করোনা: চট্টগ্রামে ‘বেসরকারি আইসোলেশন সেন্টার’ই ভরসা

চট্টগ্রামে বেসরকারি আইসোলেশন সেন্টার
চট্টগ্রামে বেসরকারি আইসোলেশন সেন্টার
মূর্ধন্য দিপু:
 

হাসপাতালে ঘুরে করোনার চিকিৎসা না পাওয়া অসহায় রোগীদের জন্য এখন ভরসা বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আইসোলেশন সেন্টার। সীমিত সুযোগ-সুবিধা নিয়েও শুধু আন্তরিক সেবায় সুস্থ হয়ে উঠছেন রোগী। এমনকি উন্নত পরিবেশের আশায় সরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল থেকেও রোগীরা চলে আসছে এখানে।

 
কেউ ওষুধের ট্রলি নিয়ে ছুটছেন রোগীদের কাছে। কেউ রোগীকে দিচ্ছেন ইনজেকশন। পাশাপাশি খাবারের ব্যবস্থার দেখভালও করছেন। এদের কেউই চিকিৎসক না প্রশিক্ষিত নার্স নন। সবাই স্বেচ্ছাসেবী। নগরীর হালিশহর এলাকায় করোনা আইসোলেশন সেন্টারে স্বেচ্ছাশ্রমে করোনা রোগীদের সেবা দিয়ে চলছেন তারা।
 
শেষ পর্যন্ত আশার আলো জাগাচ্ছে আইসোলেশন সেন্টারগুলো। যেখানে রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি সব সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
 
নগরী ও জেলার পাশাপাশি বৃহত্তর চট্টগ্রামেরও করোনা রোগীদের ভরসাস্থল এখন এসব আইসোলেশন সেন্টার। বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি তরুণদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আইসোলেশন সেন্টারও রোগীদের সেবায় কাজ করে যাচ্ছে।
 
করোনা আইসোলেশন সেন্টারের প্রধান উদ্যোক্তা সাজ্জাত হোসেন বলেন, ‘১২ জন চিকিৎসক আছেন, ৭ জন নার্স আছেন। আর স্বেচ্ছাসেবক আছেন ৫০ জন। অক্সিজেন সেবা এবং দামি ওষুধও বিনামূল্যে এখান থেকে দিচ্ছি।’
 
করোনা আইসোলেশন সেন্টারের স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, ‘সন্তানের মতো করেই সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
 
গত এক মাসেরও কম সময়ে চট্টগ্রামে গড়ে উঠেছে অন্তত ৬টি আইসোলেশন সেন্টার। সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে আড়াইশ শয্যার সবচে বড় চিকিৎসা কেন্দ্রটি।
 
বর্তমানে এসব সেন্টারে করোনা রোগীর পাশাপাশি উপসর্গ নিয়ে রোগী ভর্তি আছে কয়েকশো। গত এক সপ্তাহে সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন একশ’র বেশি রোগী।
 
করোনা আইসোলেশন সেন্টারের মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘হঠাৎ করে ক্রিটিক্যাল রোগী চলে আসে, কিন্তু পর্যাপ্ত অক্সিজেন নেই। সরকারের পক্ষ থেকে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা উচিত।’
 
অনেকটা সীমিত সুযোগ-সুবিধা নিয়েই আইসোলেশন সেন্টারগুলোতে রোগী সেবা দিতে হচ্ছে। বিশেষ করে জরুরি প্রয়োজনে অক্সিজেন ও চিকিৎসকের জন্য হিমশিম খেতে হয় তাদের। এক্ষেত্রে সরকারিভাবে চিকিৎসক নিয়োগের কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
 
সিটি কর্পোরেশন আইসোলেশন সেন্টার পরিচালক ডা. সুশান্ত বড়ুয়া বলেন, ‘সিট পাওয়ার যে আতঙ্ক তা অনেক খানি কমে গেছে।’
 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ডা. সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আইসোলেশন সেন্টারের সংখ্যা যদি আরো বাড়িয়ে দেশের সব জায়গায় এ সেন্টারের সংখ্যা বাড়ানো হয়, তাহলে করোনা রোগী উপযুক্ত চিকিৎসা পাবে।’
 
এর মধ্যে নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় সিএমপি-বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ১০০ শয্যার ফিল্ড হাসপাতাল, হালিশহরে মানাহিল ফাউন্ডেশন ৭০ শয্যার এবং বাকলিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম ৭০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার গড়ে তুলেছেন।

এমডি/এমএইচ/বাংলাবার্তা