মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়ে জবাব দিলেন হাফেজ জসিম

প্রতিবাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক: 
গত ৪ জুন আবদুল ওয়াহেদ ও তার ছেলে আবদুল মাজেদ নোয়াখালী সদর উপজেলার মুছাপুর গ্রামে আবদুল ওয়াহেদের খরিদ ও ভোগ দখলীয় সম্পত্তি ও বাড়ি ঘর দখলের চেষ্টায় ‘জাগো কন্ঠসহ কয়েকটি লোকাল পত্রিকায় সাংবাদিক সম্মেলন করে হাফেজ জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক যে খবর ছাপানো হয়েছে তার প্রতিবাদ ও জবাব দিয়েছেন হাফেজ জসিম উদ্দিন।
 
হাফেজ জসিম উদ্দিনের ভাষায় হুবহু অভিযোগ ও তার জবাব
‘আবদুল ওয়াহেদের ক্রয়কৃত ওয়ারিশি জমি পুকুর, গাছ, বাড়ি তার কাছেই আছে। আমরা দখলের চেষ্টা করিনি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তার বাড়ির বাহিরের সকল জায়গা গুলো মো. ওজি উল্যার নিকট বাৎসরিক লিজ দেওয়া আছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কোন হয়রানি করা হয়নি। বরং আবদুল ওয়াহেদ ও তার ছেলের অপরাধের কারনে মামলা দেওয়া হয়েছে।
 
মামলাগুলো চলমান রয়েছে এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন তিনি, তা সম্পূর্ণ বানোয়াট, মিথ্য এবং হয়রানি ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ।
 
এছাড়া আমার বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, ‘ততকালীন বিএনপি সরকারের আমলে আমি জামাত শিবিরের শীর্ষ ক্যাডার ছিলাম। সে সময় সমাজ কল্যান মন্ত্রী মুজাহিদের মাধ্যমে সমাজ সেবা অফিসে চাকুরী নিয়েছি আমি।’ কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়- আমি কখনো বিএনপি বা জামাত শিবিরের ক্যাডার ছিলাম না এবং কোনো রাজনীতির সাথে কখনো সম্পৃক্ত ছিলাম না। মুজাহিদকে আমি জীবনে কখনো দেখিনি এবং চিনি না।
 
আমি ২০০৩ সালের ২৩ মে যুগান্তর পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানতে পারি সমাজ সেবা অধিদপ্তরে লোক নিয়োগ করা হবে। তার প্রেক্ষিতে যথারীতি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী চাকরির জন্য দরখাস্ত করি। দরখাস্তের প্রেক্ষিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে সরকারী চাকরিতে যোগদান করি।
 
এছাড়া ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিগত ১২ বছরে এ ধরণের মন্তব্য কখনো কেউ করেনি। দীর্ঘ ১২ বছর পর কেন এই প্রশ্ন? এ থেকে প্রমাণ হয় যে- জায়গা সম্পত্তির শত্রুতা ও বিরোধের কারনে মিথ্যা বানোয়াট, ষড়যন্ত্র ও আক্রোশমূলক পরশ্রীকাতরতার বহিঃপ্রকাশ।
 
একই সঙ্গে আমার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, চাঁদাবাজী, বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসা এবং ওয়াজের নামে চাঁদাবাজী করে আসছি বলে যে অভিযোগ দিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
 
এছাড়া আমার বিরুদ্ধে এলজিডির চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে মর্মে যে, অভিযোগ করছে তাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। পাশাপাশি আমার বিরুদ্ধে আবদুল মাসুদের বসত ঘর পোড়ার মামলা ও ফরহাদ উদ্দিনের ঘর নির্মাণে চাঁদাবাজির মামলা আছে মর্মে যে অভিযোগ করা হয়েছে- তা শুধুমাত্র জায়গা সম্পত্তির বিরোধের কারণে করা হয়েছে। অথচ তাদের থেকে আমরা কাগজপত্রের হিসাব অনুযায়ী ৩৫ শতাংশ জমি পাওনা আছি।
 
যার কারনে ২০১২ সালে ২৭ নভেম্বর ফরহাদ উদ্দিন অগ্নিসংযোগ ও চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা করে। ঐ মামলাগুলো দীর্ঘদিন বিচারকার্য চলার পর ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর আলমগীর মো. ফারুকী এডিশনাল ছিপ জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নোয়াখালী জি আর ১৩/১২ইং মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়াই বেকসুর খালাস দেন। এছাড়া ২০১২ সালের চাঁদাবাজির মামলা বিগত ২০১৩ সালের ৭ জুলাই চার্জ হিয়ারিং ধার্য্য তারিখে দায়রা ২২৫/১২ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালত নোয়াখালী মো. সরওয়ার আলম মামলার দায়বার হতে অব্যাহতি প্রদান করেন।
 
এছাড়া গাছ কাটার মামলার যে অভিযোগ করেছে তাদের সাথে ও আমাদের সম্পত্তি বিরোধ থাকায় মিথ্যা মামলা আনয়ন করে জি.আর -১৭২৮, তাং-২০১০ইং ঐ মামলায় দীর্ঘদিন বিচারকার্য চলার পর বিগত ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর মো. শাহাদাত সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারকি আদালত ঐ ৫ নোয়াখালী আমাদের অত্র জি আর ১৭২৮/২০১০ইং মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
 
আমার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীবাহিনী কর্তৃক হামলা করতে গিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশ অমাণ্য করে গত ২০ রমজান মধ্যরাত থেকে ৪০/৫০ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বিভিন্ন তাণ্ডবের মাধ্যমে আবদুল ওয়াহেদের ৪০ বছরের পুরাতন বসত ঘরের দেওয়াল ভেঙ্গে তিন তলা ফাউন্ডেশন নিয়ে বিল্ডিং নির্মাণ শুরু করার যে অভিযোগ করেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট।
 
প্রকৃত পক্ষে আমাদের ১৫১ নং মুছাপুর মুজার ২৮নং খতিয়ান সাবেক ২৮ দাগ, হাল দাগ ৪৬, ৭৪নং ডিপি খতিয়ান যা ওয়ারিশ ও খরিদ সূত্রে হাফেজ জসিম উদ্দিন গং মালিক মালিকীয় জায়গায় ২৪ ফুট দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ১৫ ফুট একটি টিনের ঘর এবং সাইড ওয়াল উপরের টিন দৈর্ঘ্য ২৮ ফুট, প্রস্থ ১৬ ফুট এই দুইটি ঘর বিগত ২০২০ সালের ৩১ মার্চ নিজ জায়গায় নিজ দখলীয় দুইটি ঘর ভেঙ্গে নতুন ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করি। নতুন ঘরের দৈর্ঘ্য ৬০ ফুট, প্রস্থ ২৮ ফুট। বিগত দিন থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত ঘরের নির্মাণ কাজ মিস্ত্রি দিয়ে করছি।
 
উল্লেখ্য, আমার চাচা মৃত হাফেজ আবদুল বাছেত থেকে ১৯৯২ সালের ২০ জানুয়ারি আমার পিতা মরহুম হাফেজ আবদুল ওয়াছে নোয়াখালী সদর সাব রেজিষ্ট্রারী অফিসের রেজিষ্ট্রিকৃত দলিল ৭৩৮নং দলিল মূলে খরিদ করে এম আর আর ২৮ খতিয়ানের ২৮ দাগে ১২ শতক এবং ২৮ খতিয়ানের ২৮ খতিয়ানের দাগের পুরাতন বসত ঘরের এক তৃতীয়াংশ ঘর আমার পিতার নিকট সাব বিক্রি করেন। ঐ জায়গার উপরে আমাদের ওয়ারিশি ও খরিদীয় জায়গায় আমাদের জায়গাতে আমরা ঘর নির্মাণ করতেছি।
 
কাজেই সন্ত্রাসী তাণ্ডবের মাধ্যমে আবদুল ওয়াহেদের বসত ঘরের দেওয়াল ভেঙ্গে বিল্ডিং নির্মাণ শুরু করার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তাছাড়া ২০ রমজান রাতে আমাদের ঘর নির্মানের কোন কাজ হয়নি। কারন, আমাদের মিস্ত্রিরা প্রতিদিন দিনের বেলায় ধারাবাহিক ভাবে কাজ করতে আসেন।
 
আবদুল ওয়াহেদকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়াই তিনি জেলা শহর মাইজদীতে ভাড়া বাসায় অবস্থান করছেন। হাফেজ জসিম উদ্দিন সম্পর্কে তিনি আরও বলেন তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ থাকার পরও এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার থানা পুলিশ কাউকে মানছেন না। তার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করলেও সে সেখানে হাজির না হওয়া ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী আবদুল ওয়াহেদকে উচ্চ আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়া এর বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা চলমান আছে। আবদুল ওয়াহেদের এই সমস্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক ও বানোয়াট। এ ধরণের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
 
আমি চেয়ারম্যান মেম্বার এবং থানা পুলিশের কোন নোটিশ পায়নি। নোটিশ পেলে আমি অবশ্যই হাজির হতাম। আমার বক্তব্যগুলো উপস্থাপন করতাম। আমি আইনকে শ্রদ্ধা করি।
 
তাছাড়া আবদুল ওয়াহেদ তার ছেলে আবদুল মাজেদের মেয়ে মাহিরাকে পড়ালেখা করানোর জন্য গত দেড় বছর আগ থেকে মাইজদী শহরে বাসা ভাড়া থাকেন। অথচ সম্পূর্ণ মিথ্যা উক্তি করে তিনি বলেন, তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়াই তিনি মাইজদী শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন।
 
আবদুল ওয়াহেদ বলেন, হাফেজ জসিম উদ্দিন জমি আত্মসাৎ করতে গিয়ে তার স্ত্রী কামরুন্নাহারকে দিয়ে আবদুল ওয়াহেদের ছেলে আবদুল মাজেদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন ট্রাইবুনালে এক মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। যার নাম্বার ৭৯৮/২০১৭ইং।
জবাব- আবদুল ওয়াহেদের ছেলের অপরাধের কারণেই মামলা দেওয়া হয়েছে। কোন মিথ্যা মামলা করা হয়নি। আবদুল ওয়াহেদের কথাগুলো মিথ্যা।
 
আবদুল ওয়াহেদ বলেন, বর্তমানে হাফেজ জসিম উদ্দিন একটি সন্ত্রাসী বাহিনী সৃষ্টি করে বিভিন্ন ভাবে মানুষকে মিথ্যা মামলা হামলার হয়রানি করে। সকল প্রকার অপরাধমুলক কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছেন। তার এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক। আমি একজন সমাজসেবা অধিদপ্তরের সরকারি কর্মচারী। আমার সাথে কোন সন্ত্রাসী বাহিনী ও কোন খারাপ লোকের সাথে সম্পর্ক নেই। আমি কোরানে হাফেজ। আমার পিতা মরহুম আবদুল ওয়াছেও একজন কোরানে হাফেজ ছিলেন। এমনকি ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৯২ সালের জুন মাস পর্যন্ত মৃৃধ্যারহাট উচ্চ বিদ্যালয়, অশ্বদ্বিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ভূঞারহাট উচ্চ বিদ্যালয়, ওয়াছেকপুর হাইস্কুল, নোয়াখালী হাইস্কুল, ও নুর ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে।
 
আবদুল ওয়াহেদ বলেন, হাফেজ জসিম উদ্দিন একটি ছোট চাকরি করে অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে দালান নির্মাণের উৎস কোথায়? তার এই অভিযোগ সঠিক নয়। কারণ আমরা যে ঘর নির্মাণ করতেছি ঐ ঘর নির্মাণ সম্পূর্ণ করতে খরচ হবে ১৫ লাখ টাকা। অথচ আবদুল ওয়াহেদ মন্তব্য করেন- অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে ঘর নির্মাণ করতেছি। তাছাড়া আমরা দুই ভাই মিলে ঘর করতেছি। আমার ছোট ভাই বাহরাইন থাকে। ঘর নির্মাণের সম্পূর্ণ টাকা আমার মা কাওছার বেগম বহন করছেন।
 
কাওছার বেগমের টাকার উৎস; কাওছার বেগম মাগুরা জেলার দোহার পশ্চিম পাড় বারি মাগুরা মুজার, জি এল নম্বর ৬৭, খতিয়ান নম্বর ২২২৫, দাগ নম্বর ২৭৩৪, ২৮৩৩ এই দুই দাগে এক ষোল আনা ১৪ শতক পিতার ওয়ারিশি জমির মালিক ছিলেন। বিগত ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আমাদের ঘর নির্মাণের জন্য দরি মাগুরা আল আমিন এতিম খানার নিকট ১৮ লক্ষ টাকার দাম সাবস্ত করে বিক্রির বাইনা চুক্তি করেন। চুক্তির দিন ৫ লক্ষ টাকা কাওছার বেগমকে নগদে প্রদান করা হয়। বাকী ১৩ লক্ষ টাকা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ আমার মায়ের একাউন্টে আসলে দলিলে স্বাক্ষর করেন তিনি। আমার মা অসুস্থ থাকায় কমিশন দাখিলের মাধ্যমে দলিল সম্পূর্ণ করা হয়। আমার মায়ের জমি বিক্রির টাকা দিয়ে ঘর নির্মাণের কাজ সম্পর্ণ করতেছি।
আবদুল ওয়াহেদকে আমার পিতা মরহুম হাফেজ আবদুর ওয়াছে সাহেব ৮ বছর বয়স থেকে তার যাবতীয় লেখাপড়া ও ভরনপোষণের খরচ বহন করেন। অথচ তিনি পিতাকে দিয়ে ছল-চাতুরীর মাধ্যমে আমার মায়ের ৫ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করেন। যার বর্তমান মূল্য ২লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া আবদুল ওয়াহেদ ছল-চাতুরীর মাধ্যমে আমার দাদী মবরা খাতুনকে দিয়ে দাদীর পিতার কাছ থেকে পাওয়া হরিনারায়নপুর আনোয়ার মির্জার বাসার পাশে ৩০ শতক জায়গা বিক্রি করে দেন। যার বর্তমান মূল্য দেড় কোটি টাকা। আবদুল ওয়াহেদ আমার দাদী মবরা খাতুনকে দিয়ে ১৫১ নং মুছাপুর মৌজার এম আর আর ১৭নং খতিয়ানের ১৮ গন্ডা জমি অবতার মৌলভীর ছেলে দুলাল মিয়ার কাছে বিক্রি করেন। যার বর্তমান মুল্য ৩৫ লক্ষ টাকা।
 
উল্লেখ্য, এই টাকাগুলো দিয়ে ঢাকা মিটপোর্ট হাসাপতালের সামনে ঔষধের দোকান দেন তিনি। কথা ছিল পরবর্তীতে আমার পিতা আবদুল ওয়াছে সাহেব ও আমার চাচা মৃত আবদুল বাছেদ সাহেবকে তাদের পাওনা টাকাগুলো দিয়ে দিবেন। কিন্তু আবদুল ওয়াহেদ পাওনা টাকাগুলো না দিয়ে কিছুদিন দোকান করার পর কাউকে না জানিয়া দোকানটি বিক্রি করে সৌদি আরব চলে যান।
 
কয়েক বছর সৌদি আরব থাকার পর দেশে আসলে আমার পিতা মরহুম হাফেজ আবদুল ওয়াছে সাহেব আবদুল ওয়াহেদের বিরুদ্ধে আত্মীয় স্বজন ও এলাকার মেম্বার গন্যমান্য ব্যক্তিদেরকে নিয়া সালিশ করেন। তাদের সামনে আমার পিতা মরহুম হাফেজ আবদুল ওয়াছে সাহেব আবদুল ওয়াহেদকে বলেন, ‘আমার স্ত্রীর ৫ ভরি স্বর্ণ আমার মায়ের ত্রিশ শতক জায়গা বিক্রির টাকা এবং ১৭ খতিয়ানের আমার মায়ের ১৮ গন্ডা জমি বিক্রির টাকা আমার মেঝো ভাই আবদুল বাছেদ ও আমি তোমার কাছে এই সমস্ত টাকা গুলো পাওনা। এরপর শালিশদারগন আবদুল ওয়াহেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আবদুল ওয়াহেদ এই সমস্ত কথা অস্বীকার করে আমার পিতা মরহুম হাফেজ আবদুল ওয়াছে সাহেব থেকে প্রমাণ এবং ডকুমেন্ট চান। তারপর সালিশদারগণ দীর্ঘক্ষণ সালিশ করে এক পর্যায়ে তারা মৌখিকভাবে উপস্থিত একটি রায় দেন। হাফেজ আবদুল ওয়াছে সাহেব ও আবদুল বাছেদ দুইজনকে তৎকালীন সময়ে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য আবদুল ওয়াহেদকে সালিশদাররা বলেন। কিন্তু আবদুল ওয়াহেদ এই সালিশ মেনে নেননি। তিনি ডকুমেন্ট ও প্রমাণ চান। তখন থেকেই আবদুল ওয়াহেদ আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আসছে।
 
১৯৯৬ সালে আমার পিতা মরহুম হাফেজ আবদুল ওয়াছে সাহেব অসুস্থ থাকায় আমার ফুফাতো ভাই মো. নিজাম উদ্দিন আমার পিতাকে দেখতে আসলে আমার পিতা নিজাম ভাইকে বলে আবদুল ওয়াহেদদের ছেলে আবদুল মাজেদ বাড়িতে বেকার ঘুরতেছে। তার সিলেট লাইব্রেরীতে নিয়ে কাজে লাগিয়ে দেওয়ার জন্য। তখন আমার আব্বার কথা শুনে নিজাম ভাই খাওয়া দাওয়া দিয়ে প্রতি মাসে ৩,০০০/- টাকা বেতন ধার্য্য করে নিজাম ভাই লাইব্রেরীতে আবদুল মাজেদকে চাকুরী দেয়। পরবর্তীতে নিজাম ভাই লাইব্রেরীর ক্যাশের দায়িত্ব আবদুল মাজেদকে দিয়ে নিজাম ভাই হাউজিং ব্যবসার দিকে চলে যাই। নিজাম ভাই লাইব্রেরীর দোকানে প্রতিদিন ১৮-২০লক্ষ টাকা পাইকারী মাল বিক্রি হত। নিজাম ভাই হাউজিং ব্যবসায় যাওয়ার সুযোগে ক্যাশের দায়িত্ব পেয়ে ৫/৭ বছরের মাথায় ৪০লক্ষ টাকা আবদুল মাজেদ আত্নসাৎ করে এবং ঐ দোকানে তার ছোট বোনের জামাইকে নিয়েও চাকুরী দেন। পরবর্তীতে আবদুল মাজেদের চুরি ধরা পড়লে আবদুল মাজেদ ও তার ছোট বোনের জামাইকে একই সাথে দোকান থেকে বের করে দেওয়া হয়।
 
পরে তারা সিলেট হাজী কুদরত উল্যাহ মার্কেটের পাশে একটি দোকান নেন। কিন্তু ৩ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করে আবদুল মাজেদ কিভাবে কোটি টাকার মালিক হয়? এ প্রশ্ন থেকেই যায়। বর্তমানে আবদুল মাজেদের মাইজদী সুপার মার্কেটে একটি দোকান, মাইজদী মসজিদ মার্কেটে ১টি দোকান, সিলেট হাজী কুদরত উল্যা মার্কেটের পাশে একটি দোকান রয়েছে। এছাড়া সিলেটে ১টি ফ্ল্যাট ও মাইজদী শহরে ১টি ফ্ল্যাটে মালিক আব্দুল মাজেদ।
 
এমনকি ২০০৭ সালে নোয়াখালী মুছাপুর ১১নং নেওয়াজপুর ইউনিয়ন সদর বাড়ীতে ১টি বিল্ডিং নির্মাণ করে তৎকালীন সময়ে ৮ লক্ষ টাকা ব্যয় করে। এই সমস্ত কাজ নিজাম উদ্দিনের টাকা আত্নসাৎ করেই করেছে আব্দুল মাজেদ। আবদুল মাজেদ ছাত্র-জীবনে শিবিরে ক্যাডার ছিল। বর্তমানে সিলেট জামাত শিবিরের অর্থ যোগানদাতা এবং হাজী কুদরত উল্যাহ মার্কেটে বিভিন্ন সময় গোপন বৈঠক করে।
 
আবদুল ওয়াহেদ ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জ ৫ আসনের জামায়াত ইসলামী এমপি প্রার্থী অধ্যাপক আবু নাছের মো. আবদুজ জাহেরের দাড়িপাল্লা মার্কা ১১নং নেওয়াজপুর ইউনিয়নের নির্বাচনের সভাপতি হিসেবে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া আবদুল ওয়াহেদ ঢাকা আলীয়া মাদ্রাসা তৎকালী ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি ছিলেন এবং পাঞ্চায়েতের হাট মাছিমপুর শাখার সভাপতি ছিলেন। এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রাজাকার আল বদরের নেতা ছিলেন।
 
আবদুল ওয়াহেদ আমাদের বন্টনের মামলা নং-১২৬/২০১৭ সহকারী জজ আদালত নোয়াখালী ৯নং আসামী এবং জি আর ১২১২/২০১৭ইং মাটি চুরি মামলার ১নং আসামী।
আমার পিতা মরহুম হাফেজ আবদুল ওয়াছে ১৯৯১ সালে আমাদের বাড়ীর সামনে ১৫১নং মুছাপুর মৌজার এম আর আর ৫নং খতিয়ানে ৩১,৩২ দাগে ৬ শতক জমি মসজিদের জন্য মৌখিক ভবে দান করেন। উনার জীবদ্দশায় ঐ জায়গায় মসজিদ করার জন্য মাটি ভরাট করেন এবং সাইনবোর্ড লাগান। পরবর্তীতে উনি প্যারালাইসিসে অসুস্থ হওয়ায় মসজিদ নির্মাণ করতে পারেননি। আমাকে উনার বড় ছেলে হিসেবে জীবদ্দশায় অসিয়ত করেন মসজিদটি করার জন্য। আমি পিতার অসিয়তের প্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ২৯ অক্টোবর নোয়াখালী সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে গিয়ে মসজিদের নামে দলিল করে দিই। যার দলিল নং-১১৮৪৬।
 
পরবর্তীতে নিজের টাকা দিয়ে ২০১৮ সালের ১৫ জুন মসজিদ প্রতিষ্ঠা করি। ৩০ফুট লম্বা ২৮ ফুট প্রস্থ। মসজিদ প্রতিষ্ঠা থেকে ৬ মাস পাঞ্জেগানা নামাজ চলে। তারপরে ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে জুমার নামাজ শুরু হয় সেখানে। আবদুল ওয়াহেদ ২০১৭ সালের ২২ মে ৩৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে মসজিদের ভিটার মাটি কেটে নিয়ে যান। সে সময় সন্ত্রাসীরা তার ঘরে বসে নেশাদ্রব্য পান করে।
 
এছাড়া সন্ত্রাসীরা আমার স্ত্রীকে ঘরের ভিতরে গুলি করতে যায়। তারপর আমার মা কাওছার বেগম আবদুল ওয়াহেদের বিরুদ্ধে মাননীয় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালত (নোয়াখালী) বরাবর মাটি চুরির মামলা করেন। মামলা নং- জি আর ১২১২/২০১৭ইং।
 
আমাদের উত্তরে দক্ষিনে ৩০ ফুট লম্বা, পূর্ব পশ্চিমে ২২ ফুট চওড়া এবং ৬ ফুট গভীর জায়গা অনুমান ১লক্ষ টাকার মাটি কেটে মাটি গুলো বিবাদীর জায়গায় ফেলে এবং ৬ফুট গভীর করে আরো দেড় লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। তবে এ মামলার আসামী আবদুল ওয়াহেদ জামিনে আছে।
 
২০০৭ সালের ২২ মে আবদুল ওয়াহেদ তার ঘরের জায়গা পরিমাপ করে নির্ধারন করেন। উত্তর দক্ষিনে ১৬ ফুট ৩ ইঞ্চি, পূর্ব পশ্চিমে ৪৫ ফুট নির্ধারন করে আবদুল ওয়াহেদ তার জায়গাতে ঘর নির্মাণ করেন। একই সঙ্গে সেই পরিমাপের কাগজে আবদুল ওয়াহেদ ও ওয়াহেদের স্ত্রী স্বাক্ষর করেন। আমার মা এবং আমি স্বাক্ষর করি। এলাকার গন্যমান্য ছয়জন লোক স্বাক্ষী ছিলেন।
 
১- মো. বেলাল হোসেন পিতা মৃত আবদুল কুদ্দুছ সাং- জাহানাবাদ। ২- মৃত কামরুল ইসলাম পিতা মৃত আহসান উল্যা, সাং-লালা নগর। ৩- হাসমত উল্যা পিতা মৃত আবদুল কাদের সাং- মুছাপুর। ৪- ফজলুর রহমান পিতা মৃত রস্তুম আলী সাং- মুছাপুর। ৫- মো. জসিম উদ্দিন পিতা মৃত সরু মিয়া সাং- বেলানগর। ৬- মো. আজিম উল্যা স্বপন পিতা মৃত জাকের কেরানী সাং- দেবীপুর।
 
উপরোক্ত লোকগুলির উপস্থিতিতে তার বাড়ীর জায়গায় নির্ধারন করে ২০০৭ সালের ২২ মে তার ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। আবদুল ওয়াহেদ অহেতুক আমাদেরকে হয়রানি করার জন্য বিগত চলতি বলছের ৪ মে জাগোকন্ঠ অনলাইন পত্রিকায় যে খবর ছাপান, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভূয়া। এমতাবস্থায় দেশবাসী ও প্রশাসনের নিকট ভূয়া খবরে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ রইলো।’
হাফেজ জসিম উদ্দিন
পিতা মরহুম হাফেজ আবদুল ওয়াছে
সাং মুছাপুর, থানা সুধারাম
মোবাইল: ০১৭১৬-৭৮৭১৬৭
এমএইচ/বাংলাবার্তা