আজ পঁচিশে বৈশাখ। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষের অন্যতম শীর্ষ রূপকার, কাব্যগীতির শ্রেষ্ঠ স্রষ্টা, দ্রষ্টা ও ঋষি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম জন্মবার্ষিকী। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি বাংলা ১২৬৮ সালের ২৫ বৈশাখ কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে তার রয়েছে অসামান্য অবদান। কবিগুরুর দার্শনিক চিন্তাসমৃদ্ধ গভীর জীবনবাদী চিন্তাজাগানিয়া লেখায় অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে বাংলার জল, বাংলার মাটি, বাংলার ফল আর বাংলার আলো-বাতাসে বেড়ে ওঠা মানুষ। তিনি সারা জীবন হৃদয়ের গহিনে লালন করেছেন মানব মুক্তির দর্শন। জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই দর্শন অন্বেষণ করেছেন। তার কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাসসহ সব সৃষ্টি মানুষকে আজও সেই অন্বেষণের পথে, তার অন্বিষ্ট উপলব্ধির পথে আকর্ষণ করে।
তাঁর রচনাবলি, কবিতা ও গান বাঙালি তথা বাংলাদেশীদের যাপিত জীবনের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, নাট্যকার, কথাশিল্পী, চিত্রশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, ছোট গল্পকার ও ভাষাবিদ। জীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি চিত্রকর হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন।
রবিঠাকুরই বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। প্রথম এশীয় হিসেবে ১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
বর্ণাঢ্য আয়োজনে আজ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন কবির জন্মজয়ন্তী উদযাপন করবে। বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, চ্যানেল আই ও ছায়ানট এ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এ ছাড়া বিটিভিসহ বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেল ও বেতারেও সম্প্রচার করা হবে বিশ্বকবির জন্মজয়ন্তীর নানা অনুষ্ঠান। সংবাদপত্রের পাতায়ও থাকছে বিশেষ আয়োজন।
বিএনপির বাণী : বাংলা সাহিত্যের অবিসংবাদিত প্রাণপুরুষ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ উপলক্ষে এক বাণীতে এ কথা বলেন।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের জাতীয় জীবনের সবক্ষেত্রে বিশ্বকবির প্রভাব বিদ্যমান। তারা বলেন, তার উপন্যাস, কবিতা ও গানে গভীর জীবনবোধ, প্রকৃতির সাথে সংলগ্নতা ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি গভীর আস্থা ব্যক্ত করেছেন, যা প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে এক অনাবিল শান্তি ও স্বর্গীয় আনন্দের আবহ তৈরি করে।
তারা বলেন, আজো আমরা সবাই তার লেখনি দ্বারা উদ্বুদ্ধ এবং তা সমাজের অনাচার, অবিচার আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকীতে সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন তারা।