নোয়াখালীতে আদালতের স্থগিতাদেশ অমান্য করে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক:
 
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় আদালতের স্থগিতাদেশ অমান্য করে লতিফ সুপার মার্কেট দখলের অভিযোগ করেছেন জায়গার মালিক মো. আবু নাছের। এসময় তাকে এলোপাথাড়ী মারধর ও দোকান ভাংচুরের অভিযোগ করেন তিনি। বুধবার (৮ জুলাই) দুপুরে কবিরহাটের দক্ষিন বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
 
জানা যায়, এই জায়গা সংক্রান্ত মামলায় ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল সহকারী জজ (নোয়াখালী)  দিলরুবা ইয়াসমিনের আদালত বাদি পক্ষের মোকদ্দমায় প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে কবিরহাট পৌরসভার ১৭/২০১৮ ইং মোকদ্দমার কার্যক্রম কেন স্থগিত হবে না, এ মর্মে ১৫ দিনের মধ্যে কারন দর্শানোর নোটিশ দেয়। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও কবিরহাট পৌরসভা কারন দর্শাতে না পারায় ২০১৯ সালের ২০ মে  ১৭/২০১৮ ইং মোকদ্দমার যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত করে আদালত। স্থগিতাদেশটি এখনো চলমান রয়েছে। 
 
তফসিল সম্পত্তি: নোয়াখালী কবিরহাট থানার অন্তর্গত ২১১ নং ঘোষবাগ মৌজার ডিএস ৬০৩ খতিয়ানে এমআরআর ৬৬০, জমা খারিজ খতিয়ান ১৫২২ এর সাবেক ১৫৫১ হাল ৩০৫৩।

এদিকে স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও গত ৩ জুলাই কবিরহাট পৌর সালিসি আদালতের সিদ্ধান্তে বলা হয়, ‘২০১৯ সালের ১৪ এপ্রিল সামাজিক সালিসি বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে এবং বিবাদী পক্ষের চলতি বছর ১০ মার্চের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৩৯ নং ঘোষবাগ মৌজার সাবেক ১৫৫১ দাগের আন্দরে বিবাদীদের মালিকীয় ভূমি ৮ জুলাই পরিমাপের সিদ্ধান্ত হয়। পরিমাপকালে উভয় পক্ষকে সরেজমিনে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। 

 
দখলের পর পিলার বসানো হয়

ভুক্তভোগী মো. আবু নাসের বাংলাবার্তাকে বলেন, কবিরহাট পৌরসভা যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হারুন (কসাই) এর নিকট আমার ভাই আবু ছায়েদ সোহেল সোয়া ডেসিমেল জায়গা বায়না দেয়। কিন্তু হারুনের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা এসে আমাকে সন্ত্রাসী কায়দায় এলোপাথাড়ি মারধর করে দোকানের আঁটকে রেখে তারা প্রায় ১০ ডেসিমেল জায়গা দখল করে নেয়। আমি আদালতের স্থগিতাদেশের বিষয়ে জানালে তারা আমাকে বলে মেয়রের আদেশের কথা বলেন। আমি বিষয়টি থানার ওসিকে জানিয়েছি।

এ বিষয়ে কবিরহাট থানার ওসি মির্জা হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বাংলাবার্তাকে বলেন, ‘বিষয়টা আমি জেনেছি। তবে করোনা আক্রান্ত হয়ে আমি ছুটিতে থাকায় অফিসিয়ালি কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আমার নেই।’ এসময় তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৯ মে কবিরহাট থানায় মো. আবু নাছের (পিতা- মৃত আব্দুল লতিফ, সাং ফতেজঙ্গপুর, ওয়ার্ড নং ০৩, কবিরহাট পৌরসভা) বাদি হয়ে তার দুই ভাই আবু তাহের বাবুল ও আবু ছায়েদ সোহেল এবং আব্দুল মোতালেবের (পিতা- মৃত আব্দুল বারিক, সাং ঘোষবাগ, ওযার্ড নং ০৫, কবিরহাট পৌরসভা) বিরুদ্ধে জায়গাটি জবরদখলের পায়তারার চেষ্টা এবং এ কাজে বাধা দিলে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেন। যার মামলা নং ৩১৭।
 
অভিযোগপত্রে বাদি মো. আবু নাছের বলেন, ক্রয়সূত্রে লতিফ সুপার মার্কেটের মালিক আমি। যা দীর্ঘদিন যাবৎ ভোগ দখলও করে আসছি। কিন্তু বিবাদী (আমার ভাই) আবু তাহের বাবুল ও আবু ছায়েদ সোহেল এই মার্কেট জবরদখলের পায়তারা করছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন সময় স্থানীয় ভাবে সালিসি বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু বিবাদীরা কোনো প্রকার আইনের তোয়াক্কা না করে মার্কেটটি জবরদখলের চেষ্টা করছে। জবরদখলে বাধা দিলে বিবাদীরা আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ ও হত্যার হুমকি দেন। এ ঘটনায় স্থানীয়রা আমাকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেন।
এমএইচ/বাংলাবার্তা