করোনাভাইরাস: বন্ধ ওমরাহ, বিপাকে ট্রাভেল এজেন্সি


নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সতর্কতা হিসেবে বিদেশিদের জন্য ওমরাহ করার সুবিধা স্থগিত করেছে সৌদি আরব। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন সিলেটের ট্রাভেলস ব্যবসায়ীরা। বিপাকে পড়েছেন ওমরাহ যাত্রীরাও।


জানা যায়, প্রতিবছর সিলেট থেকে প্রায় ২০ হাজার যাত্রী ওমরাহ পালনে সৌদি আরব যান। সিলেটে প্রায় ২০০ ট্র্যাভেল এজেন্সি আছে। এর মধ্যে অন্তত ১০টি ট্রাভেলস এজেন্সি সৌদি আরবে হজ ও ওমরাহ যাত্রী প্রেরণ করে। সৌদির ওমরাহ বন্ধের ঘোষণায় ক্ষতির মুখে পড়েছে এই প্রতিষ্ঠানগুলো। অনেকে হজ যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পর তা ফেরত দিতে হচ্ছে।


জানা যায়, সিলেটের কয়েকটি ট্রাভেলস এজেন্সি সারা বছরই ওমরাহ করার জন্য সৌদি আরবে যাত্রী প্রেরণ করে। পুরো বছরের জন্য তারা সৌদি আরবে বাসা ভাড়া নিয়ে রাখে। ওমরাহ বন্ধের ঘোষণায় তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে।


সৌদি আরবে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মুসলমান ওমরাহ ও হজ্ব পালন করেন। গত বছর প্রায় ২৫ লক্ষ মুসলমান হজ্ব পালন করেছিলেন। তবে জুলাই মাসে আসন্ন হজে যেতে আগ্রহীদের উপর এই স্থগিতাদেশ কোন প্রভাব ফেলবে কিনা, সেটি এখনো পরিষ্কার নয়।


অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক ও লতিফ ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল চৌধুরী শিরু বলেন, প্রতিবছর সিলেট থেকে প্রায় ২০ হাজার যাত্রী ওমরাহ হজ পালনে সৌদি আরবে যান। সৌদি আরব হজ ভিসা বন্ধ করায় বিপাকে পড়েছেন এই যাত্রীরা। একইসাথে ট্রাভেলস ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন।


তিনি নিজেই প্রায় কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন জানিয়ে বলেন, আমরা সারা বছরের জন্য সৌদি আরবে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি। ওমরাহ বন্ধ হলেও এই বাসা ভাড়া গুনতে হচ্ছে। তাছাড়া অনেক ওমরাহ যাত্রী আমাদের এখানে বুকিং দিয়েছিলেন। তাদের বিমান টিকিট ও ভিসার ব্যবস্থাও আমরা করেছি। টিকিটের টাকা ফেরত পেলেও ভিসার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।


অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সিলেটের সভাপতি আবদুল জব্বার জলিল বলেন, ওমরাহ হজ ফ্লাইট বন্ধ করায় ট্রাভেল ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। পাশাপাশি হজে যেতে আগ্রহীরাও বিপাকে পড়বেন। হজ ফ্লাইট বন্ধ থাকায় সিলেটের প্রায় ১২০০ যাত্রী হজে যেতে পারছেন না। আগামী রমজানের আগে যদি এই নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেওয়া হয় তাহলে সিলেটের প্রায় ২০ হাজার মানুষ হজ করতে পারবেন না।


তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীরা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিয়েছেন। এখন এই নিষেধাজ্ঞা না তুললে ট্রাভেল ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
জলিল বলেন, আমার নিজের ট্রাভেল থেকে ১৫০ জন হজযাত্রীর কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা নেওয়া আছে। এখন এই টাকা ফেরত দিতে গেলে আমি আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবো। কারণ ইতোমধ্যে এই টাকা বিভিন্ন কাজে খরচ হয়েছে। আমার মতো সিলেট সব ট্রাভেল ব্যবসায়ীদের একই অবস্থা। হজ ফ্লাইট ছাড়াও সৌদির নিয়মিত ফ্লাইটও যদি সৌদি সরকার বন্ধ রাখে তাহলে আমরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হব সৌদি সরকারও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বাংলাবার্তা /এমডি/ এমএইচ