চবি প্রতিনিধিঃ
সেন্ট মাটিন দ্বীপের সামুদ্রিক শৈবালের আবাসস্থলের গঠন এবং প্রজাতি বৈচিত্রতার দিক উন্মোচন করলেন বাংলাদেশী পিএইচডি গবেষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
‘বাংলাদেশের সেন্ট মাটিন দ্বীপের সামুদ্রিক শৈবালের আবাসস্থলের গঠন এবং প্রজাতি বৈচিত্রতার দিক’ (Habitat structure and diversity patterns of seaweeds in the coastal waters of Saint Martin’s Island, Bay of Bengal, Bangladesh) নিয়ে সম্প্রতি একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল রিজিওনাল স্টাডিজ ইন মেরিন সায়েন্স (Regional Studies in Marine science ) এ।
গবেষণাপত্রটির পুরোভাগে ছিল বাংলাদেশের তথা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব মেরিন সায়েন্সের এর ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি এই গবেষণাপত্রটির অন্যান্য গবেষক। যেটি ইউনিভাসিটি অব চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ওশান ইউনিভাসিটি অব চায়না এবং ইউনিভাসিটি মালয়েশিয়া তেরেংগানুর সাথে যৈাথভাবে সম্পন্ন করেন।
জানা যায়, সামুদ্রিক, উপকূলীয় এবং দ্বীপ বাস্তুতন্ত্রে শক্তি উৎপাদনের (energy production) ক্ষেত্রে সামুদ্রিক শৈবাল (seaweeds) গুরুত্বপূণ ভূমিকা পালন করে। সেন্ট মাটিন দ্বীপের সামুদ্রিক শৈবালের আবাসস্থলের গঠন এবং প্রজাতি বৈচিত্রতা দ্বীপের জোয়ার-ভাটার উপর নির্ভর করে। গবেষণাপত্রটিতে প্রধান তিনটি শ্রেণীর অধীনে ৩৪ প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবালকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার এই গবেষণাপত্রটিতে প্রজাতির প্রাচুর্যতা, বৈচিত্রতা এবং সহাবস্থান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। গবেষণাপত্রটি সার্বিক ফলাফল বিশ্লেষনে এই মতামত দেয় যে, সেন্ট মাটিন দ্বীপের প্রাকৃতিক শিলাস্তরই সামুদ্রিক শৈবালের আবাসস্থল যা প্রজাতির বৈচিত্রতা ও বিস্তারের জন্য মূখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।
এছাড়াও টেকসই ব্লু-ইকোনমির পূর্বশত হল সমুদ্র সম্পদের সঠিক জরিপ এবং তার ভূমিকা নিরুপন করা। মৎস্যসম্পদের পাশাপাশি বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় একটি ক্ষেত্র হচ্ছে এইসব সামুদ্রিক শৈবাল। কারন সামুদ্রিক শৈবাল রয়েছে বহুমুখি অর্থনৈতিক ব্যবহার যার মধ্যে মানুষের খাবার, প্রসাধনীর উপদান ও মেডিসিন অন্যতম। স্থানীয় চাহিদা পুরন করার পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করেও বিপুল অর্থ আয় করা সম্ভব । খাদ্য এবং পুষ্টির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রজাতির এইসব সামুদ্রিক শৈবাল বড় একটি ভূমিকা পালন করতে পারবে। ভবিষ্যতে সামুদ্রিক শৈবাল বাংলাদেশের ব্লু-ইকোনমির ক্ষেত্রে এক অপার সম্ভাবনার দূয়ার খুলে দিতে। গবেষণাপত্রটির ফলাফলকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে এর চাষ ও রক্ষণাবেক্ষণে সামুদ্রিক অথনীতিতে উন্মোচিত হতে পারে এক নব দিগন্ত অন্যদিকে দেশের তরুনদের এই বিষয়ে গবেষণায় আগ্রহী করতে পারে।
উল্লেখ্য, আব্দুল্লাহ আল মামুন ২০১৬ সালে চাইনিজ সরকারের বৃত্তি নিয়ে ওশান ইউনিভাসিটি অব চায়না থেকে কৃতিত্বের সাথে দ্বিতীয় স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করে, বর্তমানে CAS-TWAS বৃত্তি নিয়ে ইউনিভাসিটি অব চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেস এ পিএইচডি গবেষক হিসেবে আছেন।