মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জিল্লুর রহমানের ৯১তম জন্মদিন আজ (জীবনী)

মো.আবদুল্লাহ (নিজস্ব প্রতিবেদক)

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমানের ৯১তম জন্মবার্ষিকী আজ (৯ মার্চ)। ১৯২৯ সালের ৯ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব শহরের ভৈরবপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম মেহের আলী মিয়া ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী ও তৎকালীন সময়ে ময়মনসিংহের লোকাল বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং জেলা বোর্ডের সদস্য।

জিল্লুর রহমান ময়মনসিংহের জেলা শহরে শিক্ষা জীবন শুরু করেন। ১৯৪৫ সালে তিনি ভৈরব কেবি হাইস্কুল থেকে মেট্রিক পাশ করেন। তারপর ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্সসহ এমএ ও এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫২ সালে তিনি ভাষা আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৫৬ সালে তিনি কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯৫২ সাল থেকে তিনি বঙ্গবন্ধুর সাথে আওয়ামী মুসলিম লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সাথে ১৯৬২, ৬৬ ও ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭০ সালে তিনি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য ( এমএনএ) নির্বাচিত হন। জিল্লুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। ১৯৫৮ সালের ২৭ জুন তিনি ভৈরবের মেয়ে আইভি রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের বিয়ের এক নম্বর সাক্ষী ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তার রয়েছে এক ছেলে দুই মেয়ে। তার একমাত্র ছেলে নাজমুল হাসান পাপন এখন বিসিবির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ -৬ আসনের সংসদ সদস্য। দেশ স্বাধীনের পর তিনি আওয়ামী লীগের দুইবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং কিশোরগঞ্জ – ৬ ( ভৈরব -কুলিয়ারচর) আসন থেকে ৬ বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে ঘাতকরা হত্যা করলে জিল্লুর রহমানকে সামরিক শাসকরা গ্রেফতার করে। এরপর তাকে একটি মিথ্যা মামলায় ৫ বছর সাজা প্রদান করে। পরে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রী হন। ওয়ান এলিভেনের সময় তিনি দলের জন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করে দলকে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করেন।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ঐ বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি জিল্লুর রহমান ১৯ তম রাষ্ট্রপতি হন। দায়িত্ব পালনকালে তিনি ২০১৩ সালের ২০ মার্চ বিকেলে সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। পরে ঢাকা ও ভৈরবে নামাজে জানাজা শেষে তাকে ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জিল্লুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (৯ মার্চ) ভৈরব প্রেসক্লাবের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। এ সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ তার পরিবারের সদস্যরা অংশ নেয়। এছাড়া জন্মদিন উপলক্ষে মরহুমের ভৈরবসহ পৈতৃক বাসায় দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাবার্তা/এমএম/এমএইচ