চবির ‘প্রবাহ নৈশ স্কুল’ ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শারীরিক শিক্ষা বিভাগের তৎকালিন পরিচালক আ স আ জহুর হোসেন রোভার স্কাউট চবি শাখার উদ্যোগে শিক্ষার আলো বঞ্চিত অবহেলিত শিশুদের পাঠদানের জন্য ‘প্রবাহ নৈশ স্কুল’ নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন।

কালের পরিক্রমায় আ স আ জহুর হোসেনের অবসরের পর কেউ আর এ মহৎ উদ্যোগটির খোঁজ রাখেননি। এলাকাবাসীরা জানান এই স্কুলটিতে দীর্ঘ ৩০ বছরের বেশি সময় শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত ছিলো।

জানা যায়, স্কুল ভবনটির জায়গায় আগে ‘জোবরা রেল স্টেশন’ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেল স্টেশন ছিলো। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা নতুন রেল লাইনসহ স্টেশন নির্মিত হলে স্টেশনটির প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়। বর্তমানে রেল স্টেশনটি বিলুপ্ত। সেসময় যাত্রী ছাউনি হিসেবে ব্যবহৃত ভবনটিকে কাজে লাগিয়ে “প্রবাহ নৈশ স্কুল” নামের এই বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়।

কিন্তু চবি জোবরা স্টেশন বিলুপ্তির সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিএনপি থেকে নির্বাচিত ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মোহাম্মদ হোসেন যাত্রী ছাউনির উপর দ্বিতল ভবন নির্মাণ করে দখলে নেন। চবির তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক এম বদিউল আলমের সঙ্গে সখ্যতা থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

পরে ক্ষমতার পটপরিবর্তনে এ সুযোগ কাজে লাগান হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান। তিনি সেই স্কুল ভবনটি দখলে নেন। সেই ভবনে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সম্প্রতি তিনি পুরো ভবনটি দখলে নিতে কাজ শুরু করেছেন।

জানতে চাইলে হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান বলেন, এটা যাত্রী ছাউনি স্কুল হিসেবে ছিলো। দীর্ঘদিন ধরে আমার কাছে আছে, সেখানে আমি কাঠসহ কিছু জিনিসপত্র রাখছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে লিজের জন্য আবেদন করেছি। এখনো অনুমোদন পাই নি। তাই কাজ করতে পারছি না।

স্কুলের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একটা অংশ ভেঙ্গে পরিষ্কার করেছি ভবনের ভেতর, এজন্য অনেকে ভাবছে আমি দখলে নিয়েছি।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এসএম মনিরুল হাসান বলেন, জোবরা স্টেশনে একটা স্কুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় পড়াতো। কিন্তু সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্বাবধানে ছিলো বলে জানা নেই। সেখানে কতটুকু জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, স্কুলটি সম্পর্কে আমার তেমন জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বলতে হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো জায়গা কেউ দখল কিংবা নিয়মবহির্ভূত ভোগ করলে ছাড় দেওয়া হবে না।

এমএইচ/বাংলাবার্তা