নিরবে মানুষের জন্য কাজ করতেন ইরফান, শর্ত একটাই ’কেউ যাতে না জানে’

 

বিনোদন ডেস্ক:

দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো ছিলো ইরফান খানের স্বভাব। আগেও বহু দুস্থ মানুষের উপকার করেছেন তিনি। আর করোনা মহামারির দুঃসময়ে আক্রান্তদের চিকিৎসায় তিনি এগিয়ে আসবেন না, তাই কি হয়! কিন্তু অন্যান্য অনেক তারকার মতো ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করতেন না তার সহায়তার খবর।

করোনা মহামারিতে চুপিচুপি সাহায্য করে গেছেন ইরফান খান। সম্প্রতি ইরফানের এক বন্ধু এই খবর প্রকাশ্যে এনেছেন। সেই বন্ধুর নাম জিয়াউল্লাহ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জিয়াউল্লাহ জানিয়েছেন, ইরফান প্রায়ই মানুষকে সাহায্য করতেন। কিন্তু সবসময় খেয়াল রাখতেন যাতে এনিয়ে কোনও খবর কখনও মিডিয়ায় প্রকাশিত না হয়। করোনা আক্রান্তদেরও অনুদান দিয়েছিলেন ইরফান। কিন্তু কেউ যেন এই ব্যাপারে মিডিয়াকে না বলে, তা সবাইকে বলেছিলেন তিনি।

ইরফানের এই বন্ধু জানান, করোনা পরিস্থিতিতে দেশের মানুষকে সাহায্য করার কথা ভেবেছিলেন তিনি ও তার কয়েকজন বন্ধু। ইরফান যখন সেকথা জানতে পারেন, তিনিও এগিয়ে আসেন। দরিদ্র মানুষদের সাহায্যার্থে গঠন করা সেই তহবিলে ইরফান নিজে অর্থ দিয়েছিলেন। তার একটিমাত্র শর্ত ছিল। এই সাহায্যের কথা যেন কেউ জানতে না পারে। তিনি বিশ্বাস করতেন, বাম হাত কী দিয়েছে, তা ডান হাতের জানা উচিত নয়। তার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল মানুষের শান্তি।

জিয়াউল্লাহ আরও বলেন, ছোটবেলায় যখন ও ঘুমাত, তখন বিছানার পাশে ঘুড়ি নিয়ে ঘুমাত। যখনই আসত, গোটা এলাকা পজিটিভিটিতে ভরে যেত। ও ওর মায়ের খুব কাছের মানুষ ছিল। মায়ের অসুস্থতার কথা শুনলেই ছুটে আসত। খুব অল্প সময়ের জন্য হলেও ইরফান আসত। তবুও মায়ের সঙ্গে দেখা করা কোনওভাবেই মিস করত না।

মায়ের মৃত্যুতেই প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছিলেন ইরফান খান। সেকথাও জানান জিয়াউল্লাহ। হয়তো সেই ধাক্কাই তাকে মন থেকে দুর্বল করে দিয়েছিল। তাই আর ক্যানসারের সঙ্গে লড়তে পারেননি তিনি।

গত ২৫ এপ্রিল ইরফান খানের মা সইদা বেগম মারা যান। ভারতে চলমান লকডাউনের কারণে মাকে শেষবারে মতো দেখতে পারেননি তিনি। এরই মধ্যে ইরফান খান নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর ২৯ এপ্রিল মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইরফান খান।

এমএইচ/বাংলাবার্তা