দীর্ঘদিন পর এক সারিতে চবি ছাত্রলীগের মহিউদ্দিন গ্রুপ

চবি প্রতিবেদক

অবশেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে পাওয়া গেল ঐক্যের সুর। এই প্রথম দুই গ্রুপের মধ্যে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়ন কিংবা বিভক্তির রাজনীতি পরিহার হলো, শুরু হলো নতুন সূচনা।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারীরা দুইটি গ্রুপে বিভক্ত। একটির নেতৃত্বে আছেন বর্তমান সভাপতির নেতৃত্বাধীন চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি), অন্যটি সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াসের নেতৃত্বাধীন গ্রুপ বিজয়।

সাবেক আওয়ামীলীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার ছেলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরীকে অনুসরণ করছে গ্রুপ দুটি।

জানা যায়, ২০১১ সালে মামুন -খালেদের কমিটিতে সিটি মেয়র আ.জ.ম. নাসির উদ্দীনের অনুসারী গ্রুপ এক থাকলেও আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর গ্রুপের তৎকালীন বগিভিত্তিক সংগঠন চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারকে (সিএফসি) পুরোপুরি ক্যাম্পাস থেকে আউট করে দেয়। তার অংশ হিসাবে তৎকালীন ছাত্রনেতা শহীদ -সাব্বির -ফুয়াদ সহ প্রায় অর্ধশতাদিক ছাত্রলীগ নেতা কর্মীর হাত পা ভেঙে দেয়া হয়। শারিরীক এবং মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে তাদেরকে পুরোপুরি ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দেয়।

এতে জামান নুর, সন্জয় চক্রবর্তী, শহীদুল ইসলাম শহীদ , মিথুনসহ এসব নেতা-কর্মীরাই জামাত শিবিরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। ২০১৫ সালে টিপু-সুজন কমিটি হলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর গ্রুপের সিএফসি সংগঠিত থেকে সুজনকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সিএফসি গ্রুপের সকল নেতা কর্মীকে বাদ দিয়ে, অযোগ্য এবং বামপন্থী নেতা কর্মীদের নিয়ে কমিটি করার অভিযোগ রয়েছে। এর মাধ্যমেই আবারও এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে গ্রুপিংয়ের জন্ম হয়।

পরে তৎকালীন সময়ে রেজাউল হক রুবেলের নেতৃত্বে চবি ছাত্রলীগের সকল নেতা কর্মীদের নিয়ে কঠিন আন্দোলন গড়ে তুললে, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রামে এসে অযোগ্যদের বাদ দিয়ে রেজাউল হক রুবেলের সাথে সকল নেতা কর্মীদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর ২০১৯ সালে রুবেল-টিপু কমিটি হলে রুবেলের শত শত কর্মী সাথে থাকা সত্যেও রুবেল বিজয় গ্রুপের সকল নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে কাজ করার আপ্রান চেষ্টা করেন। এতে প্রায় বিজয় গ্রুপের  অধিকাংশ নেতা কর্মীই রেজাউল হক রুবেলের সাথে যোগ দেন।

এই বিষয়ে বিজয় গ্রুপের নেতা নাহিদ আলম বলেন, আমাদের নেতা নওফেল ভাই যাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই রুবেল ভাই একজন নিরহংকারী, পরিশ্রমী, যোগ্য এবং কর্মীবান্ধব নেতা হওয়ায়,আমি সহ আমার সকল অনুজরা খুব সহজেই, আমাদের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ভাইয়ের সাথে স্বাচ্ছন্দে রাজনীতি উপভোগ করি। আশাকরি রুবেল ভাই অত্যন্ত দক্ষতার সাথে যোগ্যদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে, আমাদের আশা আকাঙ্খার সম্মিলন ঘটাবেন।

এছাড়াও বিজয় গ্রুপের অল্প কিছু নেতা রেজাউল হক রুবেলকে মেনে নিতে কষ্ট হলেও, তারা সবশেষে রুবেলের ধৈর্য্য এবং সহশীলতার কাছে হার মানতে বাধ্য হয়।

রেজাউল হক রুবেল বলেন, নওফেল ভাই এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ আমাকে সকল নেতা কর্মীর জন্যই সভাপতি বানিয়েছেন, কোনো নির্দিষ্ট গ্রুপ কিংবা বগিভিত্তিক সংগঠনের জন্য নয়। আমার একমাত্র এজেন্ডা দেশরত্ন শেখ হাসিনা এবং ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ভাইয়ের এজেন্ডা।

তিনি বলেন, খুব দ্রুত যোগ্যদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ, হল এবং ফ্যাকাল্টি কমিটির মাধ্যমে বগিভিত্তিক রাজনীতির অবসান ঘটাবো।

এসএস/এমএইচ/বাংলাবার্তা