জেএমবির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন তারেক রহমান!

উইকিলিকসের সবশেষ প্রকাশিত নথিতে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জেএমবির সাথে যুক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। উইকিলিকসের নথি থেকে জানা যায়, কীভাবে জঙ্গি সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাইয়ের খাস সাগরেদ খামারুকে (মাহতাব খামারু) তারেকের টেলিফোনে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল র‌্যাব। শুধু তাই নয়, ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় জঙ্গিদের ব্যবহার করেছিলেন তারেক রহমান।

পরের বছর ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে ৫ শতাধিক স্থানে সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পেছনে নেতৃত্ব দিয়েছিল জেএমবি। সে হামলায় তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের পক্ষে নেপথ্যে থেকে সকল সহযোগিতা করেছিলেন তারেক রহমান।

উইকিলিকসের নথির তথ্যমতে, ঢাকাস্থ মার্কিন কূটনীতিকরা বিএনপির পারিবারিক রাজনীতির ভবিষ্যৎ উত্তরসূরিকে ‘জঙ্গি মদদ দাতা’সহ নানান বিপদজ্জনক অভিধায় চিহ্নিত করে ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে লিখেছেন, তারেক যেন যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না পারেন।

ঢাকার মার্কিন কূটনীতিকরা তার ব্যাপারে লিখছেন অবাঞ্ছিত সব বিশেষণ! যা শুধুমাত্র মোস্ট ওয়ান্টেড নিষিদ্ধ মানুষজনের পোর্টফোলিওতেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

শুধু তাই নয় ঢাকার মার্কিন কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত জামায়াতুল মুজাহিদুল বাংলাদেশের (জেএমবি) উত্থান ও শক্তিশালী হয়ে ওঠার পেছনে ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শীর্ষনেতাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা।

তারেক রহমান এবং চারদলীয় জোট সরকারের প্রভাবশালী কয়েকজন মন্ত্রী-এমপি-নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন কুখ্যাত জেএমবি নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাই।

জেএমবির এই উত্থানের পেছনে তারেক ও সরকারের মন্ত্রী এমপিদের পৃষ্ঠপোষকতার পুরো ঘটনা ঘটেছে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পূর্ণ সমর্থনেই। খালেদা জিয়া ও তার ছেলেসহ সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা করায় অনেক ক্ষেত্রেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রকাশ্যে কাজ করেছে জঙ্গি উত্থানের পক্ষে।

এছাড়াও উইকিলিকসের নথির তথ্যমতে, কুখ্যাত বাংলা ভাই ও শায়খ আবদুর রহমান নিজেদের অফিসে নিরাপদে বৈঠক করতেন খালেদা জিয়ার ছবি টাঙিয়ে।

স্বঘোষিত আঞ্চলিক শাসন জারি করে জেএমবি রাজশাহীর বাগমারা ও নওগাঁর আত্রাই-রাণীনগরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসের রামরাজত্ব কায়েম করেছিলেন। জিয়া পরিবারের সঙ্গে বাংলা ভাইয়ের সম্পর্কের গভীরতা এতটাই বেশি ছিল যে, প্রকাশ্যেই তারেক রহমানকে মোবাইল ফোনে সম্বোধন করতেন ‘মামা’ বলে।

এখানে আরও একটা তথ্য সংযোগ করা প্রয়োজন। বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে সরাসরি মদদে সৃষ্টি হয় জঙ্গি সংগঠনগুলো। জঙ্গিদেরকে প্রশিক্ষণ এবং সরঞ্জাম সহায়তা দেয় আইএআই এবং বাংলাদেশের কয়েকটি নিরাপত্তা সংস্থায় কর্মরত তারেক রহমানের আজ্ঞাবহ কয়েকজন কর্মকর্তা।

তারেক রহমানের সরাসরি সম্পৃক্ততার তথ্য-প্রমাণ এবং জঙ্গি নেতাদের সাক্ষাৎকারসহ তৈরি সেই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল- ‘প্রিন্স অব বগুড়া’। প্রতিবেদনটি তৈরি করেন সেসময় প্রথম আলো’র হয়ে কাজ করা সাংবাদিক তাসনিম খলিল। এই প্রতিবেদনের কারণে তারেক রহমানের রোষের শিকার হন খলিল। সইতে হয় ব্যাপক নির্যাতনও।

এমএইচ/বাংলাবার্তা