আওলাদ হোসেন সাগর
আগে অনেককিছু নিয়ে চিন্তা করতাম দেশ, মানুষ, প্রকৃতি, অর্থনীতি আরও কত কি? দিন দিন তা সংকীর্ণ হয়ে আসছে। চিন্তা ও চেতনার যোজন যোজন পার্থক্য থাকার কারণে অনেক সাময়িক ভাল কাজও এখন আমাকে তেমন আন্দোলিত করেনা। গত দুইমাসে ফেইসবুক এর কল্যানে দেখলাম করোনাকালে আমাদের ইউনিয়নের (কালারমারছড়া) মানুষ অনেক বেশি মানবিক।
সত্যিকার অর্থে পুরো মহেশখালীর সচ্ছল অলমোস্ট সব মানুষ তাদের সামর্থ অনুযায়ী ত্রান সহায়তার নামে লক্ষ- লক্ষ টাকা গরিব মানুষকে সাহায্য করেছে। আমার একটা রাফ ধারণা হল শুধু কালারমারছড়াতে বিভিন্ন ব্যাক্তি এবং সংগঠন মিলে এককোটি টাকার চেয়ে বেশি সাহায্য সহযোগিতা করেছে। সত্যিকার অর্থে অন্যান্য এলাকার মত করোনার কারণে এতটা সাহায্য প্রয়োজন ছিল কিনা? উত্তর হলো ” দরকার ছিল!! ” কিন্তু তার চেয়ে বেশি বেশি যা দরকার তা আমরা সবাই মিলে করতে পারিনাই। সবাই জানেন এই সাহায্য সহযোগিতা ছিল- করোনার কারণে ” স্বাস্থগত” একটা সমস্যর কারণে। কিন্তু আমরা কি কেউ এই স্বাস্থ ব্যাবস্থাপনা নিয়ে কখনো চিন্তা করেছি।
আমাদের প্রায় ৩৫ হাজার মানষের জন্য একটা ইউনিয়ন স্বাস্থ কমপ্লেক্স আছে। ওটার কি অবস্থা তা কি আমরা জানি? সেটার জন্য আমার কি কোন দায়িত্ব আছে? নাকি কয়েকজনকে কিছু চাল ডাল দিলেই আমরা সবাই নিরাপদ। জানি এটা সরকারি কিন্তু আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের সাথে নিশ্চয় সমন্বয় আছে। আমাদের এই স্বাস্থ কমপ্লেক্সে কোন এম্বুলেন্স নাই এমনকি আমাদের ইউনিয়ন পরিষদেও জনস্বার্থে কোন অ্যাম্বুলেন্স নাই। আমরা কালারমারছাড়ার জনগণ কি পারিনা সবাই মিলে একটা অ্যাম্বুলেন্স কিনতে। হয়তো আজকে আপনার কাছে এটা হাস্যকর বা অবাস্তব কোন বিষয় হতে পারে কিন্তু বিশ্বাস করেন যখন আপনার প্রয়োজন হবে তখন বুঝবেন আমাদের জন্য এই ছোট্ট উদ্যোগটা কত বিশাল কাজে দিবে। এটার সাথে জীবন-মরণ সম্পর্ক জড়িত।
আমি একটা হিসাব করলাম কালারমারছড়ার একজন মানুষ যদি মাত্র ১০০ টাকা করেও দেয় মোট ৩৫ লাখ টাকা হয়। যা দিয়ে খুব ভাল মানের অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাবে। এটা সত্যি সবাইতো আর ১০০ টাকা দিতে পারবেনা। কিন্তু আমাদের তো অনেক দানশীল ব্যক্তি আছে যারা দেখলাম এই করোনাতে অনেক সাহায্য করলেন বা সব সময় করেন। আসুন আমরা সবাই মিলে আমাদের জন্য আমাদের মালিকানায় একটা এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করি। অনেকেই প্রশ্ন তুলতে পারেন ওটার পরিচলানা কেমন হবে? কার কাছে থাকবে?
আমরা সেবা পাবো কিনা ? ড্রাইভার কে থাকবে? অনেক কিছু? ওসব আপাতত বাদ দেন? আপনার নিয়ত হওয়া উচিৎ অপনার টাকা দিয়ে একজন রোগীর জন্য এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করলেন। এই ভালো কাজে কোনো রাগ, মান- অভিমান, নিজেকে জাহির বা কাউকে প্রমোট করার বিষয় না। আমরা সবাই মিলে চাইলে পারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা ইউনিয়ন পরিষদের ফ্লাটফর্মে। শুধু প্রয়োজন একটা মানবিক উদ্যোগের। আমি আছি এই ভালো কাজের সাথে।
আসুন আমরা একবার চেষ্টা করে দেখিনা পারি কিনা “জনগণের টাকায় জনসেবার অ্যাম্বুলেন্স”
“আপাতত আবদারটা শুধুমাত্ৰ আমার ইউনিয়ন (কালারমারছড়াবাসীর) জন্য”
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, ফিন্যান্স বিভাগ, চবি
এসএস/এমএইচ/বাংলাবার্তা