দেশের টেলিভিশন নাটকের প্রযোজকদের সংগঠন টেলিভিশন অ্যান্ড ডিজিটাল প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে মিডিয়াপাড়ায় এখন উৎসবের আমেজ। আগামী ৬ এপ্রিল রাজধানীর গুলশানের ইমানুয়েলসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ নির্বাচন। এতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। তারা ভোটারদের দ্বারে দ্বারস্থ হচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি নিয়ে। এবারের নির্বাচনে দুই জোটে প্রার্থী সংখ্যা ৫৩ জন। ভোটার সংখ্যা ১৭৯ জন। এতে সভাপতি পদে লড়ছেন মনোয়ার হোসেন পাঠান। ভোটকে কেন্দ্র করে যত জল্পনা কল্পনা চলছে তাতে ইরেশ-সাজু পরিষদের চেয়ে বেশির ভাগ ভোটাররা এগিয়ে রাখছেন মনোয়ার পাঠান-মুজিব পরিষদকে। যারা এমনটি মনে করছেন তাদের বেশির ভাগই হচ্ছেন প্রডিউসার এসোসিয়েশনের সাধারণ সদস্য তথা ভোটার। সম্প্রতি এ নির্বাচন নিয়ে নানা বিষয়ে কথা হয়েছে সভাপতি পদপ্রার্থী মনোয়ার হোসেন পাঠানের সঙ্গে। যা পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো।
আপনি নির্বাচিত হলে প্রযোজকদের স্বার্থ সংরক্ষণে কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন?
মনোয়ার : প্রযোজকদের স্বার্থ সংরক্ষণে সবসময় সচেষ্টা থাকবো আমি। সামগ্রিকভাবে সমস্ত প্রযোজকদের উন্নতি, অবস্থান সুদৃঢ় করা ও নিয়মিত যেন কাজ করতে পারে সেই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেব। এমন কোন প্রযোজক আমরা সদস্য হিসেবে রাখবো না, যারা বছরে কোন প্রডাকশনই করতে পারেনি। প্রত্যেকটা প্রযোজকের জন্য ন্যূনতম একটা প্রোডাকশন আমরা নিশ্চিত করবো। এছাড়াও টেলিভিশন শিল্পমাধ্যমের যতগুলো এসোসিয়েশন আছে তাদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চুক্তি করার চেষ্টা করবো- যেন প্রতিটা টেলিভিশন চ্যানেল নাটক নেওয়ার সময়, নাটকের অর্ডার দেওয়ার সময় প্রডিউসার এসোসিয়েশনের এনওসি বাধ্যতামূলক করে। তখন দেখা যাবে প্রযোজকের স্বার্থ এমনিতেই সংরক্ষিত হবে।
সংগঠনের পরিকল্পনার রূপরেখা কেমন হতে পারে ?
মনোয়ার: আমরা সবাইকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে সংগঠনকে আরো কার্যকরভাবে সামনে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবো। সংগঠনের প্রকৃত পেশাজীবী প্রযোজকদের নেতৃত্বে থাকা বাঞ্ছনীয়। সেই পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। পরিবর্তনের সুফল সংগঠনের প্রতিটি সদস্য ভোগ করবে কোন নির্দিষ্ট গোষ্ঠি নয়। এই সংগঠন কোন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের লেজুড়বৃত্তি করার জন্য গঠিত হয়নি। সংগঠন সবার স্বার্থে। কিছু ব্যক্তি প্রভাব বিস্তার করে কাজ দখলবাজি করবে, যোগ্য সাধারণ প্রযোজকরা বঞ্চিত হবে – এই অসমতা চলতে পারে না। যেকোন মূল্যে সংগঠনের সার্বজনীন রূপ ফিরিয়ে আনা সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।
প্রযোজকদের স্বার্থ রক্ষায় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সঙ্গে কি ধরনের চুক্তির ব্যবস্থা করবেন ?
মনোয়ার: টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির মুভ অব পেমেন্ট অনুসারে আর্থিক লেনদেন নিশ্চিত করা হবে। টেলিভিশন শিল্পের সকল পেশাজীবী সংগঠনকে সম্পৃক্ত রেখে আন্তঃসমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করা হবে।
অতীতে প্রযোজকদের স্বার্থরক্ষায় উল্লেখযোগ্য তেমন কাজ হয়নি এ ব্যাপারে আপনি কি বলবেন?
মনোয়ার: বিগত দুই বছরে অনেক প্রযোজকের বিপুল পরিমাণ অর্থ বিভিন্ন চ্যানেলে বকেয়া পড়ে আছে। আমরা অতীতে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রযোজকদের প্রাপ্য বকেয়া অর্থ আদায়ের যে কাযকর ব্যবস্থা করেছিলাম, নির্বাচিত হলে ভবিষ্যতেও এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো। এছাড়া আইন অনুসারে নাটকের ডিজিটাল রাইট সংরক্ষণের চেষ্টা করবো। এছাড়া অনিয়মিত ও আগ্রহী প্রযোজকের ন্যুনতম কিছু প্রযোজনা অনস্ক্রীন নিশ্চিত করা হবে। বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে সংগঠনের ফান্ডকে আবারো সমৃদ্ধ করা এবং সদস্যদের জন্য একটি কল্যাণ তহবিল গঠন করা হবে। এছাড়াও নাটকের বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান, নাটকের প্রচারণার সময় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের/প্রযোজকের নাম অন্তর্ভুক্তি বাধ্যতামূলক করা এবং ডিজিটাল কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট-মার্কেটিং এর উপর কর্মশালার আয়োজন করা হবে।
ভোটারদের কাছে আপনার প্রত্যাশা কি ?
মনোয়ার: ভোটারদের প্রতি আমার আস্থা প্রবল, আশা করি তারা আমাকে এবং আমার সমমনাদের ভোট দিয়ে জয়ী করবেন।