নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইআবি) উদ্যোগে বাংলাদেশে প্রথমবারের মত যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হলো বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস।
আজ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দিবসটি উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এম. পি।
তাঁর বক্তব্যে তিনি বলেন, এদেশের মানুষ ভাষার মর্যাদা বোঝে, এদেশের মানুষ ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে। মুসলমান হিসেবে আমাদের একটি আবেগের জায়গা ধর্ম যার জন্য আমাদের এ ধর্মের প্রতি আবেগ কাজ করে। ভাষার সাথে সংস্কৃতির যোগ, ভাষার সাথে ইতিহাস ঐতিহ্যের যোগ, মানুষের জীবনযাপনের যোগ। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস উদযাপন করায় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
তিনি আরবি ভাষা মুখস্থ না করে বুঝে পড়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন এবং এজন্য মাদরাসাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এম.পি বলেন, দ্বীনের প্রশ্নে ভাষার প্রশ্নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কখনো আপোস করেননি। দ্বীনকে রক্ষার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। আরবি ভাষায় দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আমাদের শ্রমিকের চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পাবে। তিনি আশা ব্যক্ত করেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে দ্বীনি ভাষা শিক্ষা সেন্টার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরিতে সহায়তা করবে।
সভাপতির বক্তব্যে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ বিশ্বব আরবি ভাষা ও রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী অধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে মাদরসায় আরবি ভাষা চর্চা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার এস. এম. এহসান কবীর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, এ. এস. মাহমুদ।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ।
এর আগে বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস উপলক্ষে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সকল মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগীদের ফাজিল (পাস) ‘ক’,ফাজিল (অনার্স) ‘খ’ ও কামিল মাস্টার্স ‘গ’ তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। ‘ক’ বিভাগে ১ম স্থান অধিকার করেন কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার কোরপাই কাকিয়াচর ইসলামি ফাজিল মাদরাসার ফাজিল (পাস) ২য় বর্ষের ছাত্র তাওহিদুল ইসলাম। ‘খ’ বিভাগে ১ম স্থান অধিকার করেন কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার ইসলামিয়া মহিলা কামিল মাদরাসার ফাজিল (অনার্স) প্রথম বর্ষের ছাত্রী আফরোজা তাবাচ্ছুম এবং ‘গ’ বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেন সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার জামেয়া রাহমানিয়া তায়ীদুল ইসলাম ফতেহপুর কামিল মাদরাসার ছাত্র মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান মাশুক।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিউদ্দীন আহমদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কায়সার আহমেদ, বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. রেজাউল করিম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর সিরাজ উদ্দিন আহ্মাদ, উপ-রেজিস্ট্রার ড. মো. আবু হানিফা, সহকারী অধ্যাপক ড. জাভেদ আহমাদ, সহকারী রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেন ও ফাহাদ আহমদ মোমতাজী, সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. জিয়াউর রহমান সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ এবং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সকল মাদরাসার অধ্যক্ষ ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীগণ।