ফাহিম হাসান
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাস ছেড়ে ঢাকায় থাকি বছর দু’এক হলো। ব্যস্ত শহরে এসেও প্রায়শ চবিকে খুঁজি। রাস্তায় চলাচলের সময় চবির লোগো সম্বলিত টি-শার্ট পড়া মানুষ দেখলেই থমকে দাঁড়াই, সামনে এগিয়ে যাই। কৌতূহলী হয়ে জানতে চাই; ভাইয়া কি চবির? হ্যাঁ উত্তর শোনার পর একটা অজানা ভাল লাগা কাজ করে। এ এক অন্যরকম অনুভূতি, যে অনুভূতির কোন নাম হয় না!
টেবিল চাপড়িয়ে গানের আসর দেখলেই মনে হয় নিঃসন্দেহে এরা চবিয়ান। গভীর আগ্রহে তাঁদের সাথে পরিচিত হতে যাই। যদি চবিয়ান না হয়, হতাশ হই, কষ্ট পাই!
একটা ঘটনা বলি; কিছুদিন আগে আমি পুলিশের এস.আই পদের জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছি। ভাইভার আগেই ভেরিফিকেশনের জন্য আমাদের থানার ওসি স্যার বাড়িতে আসেন। আমি বাড়িতে ছিলাম না। স্যার সার্টিফিকেট দেখলেন, সবকিছু তদন্ত করলেন, গ্রামের মানুষদের জিজ্ঞাসা করলেন। কিন্তু বহু চেষ্টার পরেও স্যার তদন্তে কোন টাকা নিলেন না।
যাওয়ার আগে ফোনে বললেন তুমি একদিন থানায় দেখা করো, কথা আছে। আমি কিছুটা শঙ্কা নিয়ে থানায় গেলাম। গিয়ে দেখি ওসি স্যার সাবেক চবিয়ান। রসায়ন বিভাগের বড়ভাই। আমাকে জাস্ট দেখার জন্য তিনি ঢাকা থেকে থানায় নিয়ে গেছেন। কুশল বিনিময় শেষে ফেরার পথে ভাড়ার টাকাও সাদলেন!
সেদিন চবিয়ান হিসেবে গর্বে নিজের বুকটা ফুলে কয়েক ইঞ্চি লম্বা হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তী তিনবারের ভেরিফিকেশনে এক টাকাও লাগেনি। হ্যাঁ, এটাই চবিয়ানদের বন্ধন। নানান জায়গায়, নানান নামে, নানান রুপে চবিয়ানদের এ বাঁধন বেঁচে থাক আজীবন।
ফাহিম হাসান, সাবেক শিক্ষার্থী যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়