কবিরহাটে ভূমি দখল: গরীব হওয়ায় বিচার পান না কামরুল

502

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার চন্দ্রশুদ্দি এলাকার বাসিন্দা কামরুল ইসলামের বসত ঘর জবরদখল ও পরিবারের সদস্যদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে চাচা রহমত উল্যাহ ও তার ছেলেদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে কামরুল ইসলাম বলেন ‘গরীব হওয়ায় আমরা কোনো বিচার পাই না’।

এ ঘটনায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালীর কবিরহাট থানায় ৭ জনকে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেন কামরুল ইসলামের মা আকতারা বেগম।

এতে আসামি করা হয়, ‘ আরমান (পিতা মৃত রহমত উল্যাহ), মো. রিমন (পিতা মৃত রহমত উল্যাহ), সামছল হক (পিতা ইদ্রিস মিয়া), ছায়েদল হক (পিতা ইদ্রিস মিয়া), নুর জাহান (পিতা ইদ্রিস মিয়া), রেজাউল হক (পিতা মৃত নুরুল হক), কালা মিয়া (পিতা মৃত গোলাপ রহমান)।

অভিযোগ পত্রে বলা হয়, ‘আসামিরা সমাজের কোনো আইন মানেন না। আসামিরা আমাদের বসত ঘর জবরদখল করে নিজেদের নিজেদের ঘর তৈরি করছে। এতে বাধা দিলে আমাদের মারধর করা হয়। এছাড়া আমাদের বসত ঘর ভাংচুর করে বিল্ডিং নির্মাণ করছে। আমাদেরকে নিজেদের বসত বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র করছে তারা।’

ভূমি: চন্দ্রশুদ্দি মৌজার ১৬২ দাগের ভূমি।

এ বিষয়ে কামরুল ইসলাম বাংলাবার্তাকে বলেন, ‘আমি গরীব মানুষ। রিকশা চালিয়ে কোনোমতে পরিবার চালাই। কিন্তু নিজের বাবার সম্পত্তি বসতবাড়িও এখন হারাতে বসেছি। ছেলে মেয়ে এবং মাকে নিয়ে কোথায় যাবো জানিনা। ২০১৮ সালে আমার পরিবারের সবাইকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত আসামীরা। তখন থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম। এরপর এলাকার চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চেয়েছি। সে সময় জামানত হিসেবে চেয়ারম্যান দুই পক্ষের কাছ থেকে ৪০ হাজার করে ৮০ হাজার টাকা নিয়েছিলো।

তিনি বলেন, এই বিচারের দায়িত্ব আনোয়ার মেম্বারের কাছে দেন চেয়ারম্যান। কিন্তু কয়েক দফায় সালিশ হলেও এর কোনো সমাধান হয়নি। আমি বিচারের জন্য অনেকের দারস্থ হয়েছি। অনেক টাকাও খরচ করেছি। এখন এক বেলা খাওয়ার মত টাকাও নেই। রোহিঙ্গার মত জীবন যাপন করছি ছেলে মেয়েদের নিয়ে। গরীব হওয়াতে আমরা কোনো বিচার পাই না। গত ২৪ তারিখ আমার মাকেও তারা মারধর করা হয়েছে। ঘরের টিন কেটে ফেলেছে তারা। আমি শুধু অভিযোগ নিয়ে মানুষের দ্বারেদ্বারে ঘুরছি। জানিনা কে আমাদের পাশে দাঁড়াবে?’

এর আগে ২০১৮ সালের ১৮ জুন একই ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ করেন কামরুল ইসলাম। তখন আসামি করা হয়, ‘রহমত উল্যাহ (পিতা মৃত নজির আহাম্মদ), মো. সোহাগ (পিতা মৃত আবুল বাশার, মিজন উদ্দিন (পিতা মৃত মফিজুর রহমান), সামছুল হক (পিতা মৃত ইদ্রিছ মিয়া), মো. ফরহাদ (পিতা মৃত আলী আহাম্মদ), মো. ইসমাইল (পিতা মাহফুজুর রহমান)।

সেই অভিযোগ পত্রে বাদি কামরুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ‘বিবাদীরা লাঠিয়াল শ্রেণীর দুষ্ট প্রকৃতির লোক। এর মধ্যে বিবাদী রহমত উল্যাহর সাথে আগে থেকে জায়গা জমি ও কভার ভ্যানের আয়ের টাকা নিয়ে মতবিরোধ থাকার কারনে তারা আমাদেরকে অনেকবার মারধর ও অত্যাচার করেছে। আসামিরা সালিশ বিচার না মানায় আমরা এসব অপরাধের কোনো বিচার পাইনি।’

 

এমএইচ/বাংলাবার্তা