সোহেল তানভির এর জলে ভেজা পানকৌড়ি

আলম মাহফুজঃ

অমর একুশে বইমেলা ২০২০ ‘খড়িমাটি’ প্রকাশনী থেকে তরুণ লেখক সোহেল তানভির নিহাল এর প্রথম প্রকাশিত কাব্য ‘জলে ভেজা পানকৌড়ি ‘। প্রচ্ছদ করেছেন কবি মনিরুল মনির।

জলে ভেজা পানকৌড়ির লেখক নিহাল বলেন, পাখিদের মধ্যে পানকৌড়ি এমন একটি ভিন্ন ধর্মী পক্ষি। যা আলাদা ভাবে আমাকে ভাবিয়েছে। এই পানকৌড়ি জীবনের রূপে আমি মানুষের জীবনের কিছু রূপ খুঁজে পেয়েছি। যতই প্রাকৃতিক কিংবা দুঃসময় হোক পানকৌড়ি ঠিকই আহার খুঁজতে জলে নেমে যায়। যারা এই পৃথিবীতে দুঃখটাকে ভালোবেসে বরণ করে নেয়। তারা কোন না কোন সময় সুখটাকে আবিষ্কার করতে পারে। জল আর স্থলে পানকৌড়ির জীবনটা গতিময়। সুখটা ভোরের সকালের রোদ পোহানোর মধ্য দিয়ে উপভোগ করে। মানুষের জীবনটাও দুঃখ আর সুখের গড়া। দুঃখটা কেটে যাওয়ার পর সুখটা আসে। আমি মানুষের জীবনের ছন্দগুলো এই কাব্যের সাথে মিলিয়েছি।
আপনি পুরো কাব্যটা পড়লে বুঝতে পারবেন। আমি জীবনের পুরো প্রেমটাকে দ্যাখেছি নৈসর্গিক। জীবন যুদ্ধে কীভাবে টিকিয়ে থাকতে হয়। আমার কাছে জীবন মানে এক শব্দেই নেশা। আমি মনে করি মৃত্যুর আগ অবধি নেশায় আছি। মানুষের জীবন হচ্ছে অসংখ্য কাব্য নিয়ে লিখা একটা অগোছালো পান্ডুলিপি। ঠিক অবধারিত সময়ে মৃত্যুটাকে বরণ করে নিবে।

সাহিত্য অধ্যয়নের এই আমার প্রথম কাব্যকুয়া। মানুষ পাহাড়ি অঞ্চলে জলের অভাবে কুয়া খনন করে। প্রথম খননের পর কুয়োর জল ঘোলাটে হয়। তা চলমান গতিতে আস্তে আস্তে পরিষ্কার হয়ে যায়। আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘জলে ভেজা পানকৌড়ি ‘ তদ্রুপ প্রথম কুয়া খননে মতো ঘোলাটে কিছু কবিতা থাকবেই। আমার অসংখ্য কবিতার মধ্যে কারো একটা শব্দ কিংবা ছন্দ ভালো লাগলে। আমি সফল মনে করবো। আমি লিখেছি আপন ছন্দে ও নিজ অলংকারে। আমি আমার মতো করেই জীবনটাকে দ্যাখেছি তা রূপ দিয়েছি কবিতায়। কি লিখেছি তা বিবেচনা করবে পাঠক সমাজ।

কাব্যগ্রন্থটির ফ্ল্যাপে কবি শর্মী দে লিখেছেন, পানকৌড়ি- ডুব সাঁতারের খেলুড়ে যে, উজান-ভাটি’র ভয় কি তার! ভিজে জবুথবু, আবার ভিজবে, ডুববে-ভাসবে, এ গাঙ থেকে ও গাঙে যাবে। জোয়ার-ভাটায় তার কিই বা যায় আসে। তবুও তো ক্লান্ত ভবঘুরেও একদিন ঠিকানা খুঁজে, শেখড়ের সন্ধান করে। শেখড়ের সন্ধানে পাখির ঠোঁটে উড়িয়ে দেওয়া সেই চিঠি “জলে ভেজা পানকৌড়ি” যার অনেক শব্দই পানকৌড়ি পাখির মত বিপন্নপ্রায়।
আপন মাটি ও মানুষকে নতুন করে বলাই সংস্কৃতির সাথে স্বকীয়তা, স্বকীয়তার সাথে আধুনিকতার মিশ্রণ।

একই সে কালবেলায় দাঁড়িয়ে দশজন গায়েন গাইবে দশরকম গান। পূর্ণিমার চাঁদকে কেউ বলবেন ঝলসানো রুটি, কেউ বা প্রেয়সীর মুখ। সত্যটা কি তা নিয়ে তর্ক করা অমূলকই নয় অপরাধও। তেমনি অপরাধ কবিতার বিশেষত্ব ফ্লেপে বলে দেওয়া। একই কবিতাকে প্রত্যেক পাঠক ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করবেন। ফ্ল্যাপে বলে দিলাম তো আপনার চিন্তার উপর আমার চিন্তা চাপিয়ে দিলাম। সে অপরাধ আর বাড়ালাম না।