চেহারা বদলে দেশ ছাড়তে চেয়েছিলেন গণধর্ষণের আসামি সাইফুর!

211
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
 
দাঁড়ি ফেলে দিয়ে পরিবর্তন করেছেন বেশ। সকাল সকাল চলে গেছেন সীমান্তে। অপেক্ষা শুধু নৌকার। নৌকা এলেই চলে যাবেন সীমান্তের ওপারে ভারতে। কিন্তু তা আর হতে দেয়নি পুলিশ।
 
রোববার(২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা নোয়ারাই খেয়াঘাট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
 
সিলেটে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমান ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
 
পুলিশ বলছে, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্ত হয়ে ভারত পালাতে চেয়েছিলেন আসামি সাইফুর। রবিবার ভোর ৬ টার দিকে তিনি ছাতক নোয়ারাই এলাকায় সুরমা নদীর খেয়াঘাটে যান।
 
তবে প্রযক্তির সহায়তায় সীমান্ত এলাকার দিকে আসামি সাইফুর রহমানের অবস্থান নিশ্চিত করে পুলিশ। পরে সেখানে যান ছাতক সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) বিল্লাল হোসেন।
এএসপি বিল্লাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ছবিতে সাইফুরের দাঁড়ি ছিল। তিনি দাঁড়ি কেটে মুখে মাস্ক লাগিয়ে খেয়াঘাটে যান।
 
পরনে ছিল টি-শার্ট ও প্যান্ট। ভোরে সীমান্ত এলাকায় পৌঁছান। হয়তো সীমান্ত এলাকায় গিয়ে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা ছিল।
তিনি আরও বলেন, সাইফুরকে পালাতে কেউ সহায়তা করেছেন কিনা, তার খোঁজ করতে ছাতক ও দোয়ারাবাজারে তার আত্মীয়দের সম্পর্কে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।
 
এদিকে ছাতক থানা পুলিশ সূত্র জানায়, এসআই হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ছাতক উপজেলার সুরমা নদীর খেয়াঘাট এলাকায় নজরদারি করছিল। সাইফুরকে ভোর ছয়টা থেকে প্রায় আধা ঘণ্টা খেয়াঘাট পার হয়ে অপেক্ষা করতে দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। তার কাছে যেতেই বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ হওয়া সাইফুরের ছবির সঙ্গে তার মিল পাওয়া যায়। তখন তাকে নাম জিজ্ঞেস করা হয়। এতে তিনি সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন।
 
এ অবস্থায় তাকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। থানায় তার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয় পুলিশ।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, প্রযক্তির সহায়তায় সীমান্ত এলাকার দিকে আসামি সাইফুর রহমানের অবস্থান নিশ্চিতের পরই একটি দল পুলিশ নোয়ারাই খেয়াঘাট থেকে তাকে গ্রফতার করে।
 
গ্রেফতারকৃত সাইফুর রহমান সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার সোনাপুরের চান্দাইপাড়ার মো. তাহিদ মিয়ার ছেলে। তিনি অস্ত্র মামলারও আসামি।
 
এমসি কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, সাইফুর এমসি কলেজের ইংরেজী বিভাগ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়েছে। তার ইভটিজিং ও হয়রানির কারণে এমসি কলেজ থেকে অনেক মেয়েরা অন্য কলেজে চলে যায়। এমনকি কলেজে সাইফুরসহ তার সহযোগীরা সাধারণ শিক্ষার্থীকে জিম্মী করে চাঁদাবাজিও করে আসছে।
 
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় স্বামী-স্ত্রী এমসি কলেজে বেড়াতে যান। এ সময় কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ৫-৬ জন জোরপূর্বক কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যায় দম্পতিকে। সেখানে একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে ১৯ বছরের গৃহবধূকে ধর্ষণ করে তারা।
 
এমএ/এফএম/বাংলাবার্তা