করোনাকালে মানবিকতার দৃষ্টান্ত পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চট্টগ্রাম জেনারেল হসপিটালের ৬৩ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার খালি অবস্থায় রিফিল করার জন্য কুমিরা এলাকায় মোস্তফা হাকিম গ্রুপের অক্সিজেন প্লান্টে নিয়ে যাওয়া হয়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অক্সিজেন রিফিল করা সম্ভব হচ্ছিল না।

প্রায় ৩০০ রোগীর জীবন কঠিন সংকটের মুখোমুখি। যদি অক্সিজেন রিফিল করা সম্ভব না হলে জরুরী অক্সিজেন সাপোর্টের অভাবে সংকটাপন্ন যে কোন রোগী ভয়ানক পরিণতির মুখোমুখি হতো।এমন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার উত্তর বিজয় বসাক বিপিএম , পিপিএম বার সংবাদটি জানার পর পাঁচলাইশ মডেল থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়াকে জানান এবং জরুরী ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এবং পাঁচলাইশ মডেল থানা থেকে অফিসার ফোর্স প্রেরণ করেন তিনি।

তিনি তার ফোর্সকে যেকোনো স্থান থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার গুলো রিফিল করার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

পাঁচলাইশ মডেল থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, আমি অনেকটা হতভম্ব হয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জনের সাথে যোগাযোগ করি। অবশেষে হঠাৎ মাথায় আসে চট্টগ্রামে ফ্রি অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল দেয়ার কাজে এগিয়ে আসা কয়েকজন উদ্যমী যুবক এরমধ্যে সৈয়দ ইকরামুল হকের কথা। আমি তাকে কল দিয়ে জরুরী অক্সিজেন রিফিল করার জন্য বলা মাত্রই তিনি রাজি হন।কিন্তু তাদের রিফিলিং সেন্টার বন্ধ হওয়ার কারণে কাল সকালে হলে তিনি দিতে পারবেন বলে জানান। আমি আবার ওনাকে যেকোনো মূল্যে অক্সিজেন রিফিল সহায়তা করার জন্য অনুরোধ জানাই। না হয় অনেক মানুষের জীবন সংকটাপন্ন হবে বলে তাকে এ বিষয়ে যেকোনো মূল্যে সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করলে তিনি তাৎক্ষণিক বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে অবশেষে বারো আউলিয়া ফুলতলা জিইডি সুবেদার অক্সিজেন প্লান্ট এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জনাব ওয়াহিদ ফেরদাউস সাহেবের সাথে টেলিফোনে কথা বললে উক্ত অক্সিজেন প্লান্ট কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক সবগুলো সিলিন্ডার রিফিল করে দেয়ার জন্য রাজি হন।

ওসি বলেন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট দুইজন কনসালটেন্টের সাথে কথা বলে মাননীয় উপ পুলিশ কমিশনার উত্তর জনাব বিজয় বসাক বিপিএম পিপিএম বার মহোদয়ের নির্দেশে পাঁচলাইশ মডেল থানা থেকে এসআই ইমাম হোসেনের নেতৃত্বে একটি মোবাইল টিম সহ জেনারেল হসপিটাল থেকে পাঠানো গ্যাস সিলিন্ডারের গাড়িসহ বার আউলিয়ার জিইডি সুবেদার অক্সিজেন প্লান্ট এ পাঠাই। জিইডি অক্সিজেন প্লান্ট কর্তৃপক্ষ সবগুলো সিলিন্ডার আন্তরিকতার সাথে রিফিল করে দেন।

তিনি বলেন, বর্তমান দুর্যোগকালীন সময়ে যেখানে প্রতি মুহূর্তে শুধুমাত্র অক্সিজেনের অভাবে মানুষ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যাচ্ছেন ঠিক সেই ধরনের একটি জরুরী মুহূর্তে মাননীয় উপ পুলিশ কমিশনার উত্তর জনাব বিজয় বসাক বিপিএম,পিপিএম বার মহোদয়ের নেতৃত্ব ও নির্দেশে টিম পাঁচলাইশ মডেল থানার সরাসরি অংশগ্রহণ এবং সহযোগিতায় মানবিক সংকট কালে চট্টগ্রামের উদীয়মান সমাজকর্মী জনাব সৈয়দ ইকরামুল হক সাহেবের সহযোগিতায় এবং জিইডি সুবেদার অক্সিজেন প্লান্ট কর্তৃপক্ষের বদান্যতায় আজ অসংখ্য প্রাণের বিপন্নতা থেকে রক্ষা করার কাজে সহায়ক হতে পেরে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। সংশ্লিষ্ট সকলকে অশেষ ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।মানুষের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ সবসময় পাশে ছিল, পাশে আছে এবং পাশে থাকবে।

এসএস/এমএইচ/বাংলাবার্তা