করোনায় মুক্তি পাচ্ছে লাখো কয়েদি!

নিউজ ডেস্ক

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জেলখানা থেকে বন্দীদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতোমধ্যে ইরানে বহু বন্দীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, এমনকি ভারতেও কিছু বন্দীকে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
জেলখানাগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়েও বেশি বন্দী থাকায় সেখানে ‘সামাজিক দূরত্ব’ বজায় রাখা কঠিন। এর ফলে সেখানে মানুষ থেকে মানুষে কোভিড-১৯ রোগটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি।


ইরানি সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের প্রকোপ মোকাবেলায় দেশটিতে কর্তৃপক্ষ ৮৫ হাজারের মতো বন্দীকে মুক্ত করে দিয়েছে। তাদের মধ্যে অনেক রাজনৈতিক বন্দীও রয়েছেন।
চীন ও ইউরোপের বাইরে ইরানেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, দেশটির বিভিন্ন রাজ্যের জেলখানা থেকে বন্দীদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন রাজ্য ইতোমধ্যে এই সিদ্ধান্ত অনুমোদনও করেছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস তাদের এক খবরে বলছে, কর্তৃপক্ষ নিউ জার্সির কারাগার থেকে এক হাজারের মতো বন্দীকে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।


সারা বিশ্বের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জেলখানাগুলোতে সবচেয়ে সংখ্যক বন্দী আটক রয়েছে। ধারণা করা হয় কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের কারাগারগুলোতে ২৩ লাখের মতো বন্দী রয়েছেন।
নিউ ইয়র্কের জেলখানাতে কমপক্ষে ২৯ জন বন্দী এবং ১৭ জন কর্মকর্তা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর দিচ্ছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর পরই শহরের মেয়র বিল ডে ব্ল্যাসিও কিছু বন্দীকে খুব দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন।


বলিউডের সাবেক প্রযোজক হার্ভে ওয়েনস্টেইন, যৌন হয়রানি করার অপরাধে যিনি নিউ ইয়র্কের কাছে বাফেলোর একটি কারাগারে আটক রয়েছেন, তিনিও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ ভারতের কেন্দ্রীয় তিহার জেল থেকেও তিন হাজারের মতো বন্দীকে জরুরি ভিত্তিতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে দ্য হিন্দু পত্রিকা।
এর আগে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট থেকে এক আদেশে বলা হয়েছে করোনাভাইরাসের প্রকোপ মোকাবেলায় কোন কোন বন্দীকে সাময়িকভাবে ছেড়ে দেওয়া যায় সেটা বিবেচনা করে দেখার জন্য।


করোনাভাইরাসের আতঙ্কে গত সপ্তাহে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ কলাম্বিয়ায় বন্দীরা জেল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে দাঙ্গায় কমপক্ষে ২৩ জন বন্দী নিহত হয়েছে।
রাজধানী বোগোতার জেলখানায় এই দাঙ্গার ঘটনায় ৮০ জনেরও বেশি আহত হয়।
করোনাভাইরাসের আতঙ্কে সারাদেশের জেলখানায় বন্দীরা রবিবার বিক্ষোভ করে তাদের স্বাস্থ্য সেবা উন্নত করার দাবি জানায়।
কলাম্বিয়া সরকার বলছে, কোভিড-১৯ এর আতঙ্কে দেশটির ১৩টি জেলখানাতেই এধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
ব্রিটেন সরকারও এই মহামারির কারণে জেল থেকে কিছু বন্দীকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে।


দেশটির বিচারমন্ত্রী রবার্ট বাকল্যান্ড বলেছেন, জেলখানায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের “বড়ো ধরনের ঝুঁকি” রয়েছে। কেননা অনেক জেলখানাতেই ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি সংখ্যক বন্দী আটক রয়েছেন।
এছাড়াও কারাগারের বহু কর্মকর্তা কর্মচারী এখন হয় অসুস্থ, অথবা তারা আর সবার কাছ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করেছেন।
তিনি বলেন, কারা কর্তৃপক্ষকে এখন এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বন্দীদের জীবন রক্ষার কথাও বিবেচনা করতে হচ্ছে।


তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

এমডি/ এমএইচ/ বাংলাবার্তা