রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয় পত্র বানানোই এনাম মেম্বারের কাজ

223

বিশেষ প্রতিবেদক: জহির আহমেদ। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসেন। দীর্ঘদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকলেও পরে স্থানীয় টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এনামুল হকের সাথে তার পরিচয়। পরে তৈরী হয় বন্ধুত্ব। সেখান থেকে রোহিঙ্গা জহিরের সাথে প্রেম হয় এনাম মেম্বারের বোনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

বোনকে বিয়ে দিতে সেই রোহিঙ্গা নাগরিক জহিরকে মোস্তাক আহমেদ বানিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরী করে বোনকে বিয়ে দিছেন এনাম মেম্বার।

টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহজাহান বলেন, রোহিঙ্গা নাগরিক জহিরকে মোস্তাক আহমেদ বানিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরী করে বোনকে বিয়ে দিছেন এমন অভিযোগ এখনো আমাদের কাছে আসেনি। যদি অভিযোগ পায় তাহলে আমরা আইনী ব্যবস্থা নিবো।

ইয়াবার ছোঁয়ায় রাতারাতি ধনী বনে যাওয়া এ ব্যক্তির নাম এনামুল হক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করা মাদক ব্যবসায়ীর তালিকায় নাম থাকা এ ব্যক্তিকে এলাকায় চেনে ‘এনাম ডাকাত’ নামেই। বর্তমানে কক্সবাজারের টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তিনি।

কিছুদিন আগেও যার পেশা ছিলো ছুলা মুড়ি বিক্রি করা। তবে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে রাতারাতি বদলে যায় তার পরিচয়। টাকার মতো উড়তে থাকেন এনাম। টাকার গরমে যাচ্ছেতাই করতে শুরু করেন। অন্যায়ভাবে ক্ষমতা দেখিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন এলাকাজুড়ে। ভূমি দখল থেকে শুরু করে অবৈধ সব কাজই যেন তার নিত্যকার রুটিনে পরিনত হয়ে যায়। বিশেষ করে মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশী জাতীয় পরিচয় পত্র,জন্ম নিবন্ধ বানিয়ে দিয়ে অর্থ লাভের সঙ্গে তাদের দিয়ে অবৈধ কাজের বিস্তৃতি ঘটান এনাম।
এছাড়াও টাকার জোরে ক্ষমতাসীন নেতাদের আশ্রয় লাভ করে বাগিয়ে নেন ইউপি সদস্য পদ।

ইয়াবা ব্যবসা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়ার অঙ্গিকার দিয়ে টেকনাফ পাইলট হাই স্কুল মাঠে ২০১৯ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত তৎকালিন ওসি প্রদিপের সহায়তায় আত্মসমর্পণ করেন। তখন জেলখানা থেকে মুক্তি পেয়েই আবারও ইয়াবা সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন এনাম।
যার ফলে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ মানুষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন, আমি ২০০২ সাল থেকে ব্যবসা করছি। ব্যবসার টাকা সীমিত। অথচ এনাম কি এমন ব্যবসা করে যে কারণে এতো দ্রুত কোটি টাকার মালিক হয়েছে। পরে জানতে পারি ইয়াবা ব্যবসা করেই হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার সহকারী অফিসার বেদারুল ইসলাম বলেন, এনামের মাদক ব্যবসার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে এবং আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা এবং তথ্য সংগ্রহ করার জন্য একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এসএস/এমএইচ/বাংলাবার্তা