নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় রোবোটিক্স প্রতিযোগিতা ‘ফার্স্ট গ্লোবাল চ্যালেঞ্জে’ ১৭৪টি দেশের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে টিম বাংলাদেশ।এ বছর ফার্স্ট গ্লোবাল চ্যালেঞ্জের চতুর্থ আয়োজন বিশ্বব্যাপী চলতি মহামারির কারণে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান বলেন, শনিবার রাত ৯টার দিকে প্রতিযোগিতাটির চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। সেখানে ১১৭ পয়েন্ট পেয়ে টিম বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছে চিলি ও তৃতীয় আলজেরিয়া। এছাড়া ভারতের টিম পঞ্চম হয়েছে।
তিনি জানান, ১ জুলাই থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপ ও বিচিত্র সব চ্যালেঞ্জ পাড়ি দিয়ে এই প্রতিযোগিতায় কেবল এক সপ্তাহ ছাড়া পুরো সময়জুড়েই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ছিল টিম বাংলাদেশ।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন— ম্যানগ্রোভ স্কুলের শিক্ষার্থী সুজয় মাহমুদ (১৭), স্যার জন উইলসন স্কুলের শিক্ষার্থী রাজীন আলী (১৮), ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুলের শিক্ষার্থী মাহি জারিফ (১৬), ডিপিএস এসটিএস স্কুলের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সেমন্তো (১৬), বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের আবরার জাওয়াদ (১৫) ও আয়মান রহমান (১৫), ধানমন্ডি টিউটোরিয়ালের শিক্ষার্থী বিয়াঙ্কা হাসান (১৯), সানবিম স্কুল থেকে জাহরা চৌধুরী (১৪), সাউথ ব্রিজ স্কুল থেকে আরিবাহ আনোয়ার (১৪), মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ফাইরুজ হাফিজ ফারিন (১৮)। দলটির প্রধান পরামর্শদাতা হিসেবে ছিলেন শামস জাবের। এ ছাড়াও, প্রযুক্তিগত পরামর্শদাতা হিসেবে শোয়েব মির্জা ও সহকারী পরামর্শদাতা হিসেবে ছিলেন ফারদিন অনন্ত।
অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান বলেন, ‘১৭৪টি দেশের মধ্যে আমাদের তরুণ শিক্ষার্থীরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, এটা আমাদের জন্য অনেক বড় অর্জন। এই অর্জন তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণা। আমাদের তরুণরা গণিত অলিম্পিয়াডে ভালো করছে, ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে ভালো করছে, তারা ফার্স্ট গ্লোবাল চ্যালেঞ্জেও চ্যাম্পিয়ন হলো।’
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (এসটিইএম বা স্টেম) এই চারটি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তুলতে প্রতি বছর ফার্স্ট গ্লোবাল চ্যালেঞ্জে আয়োজিত হয়। আন্তর্জাতিক এই রোবোটিক্স প্রতিযোগিতায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে থাকেন। বিশ্বের প্রায় সব দেশ থেকে তরুণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন বলে আয়োজনটি ‘রোবোটিক্সের অলিম্পিক’ হিসেবেও পরিচিত।
প্রতিবছর স্টেম নিয়ে উত্সাহী তরুণদের প্রতিযোগিতায় একটি করে চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়। পৃথিবী ও মানুষের প্রতিনিয়ত যেসকল হুমকির মুখে পড়ছে সেগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই সমস্যাগুলো তৈরি করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা ১৪টি ধাপে সেগুলো সমাধান করে থাকেন।
২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতাটির প্রথম আসর বসে। ২০১৮ সালে মেক্সিকোতে দ্বিতীয় আসর ও ২০১৯ সালে তৃতীয় আসর বসে দুবাইয়ে। প্রতিটিতেই ধারাবাহিক সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। গত বছর দুবাইয়ে প্রতিযোগিতাটির তৃতীয় আয়োজনে বাংলাদেশ সপ্তম স্থানে ছিল।
এমডি/এফএম