শিক্ষার্থীরা দেশের উচ্চতর মানবসম্পদ-রাষ্ট্রপতি

কুবি প্রতিনিধিঃ

শিক্ষার্থীরা দেশের উচ্চতর মানবসম্পদ। দেশের ভবিষ্যত নির্ভর করছে তোমাদের উপর। তারাই সবসময় ন্যায়কে সমুন্নত রাখবে। কখনো ব্যক্তিগত সম্মানবোধ ও নৈতিকতাকে নষ্ট করবে না বলে উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ।

তিনি বলেন, এ সমাবর্তন শিক্ষা জীবন শেষ করছে না বরং শিক্ষার সমুদ্রে প্রবেশ করাচ্ছে। শুধু নিজের কথাই ভাববে না। মানুষ ও সমাজের কথা ভাবতে হবে।

সোমবার বিকেলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তৃতায় রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন।

মাদক নির্মূলে রাষ্ট্রপতি বলেন, একসময় কুমিল্লা পড়ালেখায় পুরো দেশে এক নম্বর ছিলো। এখন অবাধে মাদক সেবন চলে। মাদক প্রবেশের যত রাস্তা আসে তার মধ্যে কুমিল্লা অন্যতম।’ আমি কুমিল্লার সবাইকে বলতে চাই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজের বড় অবদান ছিলো। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এখন নতুন করে আবার সংগ্রাম করতে হবে। আর এ সংগ্রাম হবে মাদকের বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন মাদকের নাম উল্লেখ করে ছাত্রসমাজকে এসব রুখতে বলেন। ছাত্রসমাজ যেনও মাদকে পা না বাড়ায় তার জন্য কাজ করতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের তিনি আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, শিক্ষার সাথে মানবিক মূল্যবোধ পৃথিবীকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে কার্যকর থাকে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে জ্ঞানচর্চা ও মুক্তচর্চার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়তে প্রতি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি বড় অবদান রাখবে বলে আশা করেন রাষ্ট্রপতি। এসময় রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, এবারের সংগ্রাম সোনার বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রাম। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত সুন্দর হোক কামনা করে তিনি বক্তব্য শেষ করেন।

রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান অর্জনের স্থান। র্যাগিং ও টাকা নষ্ট করার স্থান নয়। বাবা-মা অনেক কষ্ট করে টাকা পাঠায় তা মনে রাখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশ্য করে রাষ্ট্রপতি বলেন, একজন শিক্ষকের কাজ শুধু শ্রেণী কক্ষে পাঠদান নয়। পাঠদানের পাশাপাশি তাদেরকে জ্ঞানের মশাল জ্বালাতে হবে। শিক্ষার্থীদের মননে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে হবে শিক্ষকদের।

সমাবর্তন বক্তা বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার বক্তব্যে বলেন,’বঙ্গবন্ধুর কারণে আমরা এ দেশ পেয়েছি। আর তাই সকলকে সবসময় তাকে মনে প্রাণে ধারণ করতে হবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রধানমন্ত্রী অনেক টাকার বাজেট দিয়েছে। ভবিষ্যতে এখানে আরো বরাদ্দ দেওয়া হবে। অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ইংল্যান্ডের তুলনায় বাংলাদেশের ইন্টারনেট সংযোগ অনেক ভালো। দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হলে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করতে বলেন তিনি।

সমাবর্তনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চেীধুরী এমপি এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ প্রমুখ।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে ২ হাজার ৮৮৮ জন গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারী ১ হাজার ২২২ জন এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ১ হাজার ৬৬৫ জনকে ডিগ্রী প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি। এছাড়া শিক্ষায় অসমান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৪জন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি।