দিয়াজের লাশ নিয়ে মায়ের অপরাজনীতি, বিব্রত বিশিষ্ট জনেরা!

চবি প্রতিনিধিঃ

কখনো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কখনো রাজনীতিবিদ, কখনো ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়ের ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন দিয়াজের মা জাহেদা আমিন।

২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর নিজ বাসা থেকে দিয়াজের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়
এ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একশ্রেণীর মানুষ চট্টগ্রাম নগর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাজনীতি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িয়ে স্ববিরোধী নানা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনদের বিব্রত করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে।

বিভিন্ন সময় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকে দিয়াজের মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে বক্তব্য দেন দিয়াজের মা জাহেদা আমিন। ৩১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে চট্টগ্রাম মহানগর কৃষকলীগ আয়োজিত দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকবিরোধী আলোচনা সভায় প্রেসক্লাবের ভেতরে মেয়রের ব্যক্তিগত চরিত্রহনন করেও চিৎকার করতে থাকেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দিয়াজের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করতে গিয়ে জমির অবৈধ দখলদারদেও একটি চক্র আমাকে এ মামলায় জড়িয়েছে। এদের সঙ্গে দুইজন শিক্ষকও জড়িত। গণমাধ্যমের গুটিকয়েক কর্মীকে খবর দিয়ে এনে কেউ কেউ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে অজ্ঞান হয়ে যায়, বিলাপ করে, অনশনে বসে গেছে দিয়াজের বিচারের দাবিতে। রাস্তাঘাটে বিশিষ্টজনদের বিব্রত করে তারা মিডিয়া কাভারেজ নিয়েছে গত তিন বছর ধরে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল টিপু বলেন, উনি (দিয়াজের মা জাহেদা আমিন) মানসিক বিকারগ্রস্ত। গত তিন বছর ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামে বা বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের সামনে শুয়ে পড়েন। একেকবার একেকজনকে ধরে তিনি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। রাস্তাঘাটে হ্যারাসমেন্ট করছেন।

তিনি বলেন, দিয়াজ ভাই আমাদের গ্রুপের নেতা ছিলেন, বড় ভাই ছিলেন। আমরা সম্মান করতাম তাকে। উনার বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। আইনী প্রক্রিয়ায় এটি সমাধান হবে। এখনতো আর দিয়াজ ভাই ইস্যু নেই। এখন তারা নিজেদের রাজনৈতিক নোংরা মানসিকতার কারণে নোংরা কাজগুলো ক্রমাগত করেই যাচ্ছেন। আ জ ম নাছির জননেতা, জননন্দিত নেতা। উনাকে নিয়ে অতীতেও ষড়যন্ত্র হয়েছিল, এখনো চলছে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হয়নি, হবেও না।

দিয়াজের মৃত্যুর পরদিন দিয়াজের মামা রাশেদ বিন আমীন, দিয়াজের বড় বোন জুবাঈদা ছরওয়ার নিপার স্বামী ছরোয়ার আলম দাবি করেছিলেন, টেন্ডারের সমঝোতার ২৫ লাখ টাকার চেকের অর্থ পরিশোধ না করতেই ছাত্রলীগের একটি অংশ দিয়াজকে হত্যা করেছে। এ সময় জাহেদা আমিনও ২৫ লাখ টাকার টেন্ডারসহ ছাত্রলীগের গ্রুপিংকে দায়ী করেছিলেন। কিন্তু মামলায় টেন্ডারবাজির ২৫ লাখ টাকার চেকের কথা এড়িয়ে গিয়ে ‘দুই লাখ টাকা চাঁদার কথা উল্লেখ করায় দিয়াজের মৃত্যুর কারণ নিয়ে খোদ প্রশ্ন জাগিয়ে দিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরাই।

কিন্তু মামলার এজাহারে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন উল্লেখ করেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মায়ের কাছ থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যলয় সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি আবুল মনসুর জামশেদ, তৎকালীন সভাপতি আলমগীর টিপুসহ ১০ জন দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন।