নিজস্ব প্রতিবেদক:
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী এবং হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব বিশিষ্ট হাদীস বিশারদ কায়েদে মিল্লাত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, কুরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান নর-নারীর উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। এটি মৌলিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। কুরবানির অনেক ফজিলত ও তাৎপর্য রয়েছে।
হাদীস শরীফ আছে, কুরবানির পশুর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা একটি করে সওয়াব দান করেন।
অপর হাদীসে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই ইবাদত পালন করে না, তার ব্যাপারে বলা হয়েছে, ‘যার কুরবানীর সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কুরবানী করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেধারেও না আসে।’ (মুসনাদে আহমদ- ২/৩২১)
আল্লামা আহমদ শফী ও আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, কুরবানি বৎসরে কেবল একবার আদায় করতে হয়। কুরবানির মাধ্যমে মহান আল্লাহর নৈকট্য ও ভালোবাসা অর্জন হয়৷ পশু কুরবানির সাথে সাথে মানুষের ভেতরের পশুত্বকেও কুরবানি দেওয়ার শিক্ষা লাভ হয়। জাগতিক মোহ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে মহান আল্লাহর জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার দীক্ষাও অর্জন হয় কুরবানির মাধ্যমে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস আদালত ও ব্যবসা বানিজ্য করতে পারলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কুরবানিও অবশ্যই করা যাবে।
সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে কুরবানি আদায়ের কথা বলার পরেও ঢাকা মুহাম্মাদপুর জাপান গার্ডেন সিটিতে কুরবানির পশু না ঢুকানোর হঠকারী সিদ্ধান্তকে চরম ধৃষ্টতা বলে অভিহিত করেন হেফাজত নেতৃদ্বয়।
উনারা বলেন; করোনাভাইরাসের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানালেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শরয়ী পদ্ধতি অনুযায়ী কুরবানি করলে কোনো সমস্যা হবে না বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। সুতরাং করোনাভাইরাসের অজুহাত দিয়ে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা মানে ধর্মীয় বিধান পালনে অবৈধ হস্তক্ষেপ করা।
আমীরে হেফাজত ও মহাসচিব বলেন, প্রতি বৎসর এই সিটিতে প্রায় ৮০০ পশু কুরবানি হয়ে থাকে। এতগুলো পশু কুরবানি করতে বাধা প্রদান করলে কোটি কোটি সওয়াব থেকে মানুষ বঞ্চিত হবে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যাবে না। আমরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সেইসাথে অনেকে বিভিন্ন টকশো ও বক্তব্যে কুরবানি না করে এর পরিবর্তে অর্থ দানের কথা বলছেন, ইসলামে এমন কোনো বিধান নেই৷ এইসব কথা মানা যাবে না।
অনেকে প্রাণী হত্যার অযৌক্তিক অভিযোগ আরোপিত করে কুরবানির বিরোধিতা করেন, কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় তারা মানুষ হত্যাসহ জঘন্য অপরাধে লিপ্ত। কুরবানি নিয়ে তাদের বিষোদগার কেবল ইসলামের প্রতি তাদের ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশেরই নামান্তর। তাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।
কুরবানি নিয়ে অনেকের মনগড়া ব্যাখ্যা ও নির্দেশনা প্রদান করার তীব্র নিন্দা জানিয়ে হেফাজত নেতৃদ্বয় বলেন, বিজ্ঞ আলেম ও মুফতি সাহেব ছাড়া এ ব্যাপারে কারো মন্তব্য করা কিংবা কোনো জ্ঞান দেওয়া উচিত নয়। বরং প্রত্যেকেই নিজেদের কুরবানির ব্যাপারে বিজ্ঞ আলেম থেকে প্রয়োজনীয় মাসআলা জেনে নেবে।
এমডি/এমএইচ/বাংলাবার্তা