দুদক কতৃক মহেশখালীর ইউপি চেয়ারম্যান তারেক শরীফের সাড়ে ৬ লাখ টাকা জব্দ

135

নিজস্ব সংবাদদাতা:

কক্সবাজারের মহেশখালীর উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত-সমলোচিত চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফের ব্যাংক হিসাব থেকে ৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা জব্দ করেছে দুর্নীতি কমিশন (দুদক)।

আজ সোমবার(২৮ সেপ্টেম্বর) দুদকের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি টিম ডাচ্ বাংলা ব্যাংক কক্সবাজার শাখা থেকে টাকাগুলো জব্দ করে।

সম্প্রতি কক্সবাজারে বিভিন্ন প্রকল্পসহ মহেশখালীর ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দুদক বেশ কিছু চক্রের খোঁজ পেয়েছে।এসব চক্রের অন্তত ৬০ জন সদস্য কক্সবাজারে চলমান ৭০টিরও বেশি প্রকল্পে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ থেকে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ শাখার দালালের তালিকায় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম রয়েছে।

উল্লেখ্য, দুর্নীতি-অনিয়মের কারণে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের সোনাপাড়া-চিকনি পাড়া এসপিএম প্রকল্পের প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত অনেকের কাছে পৌঁছেনি ক্ষতিপূরণের টাকা।ভূমি অধিকগ্রহণের ক্ষতিপূরণ কারোও তিনগুণ কারোও দ্বিগুণ মর্মে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে একটি অনুসন্ধানি সংবাদ শিরোনাম হয়। সংবাদের বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় আসে। নড়েচড়ে বসে দালাল চক্রের ঐ সিন্ডিকেটটি।

অপরদিকে মহেশখালীর কালারমারছড়া এসপিএম প্রকল্পের জমিসহ বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের অভিযোগ, ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য সরকারি দপ্তরে ফাইল জমা দেওয়ার পর ‘কমিশন’ দাবির মধ্য দিয়ে আরেক দুর্নীতি শুরু হয়। ২০ থেকে ২৫ শতাংশ হারে ‘কমিশন’ না দিলে ফাইল নড়ে না। প্রকৃত জমির মালিকেরা সব কাগজ যথাযথভাবে দিয়েও টাকা পাননি।

অন্যরা বললেন, দেশের স্বার্থে মহেশখালীতে উন্নয়নের মেগাপ্রকল্পের জন্য, নালজমি, কৃষিজমি, ভিটেমাটি পর্যন্ত চিরতরে ছেড়ে দিয়েছি। তার বিনিময়ে আমরা কী পাচ্ছি? জমিজমার ন্যায্য মূল্যও বুঝে পাচ্ছি না। উল্টো দালালকে ঘুষ ও কমিশনের টাকা আগে গছিয়ে দিতে হচ্ছে। ঘুষের ভাগ নাকি কতিপয় জনপ্রতিনিধিসহ উপরের দিকে চলে যায়। দৈনিক কোটি টাকা হাতবদল। এতে কাজ করেছেন উপজেলার কালারমারছড়া ভিত্তিক দালাল চক্রের সিন্ডিকেট।

জমি অধিগ্রহণে অনিয়মের প্রতিবাদে গঠিত মহেশখালীর ‘জাগ্রত ছাত্রসমাজ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ফজলে আজিম মোঃ ছিবগাতুল্লাহ জানান, স্থানিয় একটি দালাল সিন্ডিকেট তাদের বাধ্য করেছে কম দামে জমি বিক্রি করতে।

ফজলে আজিম মোঃ ছিবগাতুল্লাহ বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়ায় জনগণের হয়রানি ও ভোগান্তির দিকে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আমরা অনেকবার বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছি। প্রতিকার পাওয়ার বদলে আমরা পেয়েছি প্রভাবশালীদের হুমকি। উচ্ছেদের শিকার হওয়া অনেকে মানুষগুলো এ ঘটনায় জড়িত প্রভাবশালীদের নাম বলতেও ভয় পেতেন। তবে দুদকের অভিযানে ব্যাংক টাকা জব্দের মাধ্যমে তাদের মুখোশ উম্মোচন হচ্ছে।

এব্যাপারে চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘জেলার রাঘব বোয়ালদের সমন্বয়ে এটি একটি বিরাট জোট। তারা জমি অধিগ্রহণের পুরো প্রক্রিয়ায় সবাইকে জিম্মি করে রেখেছে। আমরা এই জোটকে চিহ্নিত করেছি এবং এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত অনেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছি। অবশ্যই আইন অনুযায়ী আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

এসএস/এফএম/বাংলাবার্তা