শরবত রোজাদারের ইফতারের অন্যতম পানীয়। রোজাদারের দেহের সারা দিনের ঘাটতি দ্রুত পূরণে শরবত বিশেষ ভূমিকা রাখে। সারা দিন অনাহারে থাকার ফলে শরীরে পানি ও গ্লুকোজের অভাব হয়। এ জন্য এ সময় চিনি বা গুড় বা ফলের শরবত পান করা প্রয়োজন। এতে দেহে দ্রুত পানির ঘাটতি পূরণ করে শক্তি দেবে। শরবতে রয়েছে খাদ্যশক্তি, গ্লুকোজ, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। শরবত তৃষ্ণা মেটায়, পেট ঠাণ্ডা রাখে, খাদ্যদ্রব্য হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। স্যালাইনের মতো দ্রুত শক্তি দেয়। কোন শরবত স্বাস্থ্যসম্মত, সেটিই প্রশ্ন। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের যে রঙিন শরবত পাওয়া যায় তা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। রঙিন শরবতে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে।
ফলের জুসে নেই ফলের রস। চিনি, গুড়, লেবু ও পানি দিয়ে তৈরি শরবতই সবচেয়ে স্বাস্থ্যসম্মত। অনেকেরই প্রশ্ন, চিনি ও গুড়ের মধ্যে কোনটি ভালো। পুষ্টিবিদ ও ভেষজবিদদের মতে, চিনির চেয়ে গুড় বেশি পুষ্টি ও ভেষজসমৃদ্ধ। আখের গুড় চিনির চেয়ে বেশি হজম হয়। গুড়ে আখের রসের সব খনিজ ও ক্ষারক পদার্থ সুরক্ষিত থাকে। তবে গুড়ে প্রচুর ময়লা থাকে। এই ময়লা পরিশোধন করতে পারলে গুড়ই উত্তম হতো।
আয়ুর্বেদ মতে, গুড় রক্তস্বল্পতা, জন্ডিস, পিত্তনাশ ও কোনো স্থানে ফুলে ওঠা দূর করে।
গুড়ের শরবত কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। গুড়ে চিনির চেয়ে ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ফসফরাস বেশি থাকে। অনেকেই আখের রস পুষ্টিসমৃদ্ধ মনে করে ইফতারে শরবত হিসেবে পান করেন। আখের রসের চেয়ে গুড় ও চিনিতে ১০ গুণ বেশি খাদ্যশক্তি, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম আখের গুড়, চিনি ও আখের পুষ্টি আছে যথাক্রমে খাদ্যশক্তি ৩৮৩, ৩৯৪ ও ৩৯ ক্যালরি; শর্করা ৯.৫, ৯.৮ ও ৯.১ গ্রাম; ক্যালসিয়াম ৮০, ২৮ ও ১০ মিলিগ্রাম; ফসফরাস ৪০, ৪ ও ১০ মিলিগ্রাম এবং আয়রন ১১.৪, ০.১১, ১.১ মিলিগ্রাম। পরিষ্কার করে শরবত করতে পারলে আখের গুড়ের শরবতই স্বাস্থ্যসম্মত।