দোয়ারাবাজারে বন্যায় দুর্ভোগে লাখো মানুষ

দোয়ারা বাজারে বন্যা
দোয়ারা বাজারে বন্যা
দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি:
গত ২৪ ঘন্টায় গুড়ি গুড়ি হালকা বৃষ্টিপাত হলেও ভাটিতে পানির টান না থাকায় সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত রয়েছে। সুরমাসহ উপজেলার সকল নদনদীর পানি ধান ধান হয়ে কমলেও হাওর, বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটের পানি মোটেই কমছেনা।
অধিক ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের কাটাখালী বাজার, আমবাড়ি বাজারসহ বিভিন্ন গ্রামের লোকালয়ে এখনও কোমর পানি থাকায় গবাদি পশুসহ বানভাসিরা পড়েছেন চরম দূর্ভোগে। বাকি ৮ ইউনিয়নসহ শতাধিক গ্রামের বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটে হাঁটু পানি, কোমর পানি লেগে থাকায় গবাদি পশুসহ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পানিবন্দি লাখো মানুষ। উপজেলা সদরের সাথে সকল ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
সুরমা ইউনিয়নের মrস্য খামারি আব্দুর রহিম জানান, প্রথম দফা বন্যার পানিতে ভেসে গেছে সুরমা, বগুলা ও দোয়ারা সদর ইউনিয়নের শতাধিক ঘেরের কয়েক কোটি টাকার মাছ। বুকে আশা নিয়ে আবারও অধিকাংশ ঘেরে মাছের পোনা ছাড়েন খামারিরা। কিন্তু বিধি বাম ! সপ্তাহদিন না যেতেই আবারও দ্বিতীয় দফা বন্যায় সবকিছু ভেসে গেল। এখন আমাদের ভবিষ্যr অন্ধকার।
উপজেলা নদীভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম জানান, এবারের প্রথম দফা বন্যায় উপজেলা সদরে দুটি দোকান সুরমা নদীতে তলিয়ে যাওয়াসহ উপজেলা সদরের বিভিন্ন রাস্তা ও বাসাবাড়ি হাটু পানি থাকাবস্থায় উপর্যুপরি দ্বিতীয় দফা বন্যায় আবারও সবকিছু পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে।
চিলাই নদী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শিব্বির আকন্দ (সাব্বির) জানান, প্রথম দফা বন্যায় দোয়ারাবাজার-বগুলা-লক্ষীপুর সড়কে মোকামের পাশে, ক্যাম্পের ঘাটের পাশে ও উত্তর আলমখালী অংশে চিলাই নদীর বেড়িবাঁধে ভাঙনে সহস্রাধিক হেক্টর উঠতি আউশ ফসল, আমনের বীজতলা ও সবজি খেত বিনষ্ট। ভুক্তভোগীরা অনেক ভরসা নিয়ে কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার আশায় আবারও আমনের বীজ বুনেছিলেন, দ্বিতীয় বারের বন্যায় সে আশা মূহুর্তেই ধূলিস্মাr হয়ে গেল। উপর্যুপরি দু’দফা বন্যায় বিধস্ত দোয়ারাবাজার উপজেলাকে দূর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানান উপজেলাবাসী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা জানান, বৃষ্টিপাত অপেক্ষাকৃত কম হলেও বন্যার পানি অপরিবর্তীত রয়েছে। দূর্যোগ মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক মনিটরিংসহ কন্ট্রোলরুমসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কিন্তু মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে বানভাসিদের অনেকেই সেখানে যেতে আগ্রহী নন। উপদ্রুত এলাকায় পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন, শুকনো খাবার, রান্নাকরা খাবারসহ ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং ডেকে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রণয়নের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের জানানো হয়েছে।

এমডি/এমএইচ/বাংলাবার্তা