বিশেষ প্রতিনিধি
দীর্ঘদিন পর অবশেষে শান্তি ফিরছে বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ী দ্বীপ মহেশখালীর কালারমারছড়াতে। স্থানীয়রা ফিরে পেতে শুরু করছে দীর্ঘদিনের হারানো ঐতিহ্য। সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে ইতোমধ্যে থানা পুলিশ মাইকিং করেছে।
জানা যায়, উপজেলার কালারমারছড়ার ইউনিয়নের মো. শাহ ঘোনা গ্রামের প্রভাবশালী “খউস্বর ও কমলা” দুই গোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের চলমান বিরোধকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়ে উঠে এই এলাকা। ধীরে ধীরে মহামারি আকার ধারণ করে সেই বিরোধ।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও সুশীল সমাজের লোকজন প্রায় ১৫ বছর ধরে দুই গ্রুপের বিরোধ মীমাংসার চেষ্টা করে প্রতিবারই তারা ব্যর্থ হয়েছেন।
তবে সম্প্রতি দুই গ্রুপের প্রভাবশালী যুবকেরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে নিজ ভূমিতে বসবাস করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করে। এরপর থেকেই এলাকাজুড়ে সুনসান নিরবতা। কমে গেছে দাঙ্গা-হাঙ্গামার ঘটনাও।
২৬ ফেব্রুয়ারী বিকালে কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের নির্দেশে মহেশখালীর থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম কালারমারছড়া মো. শাহ ঘোনা গ্রামে গিয়ে প্রতিপক্ষের ভয়ে দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়া আত্মসমর্পণকারীদের পরিবার নিজের বসত ঘর বাঁধতে পুলিশ পাহারায় এলাকায় গিয়েছেন। তখন পুলিশের পক্ষে থেকে মাইকিং করা হয়েছে সবাই যেন সহ অবস্থানে বসবাস করে। আর কেউ যদি কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাই তা হলে তাঁদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। সেভাবে নির্দেশ রয়েছে উপর মহল থেকে এমন ও কথা বলা হয়েছে পুলিশের পক্ষে থেকে। এদিকে পুলিশের এই প্রচারনাকে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয় সুশীল সমাজের লোকজন।
উল্লেখ্য, গতবছর ২৩ নভেম্বর মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আত্মসমর্পণ করা ৯৬ জন জলদস্যু, শীর্ষ অস্ত্রের কারিগরদের মধ্যস্থতা করেছেন দেশের আলোচিত সাংবাদিক আকরাম হোসেন। আর স্থানীয় সাংবাদিক হোবাইব সজীব জলদস্যু ও সন্ত্রাসীদের উদ্বুদ্ধ করে সাংবাদিক আকরাম হোসেনের মধ্যস্থতায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) এর কাছে ভয়ংকর ১৫৫ অস্ত্র, অস্ত্র তৈরীর সরঞ্জাম ও প্রচুর গোলাবারুদ সহ আত্মসমর্পণ করেন।এছাড়া গতবছর ২০ অক্টোবর মহেশখালীতে আত্মসমর্পণকৃত ৬ টি কুখ্যাত সশস্ত্র জলদস্যু বাহিনীর ৪৩ জন জলদস্যুর মধ্যে ৫ টি সশস্ত্র ভয়ংকর বাহিনীর ৩৭ জন জলদস্যুকে উদ্বুদ্ধ করনের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করার জন্য উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রাখেন গণমাধ্যম কর্মী হোবাইব সজীব। যারা জলদস্যুতার জীবন ছেড়ে এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করছেন।কালারমারছড়ার সাবেক শিক্ষক মাস্টার আবু তাহের জানিয়েছেন, জলের কুমিরকে ডাঙ্গায় আনতে মধ্যস্থকারী সাংবাদিক আকরাম ও সহযোগী হোবাইব সজীব এই দুই কর্মঠ যে ঝুঁকিপূর্ণ ও দুঃসাহসিক কাজ করে সারাদেশে ব্যাপক সাড়া ফেলেন। তাঁদের এ মহৎ উদ্যােগ সর্ব মহলের ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন। অশান্ত মহেশখালীতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে তাঁদের এ অবদান অত্র এলাকার শান্তি প্রিয় বাসিন্দারা আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবেন।
বাংলাবার্তা/এমএম