নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেটে এক প্রবাসীর জায়গা দখলের লক্ষ্যে দুর্বৃত্তরা একের পর এক হামলা-ভাংচুর চালিয়ে যাচ্ছে। এসব ঘটনায় থানায় মামলা হলেও কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ঘটনাটি সিলেট মহানগরীর দক্ষিণ সুরমা থানার মুছারগাঁও গ্রামের। ঘটনার শিকার ফলিক মিয়া চৌধুরী ওরফে ছালিক মিয়া চৌধুরী যুক্তরাজ্য প্রবাসী। তিনি সেখানকার নর্থ ওয়ালশাম টাউন কাউন্সিল নর্থ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং নরফোক এন্ড নরউইচ ব্রাঞ্চ আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার বাড়ি সিলেট জেলার বিশ্বনাথের নবাগ গ্রামে।
গত ১৮ এপ্রিল দক্ষিণ সুরমা থানায় রেকর্ডকৃত মামলার বাদী আছমা বেগম এজাহারে উল্লেখ করেন, ‘‘আমার বাসার মালিক প্রবাসে থাকায় তার নিকটাত্মীয় মো: আলাউর রহমান রুমন তা দেখাশোনা করেন। কিন্তু মালিকের অবর্তমানে একটি চক্র তার জায়গা-জমি দখলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৭ এপ্রিল রাতে দাউদপুরের শওকত ও সুহেল আহমদের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের বসবাসরত বাসায় এসে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। তারা একপর্যায়ে আমি ও আমার স্বামী সন্তানদের জোরপূর্বক ঘর থেকে বের করে দেয়।
বিষয়টি রাস্তায় টহলরত সেনা ও পুলিশ সদস্যদের অবগত করলে তারা এসে পুনরায় আমাদের বাসার ভেতর প্রবেশ করায়।’’ এখানেই শেষ নয়। এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর উল্লেখিত প্রবাসীর আত্মীয় মো: আলাউর রহমান রুমনও সোহেল আহমদ গংদের বিরুদ্ধে একই থানায় মামলা করেন। তিনিও অভিযোগ করেছিলেন, তার প্রবাসী খালুর জায়াগা-জমি দখলের লক্ষ্যে দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে জখম করেছিল। তবে এই মামলায় কোনো প্রতিকার না হওয়ার ফলে আবারও তার পুনরাবৃত্তি ঘটে।এদিকে মো: আলাউর রহমান রুমন জানান, দক্ষিণ সুরমার মুছারগাঁও গ্রামের নাছিম উল্লাহ ও তফুর উল্লাহ দুই ভাই। তাদের মধ্যে জায়গা বন্টনের পর নাছিম উল্লাহ তার প্রাপ্ত ভূমি ১৯৬৩ সালে পার্শ্ববর্তী কাস্তরাইল গ্রামের মো: রমজান উল্লাহর নিকট বিক্রি করেন। ১৯৮০ সালে তিনি সেই ভূমি বিক্রি করেন মুছারগাঁও গ্রামের রমিজ উল্লাহর কাছে।
দীর্ঘদিন ভোগদখলের পর রমিজ উল্লাহ ২০০৯ সালে তার নিযুক্ত আমমোক্তারনামার মাধ্যমে তা বিক্রি করেন প্রবাসী ফলিক মিয়া চৌধুরীর কাছে। এতে স্বাক্ষী হিসেবে ছিলেন তার পুত্র সুহেল আহমদ। এদিকে ভূমি বিক্রির পরও ২০১০ সালে রমিজ উল্লাহ ফলিক মিয়া চৌধুরীর নামীয় দলিলের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করলে ২০১৩ সালে তা খারিজ হয়ে যায়। অথচ একই জায়গা তিনি দ্বিতীয়বার জনৈক তাহির আলীর নিকট বিক্রি করেন।
এতেও স্বাক্ষী হিসেবে তার পুত্র সুহেলের সই রয়েছে। তবে জায়গাটি ফলিক মিয়ার দখলে থাকায় তাহির আলী তা জনৈক লুৎফর রহমানের কাছে বিক্রি করেন। কিন্তু তাহির আলী বিক্রিত জায়গার দখল সমজে দিতে না পারায় লুৎফর রহমান ২০১৪ সালে আদালতে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন, যা ২০১৮ সালে ২০১৮ সালে ডিক্রী প্রচারিত হয়।এদিকে ২০১৩ সালে ফলিক মিয়া চৌধুরী জানতে পারেন ভূমি মূল মালিক নাছিম উল্লাহর ভাই তফুর উল্লার উত্তরাধিকারী অপরাপর নালিশা ভূমি নিয়ে আদালতে মামলা করলে ২০০৫ সালে একতরফা রায় হয়। এর বিরুদ্ধে রমিজ উল্লাহ বিবিধ মামলা করলে আদালত তা খারিজ করে দেন। বিষয়টি জানার পর ফলিক মিয়া চৌধুরী ২০১৫ সালে আদালতে স্বত্ব মামলা দায়ের করেন। তবে এরইমধ্যে রমিজ উল্লাহর মৃত্যু হলে এ মামলার জবাব দিচ্ছেন না তার পুত্র সুহেল আহমদ গং। আর এ কারণেই তারা উল্লেখিত প্রবাসীর জায়গা দখলের জন্য তার নিকটাত্মীয় ও ভাড়াটিয়াদের ওপর বার বার হামলা চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে ভোক্তভোগী মোঃআলাউর রহমান রুমন বলেন, যুক্তরাজ্য প্রবাসী আমার আংকেল ফলিক মিয়া চৌধুরী ওরফে ছালিক মিয়া চৌধুরীর জায়গা দখল করার জন্য একের পর এক হামলা ও মামলা এবং জিডি হচ্ছে কিন্তুু কোন সূরাহা হচ্ছে না।তিনি আরো বলেন,গত ৫ মে সর্বশেষ তার বসতবাড়ি দক্ষিন সুরমার কায়েস্তরাইল এলাকার (জাহানারা মন্জিল আবাসিক প্রকল্পের) গেটের সামনে সন্ত্রাসী সোহেল গ্যাং এর নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র দা,চাপাতি,পাইপ,রড দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।
এমডি/এমএইচ/বাংলাবার্তা