বিশেষ প্রতিনিধিঃ
রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো সকাল থেকেই আন্দোলন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে ধর্ষকের বিচারের দাবি জানাচ্ছেন তারা।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে মুখে কালো কাপড় বেঁধে শত শত শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে মৌন মিছিল করেছেন। প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের মূর্তিগুলোর চোখেও কালো কাপড় বেঁধে দিয়েছেন। বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে সকালে হাতে হাতে প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড নিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী রাজু ভাস্কর্য চত্বরে জড়ো হন। ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে তাদের মুখে কালো কাপড় বাঁধা ছিল। এসময় তারা একই দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের চোখেও বেঁধে দেন কালো কাপড়। এরপর তারা মৌন মিছিল করেন। শিক্ষার্থীদের মৌন মিছিল অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়।
একইদিন ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে টিএসসিতে মিছিল করার পাশাপাশি মধুর ক্যানটিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।
এদিন ঢাবির রোকেয়া হলের সামনের সড়কে প্রতিবাদী চিত্রাঙ্কন ও সেখানে অবস্থান নিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
দুপুর ১২টা থেকে আন্দোলন শুরু করেছে ডাকসু ভিপি নুরের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
এদিকে একই ঘটনায় ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে গতকাল অনশন কর্মসূচি শুরু করেন দর্শন বিভাগের ছাত্র সিফাতুল ইসলাম। তীব্র শীত উপেক্ষা করে প্রায় ৪০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলছে তার অনশন। তার সাথে যোগ দিয়েছেন ডাকসু সদস্য সাইফুল ইসলাম রাসেল, মুস্তাফিজুর রহমান ও আব্দুর রহমান আরও তিনজন।
চার দফা দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তারা অনশন করছেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, অবিলম্বে ধর্ষককে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে; এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করতে হবে; ধর্ষণের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।
তবে এখনও পর্যন্ত বন্ধুরা ব্যতিত তার সঙ্গে প্রশাসনের কেউ দেখা করতে আসেননি জানিয়ে অনশনকারী সিফাতুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখানে বসেছি চার দফা দাবি নিয়ে। মূলত ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে আমরা বসেছি। আমরা ৪০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অনশন করছি। এখন পর্যন্ত প্রশাসন থেকে কেউ আসেনি দেখা করতে, তবে বন্ধুরা এসেছে।’