আত্মীয়তার সম্পর্ক উন্নয়নে করনীয়

তানবীরুল ইসলাম

‘আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা যেন এখন বিলাসিতা।
অকারনে কোনো আত্মীয়-সজনের বাসায় বেড়াতে গেলে তারা চমকে উঠেন। অসময়ে কেন এলাম? হয়তো আপদও ভাবেন অনেকে। দিনদিন আমিত্ব আর দুরত্বের মাঝে সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে আমাদের জীবন।’ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন এক নিকটাত্মীয়।

অথচ আত্মীয়তার বন্ধন পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভালোবাসা বৃদ্ধি করে। আত্মার সম্পর্কগুলোকে যদি সিনেমার চরিত্রের সাথে মিলাতে যান- তবে আপনার মনে সবসময় সন্দেহ লেগে থাকবে। ফলে সামষ্টিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়বেন আপনি।

ব্যক্তির উদারতা, কৃতজ্ঞতা, নিষ্ঠা, ধৈর্য্য, মানসিক স্বচ্ছতা ও মানুষের প্রতি সদ্ব্যবহার হলো মানবিক গুণাবলীর পরিচয়। মানুষের ভুলগুলো শুধরে দিতে হয় একান্তে। কারও ব্যক্তিগত ত্রুটি অন্যকে বলে লোকমুখে রস লাগিয়ে আত্মীয়তার বন্ধনে সন্দেহ-দূরত্ব সৃষ্টি করার মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নেই।

মনে রাখবেন, সীমা অতিক্রমকারী মানুষের চক্ষুশূলে পরিণত হয়। তাই ভুলের পুনরাবৃত্তি না করি। আর যদি কোনো ভুল হয়েই যায়, তবে দাম্ভিকতা বা আত্মসম্মানের দোহায় দিয়ে মিথ্যা-গোঁজামিলের আশ্রয় না নিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিন।

পরিবারে একে-অপরকে প্রতিদ্বন্দ্বী না ভেবে সহযোগী বা বন্ধু ভাবুন। স্বার্থপর হয়ে বাঁচার মধ্যে যদিও বাহ্যিক সার্থকতা থাকে। কিন্তু আত্মার খোরাক মেটে না।

প্রত্যাশা, অপ্রাপ্তি আর অভিযোগের মাত্রাটা কমিয়ে দিন। কেউ আপনার জন্য কিছু করুক বা না করুক, আপনি সাধ্যমত ভালো কাজের সহযোগী হোন। এর মাঝেও এক ধরণের তৃপ্তি আছে। যা স্বার্থপর হয়ে ভালো থাকার মধ্যে পাওয়া যায় না।

ন্যায় ও আত্মার বন্ধন রক্ষায় সর্বোচ্চ উদার হোন।
উপকারের প্রতিদান পাওয়ার প্রত্যাশা না রাখলে অভিযোগ অনেকাংশেই কমে যায়।

কাওকে সন্দেহ করার আগে ইতিবাচক হোন। ইতিবাচক চিন্তা আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। ইতিবাচক মন্তব্য সম্পর্ক উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে। সবার ভালো কামনা করা ও সবাইকে ভালো রাখার প্রচেষ্টার মধ্যেই বেঁচে থাকার অর্থ খুঁজে পাবেন।

শিক্ষার্থী: লোকপ্রশাসন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়