কাজী সেলিমঃ
লালমনিরহাটের সেই যুবক জাকির হোসেনের ৭শ’ বিয়ের ইচ্ছে আর পূরণ হলোনা। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ফাঁদে পেলে ২৮৬ নারীকে বিয়ে করেছেন। কিন্তু তার সেই আশা পূরণে বাঁধা হলো তেজগাঁও থানা। এ থানায় এক ছাত্রীর ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এনিয়ে দেশজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা ঝড়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমাজের উচ্চবিত্ত, আত্মনির্ভরশীল, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী নারীদেরকে টার্গেট করতেন এ জাকির হোসেন। এছাড়াও ভুয়া নাম দিয়ে ফেসবুক একাউন্ট খুলে তাদের ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠাতেন। এক্ষেত্রে জাকির নিজেকে বড় লোক বাবার একমাত্র সন্তান, বেসরকারি অফিসের বড় কর্মকর্তা, আবার কখনো বড় ব্যবসায়ীর মতো মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রলুব্ধ করতেন।
বেশির ভাগ নারী প্রলুব্ধ হয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। আবার কোনো টার্গেট নারী তার ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট একসেপ্ট না করলে তার মেসেঞ্জারে প্রতিনিয়তই বিরক্ত করতেন।
একবার কোনো নারীর সঙ্গে কোনো ভাবে যোগাযোগ করতে পারলেই ধীরে ধীরে সেটা প্রেমের আলাপে নিয়ে যেতেন। এরপর তার মোবাইল নম্বর চাইতেন। তখন মোবাইলে দিন-রাত কথা বলা শুরু করতেন।
পুলিশ জানায়, বিভিন্ন কায়দায় প্রতারণার ফাঁদ পেতে তরুণীদের সবকিছু লুটে নিতো জাকির। তার রয়েছে নিজস্ব সিন্ডিকেট চক্র। সংঘবদ্ধ ওই চক্রে রয়েছে নকল কাজী ও মৌলভি। এ ছাড়া চক্রের কিছু নারী-পুরুষ নিজের মা-বাবা ও ভাইবোন বানিয়ে জাকির তরুণীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেন। এভাবে বিয়ের নামে গত দুই বছরে জাকির ২২ ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবী নারীকে ধর্ষণ করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলা করেন ২৬ বছর বয়সী এক তরুণী। অভিযোগের ভিত্তিতে সে দিনই জাকির ও তার সহযোগী জায়েদা আক্তার শাপলাকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই তৌফিক আহমেদ জাকিরের ৫ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তার ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড না চাওয়ায় শাপলাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।