বিজয়ের ৪৮ বছরে কুবির নতুন প্রজন্মের শিক্ষকদের প্রত্যাশা


সাঈদ হাসান, কুবি

আমাদের সামনে সম্ভবনা অসীম। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শিক্ষা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব সমস্যার মোকাবেলায় সচেষ্ট হলে আমাদের অগ্রগতি ঘটবে দ্রুত। বিভেদ ভুলে আমরা সেই পথে অগ্রসর হব,এই হোক বিজয় দিবসের অঙ্গীকার। রাত পোহালেই ১৬ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের ৪৮ বছর শেষ হয়ে ৪৯ এর যাত্রা শুরু হবে। বিজয়ের ৪৮ বছর উদযাপনের এই লগ্নে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ প্রজন্মের শিক্ষকদের সাথে স্বাধীনতা, বিজয় , প্রাপ্তি এবং প্রত্যাশা নিয়ে কথা বলেছেন সাঈদ হাসান।


                                                              
মোঃ হাবিবুর রাহমান
সহযোগী অধ্যাপক,ইংরেজী বিভাগ

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জাতির মেরুদণ্ড বলা হয়। যদি দেশ স্বাধীন না হতো- তাহলে আমরা বুদ্ধির আদান প্রদান করতে পারতাম না। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধে যে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আমাদের স্বাধীনতা দিবসের প্রায় ৫০ বছর সামনে রেখে উৎসবের সাথে সাথে সবাইকে এক হয়ে কাজ করে যেতে হবে। আমাদের দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমাদের অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত, ও বিজ্ঞান ভিত্তিক উন্নয়নের জন্য আমাদের যা করণীয় তা করে যেতে হবে। পাশাপাশি  বর্তমান প্রজন্মকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।

কারন সকল উন্নয়ন সত্ত্বেও যদি নৈতিক অবক্ষয় হয় তাহলে সে জাতি কখনো এগিয়ে যেতে পারবে না। নৈতিক শিক্ষার সাথে প্রযুক্তির ব্যবহার থাকবে। কিন্তু  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যেন অনৈতিকতার হাতিয়ার না হয়। এটাই হোক বিজয় দিবসের স্লোগান।

জান্নাতুল ফেরদৌস
সহকারী অধ্যাপক,লোক প্রশাসন বিভাগ।

৫০ এর কাছাকাছি এসে আমরা অনেক বেশি এগিয়ে। একটা সময় বাংলাদেশকে বলা হতো তলা বিহীন ঝুড়ি। আমরা সেখান থেকে অনেকটা বেরিয়ে এসেছি। আমাদের নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। ভিশন ২০২১ এর লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। ডিজিটালাইজেশনের সুবিধা বাংলাদেশের সর্ব স্তরের মানুষ ভোগ করছে। এটাই ১৬ই ডিসেম্বর এর সবচেয়ে বড় অর্জন। আর এই বিশাল অর্জন রক্ষা করাটা অনেক কঠিন। কারন স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন।

দক্ষ নেতৃত্বের কারনে আছে আমাদের পার্শ্ববতী দেশের চেয়েও আমরা সফলতার পথে এগিয়ে যাচ্ছি। অথচ ভারতে এখনও শৌচাগার সমস্যা রয়েছে। বাংলাদেশে এখন আর সেনিটেশন ব্যবস্থা নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোন সমস্যা নেই। অপরদিকে ভারতের অনেক অঞ্চলে এখন ও সেনিটেশন ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। এসব বিবেচনায় আমরা বলতেই পারি বিজয়ের ৪৮তম বছরের শেষ লগ্নে এসে আমরা অনেকটাই সফল।

মারিয়া তাহসিন
প্রভাষক, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগ

বিজয় দিবসে একটাই প্রত্যাশা। দেশপ্রেমের কথা শুধু মুখে না বলে হৃদয়ে ধারণ করা উচিত। আমাদের জাতীয় পতাকার ভার বহন করার দায়িত্ব আমদের সবার। সবাই মিলে এই পতাকার মর্যাদা রক্ষা করা এবং দেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে কাজ করে যাওয়াই বিজয় দিবসের মূলমন্ত্র হওয়া উচিত। আর প্রতি মুহূর্তে হৃদয়ে ধ্বনিত হোক- ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।’

ফয়জুল ইসলাম ফিরোজ
প্রভাষক, লোক প্রশাসন বিভাগ

বাংলাদেশের স্বাধীনতা খুব সহজে অর্জিত হয়নি। এই স্বাধীনতার জন্য সাত কোটি বাঙালিকে বেছে নিতে হয়েছিল সংগ্রামের পথ। আমাদের এই লাল সবুজের পতাকা অর্জিত হয়েছে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে। অসংখ্য প্রাণ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে বিশ্ব মানচিত্রে স্থান করে নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ। অসংখ্য আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয়ের মর্যাদা রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই। রাত পোহালেই বিজয়ের ৪৮ বছর পূর্ণ হবে। বিজয়ের ৪৯ তম বছরে এটাই প্রত্যাশা।

মহান মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে সবাই দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়েছে; তেমনিভাবে একটি সমৃদ্ধ দেশ বিনির্মানে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজেদের অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। একজন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, চিকিৎসক, শ্রমিক, আইনজীবি সর্বোপরি দেশের সকল পেশার মানুষজন যদি বুকে দেশপ্রেম ধারণ করে তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে, তাহলেই গড়ে উঠবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।