মহানগর ছাত্রলীগের থানা কমিটি ঘোষণায় তৃণমুলে উচ্ছাস

অবিলম্বে অন্যান্য থানা কমিটি গঠনের দাবী

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

দীর্ঘ ত্রিশ বছর পর চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের থানা কমিটি ঘোষণা কার্যক্রম শুরু করেছে সংগঠনটি। ১৫ টি সাংগঠনিক থানার মাঝে এরই মাঝে ঘোষণা করা হয়েছে ৫ টি থানার আংশিক কমিটি। সর্বশেষ গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হয় নগরীর ডাবলমুড়িং ও চাঁন্দগাও থানা ছাত্রলীগের কমিটি।

কমিটি ঘোষণার পর থেকেই আলোচনা সমালোচনা চলছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে। দীর্ঘদিন বাদে কমিটি ঘোষণার পর তৃণমুল নেতাকর্মীরা একে স্বাগত জানিয়েছেন। সংগঠনকে গতিশীল করতে এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তার বলছেন, এর মধ্য দিয়ে তৃণমুল নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণসঞ্চার হবে। আরও বেগবান হবে সাংগঠনিক কার্যক্রম। বিচ্ছিন্নতার পরিবর্তে এখন থেকে কমিটির নেতৃত্বে বৃহৎ কর্মকাণ্ড হাতে নেয়া সম্ভব হবে। এছাড়া সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা বেগবান হবে। নতুন নেতৃত্ব উঠে আসবে তৃণমুল থেকে।

অন্যদিকে কমিটি ঘোষণার পর থেকে পদবঞ্চিত নেতাদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা রাজপথ অবরোধসহ নানা আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে আসছেন। এরই মধ্যে ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন সংগঠনের ৪৬ নেতাকর্মী। তবে এই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে অধিকাংশ নেতাই এ বিষয়ে কিছু জানেন না। এই প্রস্তাবে স্বাক্ষরকারী মহানগর ছাত্রলীগের উপ দপ্তর সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন টিটু দীর্ঘদিন ধরেই সংগঠনে নিষ্ক্রীয়। তিনি বিয়ে করেছেন প্রায় তিন বছর আগে। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিবাহিত কারও সংগঠনের পদে থাকার নিয়ম নেই। বিয়ের পর থেকেই তিনি নিষ্ক্রীয়। তবে সম্প্রতি দুটি থানা কমিটি ঘোষণার পর পছন্দের প্রার্থীদের পদ পাইয়ে দিতে আবারও তৎপর হয়েছেন তিনি।

মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে সাংগঠনিক থানাগুলোর কমিটি নেই। ফলে নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছিল। এমতাবস্থায় সংগঠনকে গতিশীল করতে উদ্যোগ নেয়া হয় থানা কমিটি গঠনের। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন থানায় তৃণমুল নেতাকর্মীদের সাথে ‌’মনের কথা বলি” শিরোণামে মতবিনিময় করে মহানগর ছাত্রলীগ। সেখানে নেতাকর্মীরা কেমন কমিটি চান তা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। তৃণমূলের সাথে কথা বলেই কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। ফলে কমিটি গঠনের পর তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছাস দেখা দিলেও কিছু স্বার্থান্বেষী মহল অপতৎপরতা সৃষ্টির পায়তারা করছে।

মহানগর ছাত্রলীগের একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, নগরীতে কিশোর গ্যাং সৃষ্টিকারী কিছু নেতা কমিটির বিরোধীতা করছেন। কমিটি হওয়ার ফলে ছাত্রলীগ নেতাদের আর নিজের কুক্ষিগত করে রাখা যাবে না এমন ভয় থেকেই তারা এমন অপতৎপরতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

যোগাযোগ করা হলে, মহানগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর বলেন, ‘‌‌দীর্ঘদিন কমিটি না থাকার কারণে অসংখ্য ছাত্রনেতা প্রার্থী হিসেবে ছিলেন। তাই সাময়িক অসন্তোষ স্বাভাবিক। তবে আমরা চেয়েছি দীর্ঘ দিনের জট ভেঙে সংগঠনকে গতিশীল করতে। আমরা তৃণমূলের সাথে কথা বলেছি। তাদের আশা আকাঙ্খার কথা শুনেছি। তাদের মতকে প্রাধান্য দিয়েই কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারা বিষয়টিকে স্বাগতও জানিয়েছেন। এখন তাদের মধ্য থেকেই অন্যান্য থানা কমিটি গঠনের দাবী উঠছে। আমরাও পর্যায়ক্রমে সব থানা ও কলেজ কমিটি ঘোষণা করব, যেন সংগঠনে শৃঙ্খলা ফিরে আসে এবং গতিশীল হয়।