বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলায় এক শিক্ষক পরিবারের জমি জোরপূর্বক দখলে নিতে ছাত্রলীগ নেতা মনছুর আলমের নেতৃত্বে দারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে একই পরিবারের শিক্ষকসহ ৫ জনকে।
রোববার ভোর ৫টার দিকে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের বাইন্যা ঘোনা গ্রামে জমি দখলের জের ধরে এ ঘটনাটি ঘটে। আহতদের মধ্যে একজন এসএসসি পরীক্ষার্থীও রয়েছে বলে জানা যায়।
আহতরা হলেন, মগনামা ইউনিয়নের বাইন্যা ঘোনা গ্রামের মরহুম একরাম মিয়ার ছেলে ও পূর্ব মগনামা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাস্টার আবদুল মজিদ (৬০), তার সহোদর রশিদ আহামদ (৫৫) ও আলহাজ্ব কামাল হোসেন (৫০), মাষ্টার আবদুল মজিদের পুত্র ও পেকুয়া মডেল সরকারী জিএমসি ইনষ্টিটিউশনের এসএসসি পরীক্ষার্থী আশরাফুল মেহরাব মুহিব ও তাদের ভাগিনা আরিফুল ইসলাম (২০)। আহতের মধ্যে মাস্টার আবদুল মজিদ ও আলহাজ্ব কামাল হোসেনের অবস্থা আশংকাজনক। তারা সকলই চমেক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
এলাকাবাসীরা জানায়, বিগত ২০০৩ সালে মাস্টার আবদুল মজিদ ও তার দুই ভাই মিলে বাইন্যাঘোনা এলাকায় সড়কের পাশে ৪০ শতক জমি কেনেন। সে সময় থেকে জমিটি তাদের ভোগদখলে রয়েছে। রোববার ভোরে মাস্টার আবদুল মজিদ বাজার পাড়া কবরস্থানে তার মায়ের কবর জেয়ারত শেষে বাড়ি ফেরার পথে দেখতে পান ওই জমিতে মগনামা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও বাইন্যা ঘোনা গ্রামের কালুর পুত্র চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মনছুর আলম (৩৩) এর নেতৃত্বে একদল বহিরাগত লোক দারালো দা কিরিচ নিয়ে একটি টংঘর স্থাপন করছে।
এ দৃশ্য দেখে শিক্ষক আবদুল মজিদ তার জমিতে টং ঘর নির্মাণে বাধা দিতে গেলে তাকে ধারালো দা দিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় মনছুর আলম। খবর পেয়ে আহত আবদুল মজিদকে উদ্ধার করতে তার ভাই আলহাজ্ব কামাল হোসেন, রশিদ আহমদ, আশরাফুল মেহরাব মুহিব ও মো. আরিফ সেখানে যান। এসময় তাদেরকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় মনছুর আলমের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা।
আহত শহিদুল ইসলাম বলেন, মনছুর আলমের নেতৃত্বে মো. কালু, পাখি আক্তার, কবির হোসেন, আলী হোসেন ও রুবি আক্তারসহ একদল বহিরাগত সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার পর এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে আমার বাবা ও চাচা আলহাজ্ব কামালের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: মুজিবুর রহমান বলেন, আবদুল মজিদ ও কামাল হোসের মাথায় ধারালো কিরিচের আঘাত গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেকে রেফার করা হয়েছে।
মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম বলেন, মনছুর আলম নামের এক লোক বহিরাগত সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে শিক্ষক পরিবারের জমি জবর দখলে নিতে হামলা চালিয়েছে। এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি কামরুল আজম বলেন, এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।