প্রাকৃতিক প্রতিষেধকই পারে মানুষকে টিকিয়ে রাখতে

গোলাম মোস্তফা মিঠু:
 
আমরা যত সভ্যতার দিকে ধাবিত হচ্ছি,ততই প্রকৃতি থেকে যোজন যোজন দূরে চলে যাচ্চি। ফলে আমাদের অস্তিত্ব ধরে রাখাটা চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে। প্রাচীন যুগ থেকেই মানুষ যদি অন্যান্য প্রাণীর মত প্রাকৃতিক ভাবে খাবার খেয়ে আসতো, তাহলে আজকে আমাদের ইমিউনিটি অনেক স্ট্রং থাকতো। প্রাকৃতিক ভাবেই ভাইরাস, ব্যাক্টিরিয়া, প্রটোজোয়া সহ প্রায় সব ধরনের মাইক্রোঅর্গানিজম কে মোকাবেলা করতে পারতাম আমরা। তাহলে নির্ভর করে থাকতে হতো না সিন্থেটিক ড্রাগের উপর।
 
অন্যান্য প্রাণীর দিকে লক্ষ্য করলেই বুঝা যায় তাদের ইমিউনিটি কত স্ট্রং। তাদের প্রয়োজন হয় না কোন প্রকার ঔষধ। ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া তাদের ও আক্রমণ করে কিন্তু প্রকৃতিই উত্তম প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করছে।
 
আর আমরা? আমাদেরও উচিত সিনথেটিক ড্রাগ যথাসম্ভব বর্জন করে, ন্যাচারাল ড্রাগের উপর গুরুত্বারোপ করা। ন্যাচারাল সিলেকশনই হয়তো মানব জাতিকে আরো বহুকাল টিকিয়ে রাখতে পারবে।
 
আপনি যত গোল্ডেন স্পুন/সোনার চামুচ দিয়ে খাবেন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার ভয়ে, ঠিক তত নড়বড়ে করে দিচ্ছেন আপনার পরবর্তী প্রজন্মকে। এভাবে আমরা প্রকৃতির ট্র‍্যাক থেকে সরে যাচ্ছি।
 
“মাঝে মাঝে মনে হয় মানুষ প্রকৃতির কেউ নয়, মামার বাড়িতে বেড়াতে আমরা। অথচ আমরা একই স্বত্তায় সত্তায়িত। মলিকুলার লেভেলে যদি আমরা চিন্তা করি -কার্বন(C),অক্সিজেন ( O), নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন ( H) এই গুলোকে সৃষ্টির ’ফেনোমেনোন প্রতিক’ বলতে পারি আমরা।উদ্ভিদ এবং প্রাণী জগতের সবাই এই প্রতিক গুলোর বিচিত্র বিন্যাসের ফল।অর্থাৎ বলতে পারি, সৃষ্টি কর্তার সৃষ্টির সব কিছু এক সূত্রেই প্রবাহিত।
 
তাহলে আমরা কেন এত নড়বড়ে? সিন্থেটিক ড্রাগই এর কারন? বেচে থাকার জন্য সিন্থেটিক ড্রাগ ই একমাত্র উপায়?
 
এখন যে রকম পুরো পৃথিবী এক সাথে ড্রাগ/প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করছে,এই রকম ন্যাচারাল ড্রাগ এর ক্ষেত্রে করলে অনেক দূর এগিয়ে যেতো।হয়তো আমরা বর্তমানে বুঝতেছি সিন্থেটিক ড্রাগ ই আমাদের বাচাইতে পারে সেটা ঠিক। তবে তার খারাপ ফলাফল ভোগ করবে হবে পরবর্তী প্রজন্মকে বা আরো পরের প্রজন্মকে ।
 
ব্যপার টা হচ্ছে এই রকম যে, সিন্থেটিক ড্রাগ ব্যবহার করতে করতে মানব জাতি টিকে থাকলো ১০ হাজার বছর। সাময়িক ভাল ফল ভোগ করলেও সাইড ইফেক্ট এর কারনে ইমিউনিটি স্ট্রং হচ্ছে না।ফলে অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।এবং পরবর্তী ক্ষতিকর ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে ‘দূর্বল ইমিউনিটির ‘ কারনে আবার সিন্থেটিক প্রতিষেধক নাও এবং আরো বেশি দূর্বল ইমিউনিটি এই ভাবে চলমান।
 
অপর দিকে ন্যাচারাল ড্রাগ ব্যবহার করলে হয়তো টিকে থাকবে ১২-১৫ হাজার বছর। কারন পরবর্তী কোন ক্ষতিকর মাইক্রো অর্গানিজমের জন্য তার ইমিউনিটি আরো বাড়তে পারে।এইটা প্রকৃতিই সিলেক্ট করে দিবে।আপকামিং মাইক্রো অর্গানিজম আগে থেকেই সৃষ্টি হয়ে আছে কিন্তু আমরা তাদের ন্যাচারালি কিল করার ক্ষমতা নষ্ট করে ফেলতেছি।
 
লেখক: শিক্ষার্থী, বায়োকেমিস্ট্রি এবং মলিকুলার বায়োলজি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
এমএম/এমএইচ/বাংলাবার্তা