ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ, ছাদ থেকে ফেলে হত্যা ‘নখের আঁচড়’ দেখে হত্যাকারী শনাক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক


ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের মধ্যপাড়া এলাকা থেকে লুবনা আক্তার (১৮) নামে এক তরুণীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ‘নখের আঁচড়ের’ সূত্র ধরে দুই হত্যাকারীকে শনাক্ত করেছে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত আটক দুই জন হলেন, রানা কর (৩০) ও নুপুর বসাক (৩২)। তাদের দুইজনের বাড়ি মধ্যপাড়া এলাকার বসাকপাড়া মহল্লায়। নিহত লুবনার সঙ্গে নুপুরের পূর্বপরিচয় ছিল।


দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণের পর গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করেছে লুবনাকে। লুবনা পৌরশহরের কাজীপাড়া এলাকার মুসলিম মিয়ার মেয়ে।
মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা গণমাধ্যমকে জানান, সোমবার ভোর রাতে একটি নম্বর থেকে আমাদের কাছে ফোন দিয়ে বলা হয় কাজের মেয়েকে মারধর করা হচ্ছে।


এরপর থেকেই ফোন নম্বরটি বন্ধ রয়েছে। ঘটনাটি জানার পর সকালে আমি নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত কাজ শুরু করি। তিনি বলেন, প্রথমে আমরা ওই তরুণীর পরিচয় পাইনি। সে কাজের মেয়ে কী-না সেটিও আমরা বুঝতে পারছিলাম না। পরবর্তীতে ওই তরুণীর পরিবারের লোকজন এসে লাশ শনাক্ত করে।


লাশের পাশে একটি ভাঙা টব ছিল। গলায় রশি পেঁচানো থাকলেও আমরা নিশ্চিত ছিলাম এটা হত্যাকাণ্ড। আর লাশ দেখে মনে হচ্ছিল দূরে থেকে এনে এখানে ফেলে যাওয়া হয়নি। যারাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তারা আশপাশেরই হবে। সেজন্য প্রথমেই আমরা আশপাশের ঘরগুলোকে আমরা নজরদারিতে রাখি।

মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, প্রথমে আমরা সন্দেহভাজন হিসেবে রানাকে আটক করি। তার শরীরে ‘নখের আঁচড়’ দেখেই আমাদের সন্দেহ হয়। লুবনাকে ধর্ষণ অথবা হত্যার সময় হয়তো সে বাঁচার জন্য নখ দিয়ে আঁচড় দিয়েছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রানা হত্যার কথা স্বীকার করে জানিয়েছে সে ও তার বন্ধু নুপুর মিলে ধর্ষণের পর লুবনাকে হত্যা করে ছাদ থেকে নিচে ফেলে দিয়েছে।


রানা পুলিশকে জানায়, রবিবার রাতে নুপুর ফোন করে লুবনাকে রানার বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে। এরপর রাত দেড়টার দিকে প্রথমে নুপুর এবং পরবর্তীতে রানা ধর্ষণ করে লুবনাকে। ধর্ষণের পর গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ছাদ থেকে লুবনাকে নিচে ফেলে দেয়া হয়। কোনো প্রমাণ না রাখার জন্য লুবনার মোবাইলফোনটি ভেঙে বাড়ির পাশে ড্রেনে ফেলে দেয়া হয়।


পুলিশ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন রেজা আরও বলেন, রানার গায়ে নখের আঁচড় বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে বলতে পারবেন লুবনার নখের আঁচড় কী-না। আমাদের তদন্ত এখনও চলেছে। তবে ধর্ষণের পর লুবনাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে রানা এবং নুপুর।


এর আগে, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মধ্যপাড়া এলাকার বসাকপাড়া মহল্লার রানার বাড়ির পাশে একটি বাড়ির ওঠান থেকে লুবনার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।


এমএম/ এমএইচ/ বাংলাবার্তা