নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ইন্তেকাল করেছেন। ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাত ৮টায় খুলনা শেখ আবু নাসের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
আবুল কাশেম সাহেব ও তাঁর বড়ো ছেলে মাহবুবুর রহমান ব্যক্তিগত কাজে খুলনা গেলে গত ৫ই ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টার দিকে খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকায় তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। দুর্বৃত্তদের এলোপাথাড়ি চাপাতির কোপে তিনি ও তার ছেলে রক্তাক্ত হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে শেখ আবু নাসের হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে ৫দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই জননন্দিত সাবেক চেয়ারম্যান। এবং তাঁর বড়ো ছেলে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।
জনপ্রিয় এ নেতার মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার প্রতিষ্ঠিত উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে জানাজার নামাজে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে।
আবুল কাশেমের ছোট ছেলে তারেক মাহমুদ বলেন, আমার বাবার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে, এবং নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে বিরত রাখতে বর্তমান চেয়ারম্যান বুলুর নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আর এ ঘটনায় মদদ দিয়েছে এমপি মোজাম্মেল। এখন আমরা পুরো পরিবার জীবন সংকটে রয়েছি।
স্থানীয় সমাজসেবক হারুনুর রশিদ বলেন, এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। এর পেছনে ক্ষমতাসীনদের মদদ রয়েছে। এলাকার মানুষের কাছে দারুণ জনপ্রিয় মানুষ ছিলেন আবুল কাশেম। তার মৃত্যুতে এলাকায় অভিভাবক শূন্যতা দেখা দিবে বলেও মনে করেন স্থানীয়রা। এবং সমাজসেবক হিসেবে বিপুল জনপ্রিয়তা থাকায়, তাঁর ছোট ছেলে তারেক মাহমুদকে পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসেবেও চিন্তা করেন এলাকাবাসী।
পরিবারের ভাষ্যমতে, ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের বাগেরহাট জেলা সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলী আক্কাস তালুকদার বুলুর প্রত্যক্ষ মদদে আবুল কাশেমের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে। এঘটনায় তার পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, আবুল কাশেম সাহেব একজন অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি নিজ এলাকায় গার্লস স্কুল, কলেজ ও একটি এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেছেন। এছাড়া অসংখ্য সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপনে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছেন। তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে একটানা ১৮বছর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন। এসময় তিনি এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেন। তার কোনো রকমের দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ কেউ করতে পারেনি বলে এলাকাবাসীর দাবি।