‘প্রযুক্তির ভিসি আইসা আমার কাছে নাকে খত দিবো’ নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীকে বাড়িওয়ালার হুমকি

নোবিপ্রবি প্রতিবেদক:
 

‘তোর নোয়াখালী আসা বন্ধ করে দিমু, চিনস আমারে?। তুই প্রযুক্তিতে পড়ছ, তোর ভিসি আইসা আমার কাছে নাকে খত দিবো। তোর সারাজীবনের পড়ালেখা নষ্ট করে দিমু।’

 
এভাবেই নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদকে মুঠোফোনে হুমকি দিয়েছেন নোয়াখালী পৌর শহরের বাড়িওয়ালা মো. জায়েদ।
রবিবার সন্ধ্যায় হুমকির অডিও রেকর্ডটি শাকিল আহমেদ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডতে পোস্ট করলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গিয়ে নাকে খত দিবে এমন মন্তব্য মেনে নিতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা।
 
জানা যায়, নোয়াখালী পৌর শহরের হাউজিং এস্টেট পিবিআইয়ের সামনে বুখারী সরণির একটি বাসার দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতেন নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী শাকিল। চলমান করোনাভাইরাস দুর্যোগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাসা ভাড়া নেওয়ার কয়েকদিন পর নিজ এলাকা রংপুরে চলে যান তিনি। এরপরও চলতি (জুন) মাসের ভাড়া ব্যতীত অন্যান্য সব মাসের বাসা ভাড়া পরিশোধ করেছেন তিনি। শাকিলের অনুপস্থিতিতে বাড়িওয়ালা তার জিনিসপত্র নিচতলায় শিফট করা ও বাসা ভাড়া নিয়ে ঝামেলার একপর্যায়ে মুঠোফোনে এমন হুমকি দেন বাসার মালিক জায়েদ।
 
বাড়িওয়ালা মো. জায়েদ ভুল স্বীকার করে বলেন, ‘আমার এসব বলা ঠিক হয়নি। ভিসি স্যার এসে নাকে খত দিবে এটা বলা উচিত হয়নি। আমি এজন্য দুঃখিত। মেজাজ ঠিক রাখতে না পেরে এই ধরণের কতা বলেছিলাম। ওরা বাসা ভাড়া দিচ্ছেনা। চলমান করোনাভাইরাস দুর্যোগে আপনার মানবতা দেখানো উচিত নয় কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি মানবতা দেখিয়ে দশ হাজার টাকার ভাড়া সাত হাজার টাকা করে দিয়েছি। আর কত মানবতা দেখাবো? আমার তো বাসা ভাড়া দিয়েই চলতে হয়।’
 
তবে শাকিল আহমেদ বলেন, করোনা দুর্যোগেও শুধুমাত্র রানিং মাসের ভাড়া ব্যতীত সব ভাড়া আমি দিয়েছি। চলতি মাসের টাকাও বিকাশ করে দিবো। নানা হুমকিসহ আমার সাথে খুব বাজে আচরণ করেছে বাড়িওয়ালা। আমাকে নোয়াখালী যাওয়া বন্ধ করে দিবে, সারাজীবনের পড়ালেখা নষ্ট করে দিবে। এসব বলে হুমকি দিয়েছে। ভিসি স্যারকেও গালি দিয়েছে। আমার ক্ষতি করার জন্য বাড়িওয়ালা ভার্সিটির আইডি নম্বর খুঁজছে। সে আমার ফেসবুকের পোস্ট খুব তাড়াতাড়ি ডিলিট করার জন্য ভয় দেখাচ্ছে।
 
করোনা কালীন সময়ে নোয়াখালী জেলা প্রশাসন ৩ মাসের ভাড়া মওকুফ করলেও বাড়িওয়ালা ফুল ভাড়ার জন্য আমাদের চাপ প্রয়োগ করে। শুধুমাত্র মে এবং জুন মাসে বাসা ভাড়া ১০,০০০ থেকে কমিয়ে ৭০০০ করে কিন্তু আমি ফেসবুকে পোস্ট করার কারণে বলছে সম্পূর্ণ ১০ হাজার টাকাই দিতে হবে। এর আগের মে এবং জুনের সব ১০ হাজার টাকা নিবে এটা আমার বন্ধু আতাউস সালাম আমাকে ফোন করে বলেছে। আমি প্রক্টর স্যারকে বিষয়গুলো জানিয়েছি।
 
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মো. বাহাদুর বলেন, আমি কলরেকর্ডগুলো পেয়েছি। ভিসি স্যার, ট্রেজারার স্যার এবং আমি নোয়াখালীতে আছি। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। বাড়িওয়ালা কি করতে পারে তা আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখব।

এমডি/এমএইচ/বাংলাবার্তা