নিউজ ডেস্ক
সমঝোতা কিংবা কঠোর আইন কিছুইতেই থামছে না বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে প্রাণহানির ফলস্বরুপ বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে গত ৪০ দিনেই মারা গেছে ১৫ বাংলাদেশি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইন্দিরা-মুজিব সীমান্ত চুক্তির সঠিক প্রয়োগ আর দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপই পারে এই অস্থিরতা ঠেকাতে।
বছরের দু’একটি দিন সীমান্তে মিলনের দৃশ্য দেখা গেলেও অন্য সব দিন যেন আলোর মাঝে আঁধারের কালো অধ্যায়।
যে অধ্যায়ের সূচিগুলো লেখা হয় বারুদ আর মরদেহের মিছিল দিয়ে। তখন বোঝা যায় সীমান্ত কাঁটাতারের আঘাত কতটা ক্ষত তৈরী করতে পারে। কখনও আহত, কখনও মৃত্যু।
বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, ২০১৬-১৮ সাল পর্যন্ত সীমান্ত হত্যা কমে যায়। কিন্তু ২০১৯ সালে তা ফের বেড়ে দাড়ায় ৩৮ জনে।
এরমধ্যে চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের অগ্রভুলোট, মোমিনপাড়া, ওয়াহেদপুর, দুইখাওয়া, বুড়িমারী, নিতপুর, পাখিউড়া, ধর্মপুর, বড়লেখা ও দৌলতপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ ঝরেছে ১৫ জনের।
সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, ধরা পড়লেই বিএসএফের বিবৃতি মেলে অবৈধ ব্যবসায়ী। কিন্তু, বাস্তবে সবাই ব্যবসায়ী না। একই সাথে দুই দেশের রাজনৈতিক প্রচেষ্টা ও আইনের নিয়ন্ত্রণও জরুরি।
রংপুরের সুজন সভাপতি ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখা উচিত যে কেন আমার দেশের নিরীহ লোককে চোরাচালানের অভিযোগে গুলি করে হত্যা করা হবে। কোন দেশই এটা বরদাস্ত করবে না।
অপরাধ বিশ্লেষক ড. জহুরুল ইসলাম বলেন, ভারতের ১৯৪৬সালের যে আইনটি আছে, সেখানে কিন্তু হত্যা করার কোন আইন নাই। বাংলাদেশের যে ২০১০সালের বিজিবি আইনটি রয়েছে সেখানেও সীমান্ত সুরক্ষার কথা বলা আছে সেখানেো এমন কিছু নেই। সুতরাং ভারতীয় নাগরিক যদি বাংলাদেশে ঢুকে সেক্ষেত্রেও হত্যা করার সুযোগ নেই, ঠিক সেভাবেই বাংলাদেশের মানুষ যদি ভারতে ঢুকে তবে তাকেও হত্যা করার বিধান নেই। এটা মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
সীমান্ত নিরাপত্তারক্ষী ১৬ বিজিবির সিও আরিফুল ইসলাম বলছেন, হত্যা ও অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে সবসময় চেষ্টা করছেন তারা।
বাংলাদেশের মানবাধিকার ও আইনি সহায়তা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, প্রাণহানি পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে আহত হয়েছেন অনেকেই।