সাড়ে চার বছরে এক টাকা সম্মানিও নেননি মেয়র নাছির!

সায়েম রহমান

মাসে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা সম্মানি পান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। গত সাড়ে চার বছরে টাকার অংকে হিসেব করলে কোটি টাকা পেরিয়ে গেছে। কিন্তু সেই টাকার একটি কড়িও ছুঁয়েও দেখেন না তিনি।

অটিজম শিশু, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিংবা অসচ্ছল শিক্ষার্থী নয়, নগরীর গরিব-দুঃখী মানুষের তরে মেয়র হিসেবে সরকারি তহবিল থেকে পাওয়া সম্মানির পুরোটায় বিলিয়ে দেন তিনি। মানবতার তরে দেশজুড়ে এমন বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ‘অটিজম’ শিশুদের নিয়ে কাজ করে নিষ্পাপ অটিজম ফাউন্ডেশন। যেখান থেকে ১৭জন শিশু মূল ধারায় ফিরে এসেছে। এমন অলাভজনক প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম ‘ডোনার’ সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। মাসিক সম্মানির একটি বড় অংশ চলে যায় ফাউন্ডেশনটিতে।

চসিক সূত্রে জানা গেছে, কিছু প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থী ও রোগী আছেন যারা প্রতি মাসে নির্ধারিত অঙ্কের টাকা পেয়ে থাকেন। কারো জটিল অপারেশন বা চিকিৎসা নিতে সমস্যা। সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত কর্মকর্তার কাছে থাকা নির্ধারিত ফরমে আবেদন করলে মাসশেষে কোনো ধরণের জটিলতা ছাড়া মেলে আর্থিক সাহায্য। মেয়রের সম্মানির টাকা চসিকের হিসাব বিভাগের একজন কর্মকর্তার অধীনে বিতরণ করা হয়।

অন্যদিকে চসিকের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা ও আইটি অফিসার ইকবাল হাসান জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের ৪ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৩ মার্চ পর্যন্ত ৬০ লাখ ৬২ হাজার ৫শ টাকা মূল সম্মানীর টাকা বেতন রয়েছে। এছাড়াও ১৮টি স্ট্যান্ডিং কমিটি রয়েছে। যার প্রত্যেক মিটিংয়ে ৫শ টাকা করে সম্মানী পান মেয়র। সেই হিসেবে গত সাড়ে চার বছরে ৬৪৪টি স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিং হয়েছে। যার সম্মানী বাবদ মেয়র পান ৩ লাখ ২২ হাজার টাকা। এছাড়াও গাড়ির ফুয়েল বাবদ প্রায় ৩৬ লাখ টাকা মেয়র পান। তবে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর থেকে করপোরেশন থেকে কোনো গাড়ি, ফুয়েল বা চালক গ্রহণ করেননি। বরঞ্চ নিজস্ব গাড়ি ও চালক দিয়ে চলছেন চট্টগ্রামের মেয়র।

এমন উদ্যোগ নিয়ে মেয়র নাছির বলেন, আমি ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করি। যে আদর্শে মানুষের তরে রাজনীতি হয়। ভোগ বিলাস বা গ্রহণের জন্য নয়। আমি প্রথমত রাজনৈতিক ব্যাক্তি তারপর মেয়র। মেয়র শুধুমাত্র একটি সম্মানজনক দায়িত্ব। যেটা আমি রাজনৈতিক কর্মী হওয়ার কারণে পেয়েছি। সেই পদের বিপরীতি কোনো অর্থ বা সুবিধা গ্রহণ করতে পারি না। তাই সরকারি তহবিল থেকে পদের বিপরীতি যেসব টাকা পেয়েছি, সবটায় গরীব-মেহনতি মানুষের তরে বিলিয়ে দিয়েছি। এভাবে থাকতে চাই।