাকিম খালেদা ইয়াসমিন এই রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো-জেলার মধুপুর উপজেলার চারালজানী গ্রামের বদন চন্দ্র মণি ঋষির ছেলে সঞ্জিত (২৮), একই উপজেলার গোলাবাড়ি গ্রামের শ্রী দিগেন চন্দ্র শীলের ছেলে গোপি চন্দ্র শীল (৩০), একই এলাকার সুনীল চন্দ্র শীলের ছেলে সাগর চন্দ্র শীল (৩৩), সুনীল মণি ঋষির ছেলে সুজন মণি ঋষি (২৮) ও মণিন্দ্র চন্দ্রের ছেলে রাজন চন্দ্র (২৬)। এদের মধ্যে সাগর, সুজন, মনি ও রাজন জামিনে বের হয়ে পলাতক রয়েছে।

টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর নাছিমুল আকতার জানান, ২০১২ সালে দণ্ডিত আসামিদের মধ্যে সাগর চন্দ্র শীলের সঙ্গে মোবাইলে পরিচয় হয় জেলার ভূঞাপুর উপজেলার ছাব্বিশা গ্রামের ওই মাদরাসা ছাত্রীর। সেই সুবাদে ওই বছরের ১৫ জানুয়ারি ওই ছাত্রী সকালে বাড়ি থেকে মাদরাসায় যাওয়ার উপজেলার শালদাইর ব্রিজের কাছে পৌঁছলে সাগর কৌশলে একটি সিএনজিতে তাকে এলেঙ্গা নিয়ে যায়। এরপর সেখান থেকে মধুপুর উপজেলার চারালজানী গ্রামে তার বন্ধু রাজনের বাড়িতে উঠে। সেখানে তার চার বন্ধু ওই ছাত্রীকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু সাগর হিন্দু থাকায় বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে মেয়েটি। এ কারণে ওই রাতে সাগর রাজনের বাড়িতে আটক রেখে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে ১৭ জানুয়ারি রাতে তাকে মধুপুরের বংশাই নদীর তীরে নিয়ে সেখানে তারা পাঁচজনে মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ফেলে যায়। পরদিন ভোরবেলা স্থানীয়দের সহায়তায় মেয়েটিকে স্বজনরা এসে উদ্ধার করে।

পরে এই ঘটনায় ওই ছাত্রী বাদী হয়ে ভূঞাপুর থানায় ১৮ জানুয়ারি দণ্ডিতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সুজন মণি ঋষিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। এরপর ১৯ জানুয়ারি গ্রেফতার সুজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এসময় সুজন তার জবানবন্দিতে সাগর, রাজন, সঞ্জিত ও গোপি চন্দ্র জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

পুলিশ তদন্ত শেষে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। আজ এ মামলার রায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড দিলো আদালত।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা জানান, প্রেম সংক্রান্ত বিষয়ে বাদী (ওই মাদরাসা ছাত্রী) নিজেই তার বন্ধুদের সাথে চলে গেছে। যেভাবে লেখা হয়েছে সেখানে সরাসরি কোন ধর্ষণের সাক্ষী নেই। তারপরও বিজ্ঞ আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রদান করেছেন। এতে আসামি পক্ষ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে যাবো। আমরা আশা করি সেখানে ন্যায় বিচার পাবো এবং তারা খালাস পাবে বলে আশা করি।

এফএম/বাংলাবার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments