মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে প্রাথমিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে

336
আন্তঃ প্রাথমিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা: বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এই বিদ্যালয়গুলো সবই সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে। অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয় গ্রামে অবস্থিত। এখানে পড়াশোনা করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুরা। প্রাথমিকে ইতোমধ্যে চালু হয়েছে আন্তঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। যেখানে শিশুরা প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায় থেকে শুরু করে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগ হয়ে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। যার ফলে প্রত্যন্ত গ্রামে লুকায়িত একজন মেধাবী ক্রীড়াবিদ হয়ে বের হয়ে আসার সুযোগ রয়েছে।

তাছাড়া শারীরিক সুস্থতার জন্য শিশুদের খেলাধুলার বিকল্প নেই। তাই প্রাথমিকে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা সংযোজনের সাথে জড়িত সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ। এ ধরনের সংযোজন মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি জ্ঞান সমৃদ্ধ জাতি গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাকরি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টূর্ণামেন্ট:
ফুটবল সারা বিশ্বব্যাপী একটি জনপ্রিয় খেলা। ফুটবল ভালোবাসে না- এমন লোক বর্তমানে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বাংলাদেশেও ফুটবল একটি জনপ্রিয় খেলা। ২০১১ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টূর্ণামেন্ট চালু করা হয়। যেখানে দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে নগর-মহানগর সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই টূর্ণামেন্ট দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে৷ পাশাপাশি শিশুদের বিদ্যালয়মুখি করতে এবং আনন্দঘন পরিবেশে পাঠদানে এমন আয়োজনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে এ টূর্ণামেন্ট একটি মাইলফলক।

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা:
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। আর সেই শিক্ষার সূতিকাগার হলো প্রাথমিক শিক্ষা। তাই শিক্ষার মূলভিত্তিই বলা হয় প্রাথমিক শিক্ষাকে। একটি ভবন যেমন তার ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে থাকে, তেমনি দেশের শিক্ষা দাঁড়িয়ে থাকে প্রাথমিক শিক্ষার উপর। তাই প্রাথমিক শিক্ষার সফলতার উপর দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সফলতা নির্ভর করে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। শিশুরা আনন্দের সাথে শিক্ষাগ্রহণ করবে, এটাই স্বাভাবিক। তাই প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে আসার আগে একটি মূল্যায়ন পদ্ধতি খুবই প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করেছে। যা শিক্ষার মানোন্নয়নে এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী করেছে। পাশাপাশি অভিভাবকরাও শিশুদের পড়াশোনার খোজঁখবর রাখা ও তাদের মনোযোগ বাড়াতে সচেষ্ট হয়েছে। তাই প্রাথমিক শিক্ষা শেষে সমাপনী পরীক্ষার বিকল্প নেই।

লেখক : মো. মিজানুর রহমান
সহকারী শিক্ষক।
লেদুকোম্পানিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কবিরহাট, নোয়াখালী।