রায়হান উদ্দিন:
রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে বাঁশের সাঁকোর কাঠামো দুর্বল হয়ে গেছে। ভেঙে পড়ছে সাঁকোর খুঁটি ও পাঠাতনের বাঁশ। তবুও ঝুঁকিপূর্ণ এ সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে মানুষ।
ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ধরনাও দিয়েছে স্থানীয়ার। তবে মেলেনি ব্রিজ-মিলেছে আশ্বাস!
বলছিলাম সীতাকুণ্ডের ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়নের উত্তর ও দক্ষিণ বগাচতর গ্রামের মাঝখানে বদরখালী খালের ওপর অবস্থিত বাঁশের সাঁকোটির কথা।
সরেজমিনে জানা যায়, সেতু না থাকায় দুই পারের বাসিন্দারা যাতায়াত করছে নিজেদের তৈরি বাঁশের সাঁকো দিয়ে। বিশালাকৃতির ঝুঁকিপূর্ণ এ সাঁকো পার হওয়ার সময় ভয়ে থাকে সবাই। পা পিছলে পড়ে গিয়ে ঘটে দুর্ঘটনাও। বর্ষায় জনগণের দুর্ভোগ পৌঁছায় চরমে। একটি ব্রিজের অভাবে এমন দুর্দশা এখানকার বাসিন্দাদের।
এমনকি সাঁকো নির্মাণে সরকারি কোনো অনুদান মেলে না। প্রতিবছর দুই পারের বাসিন্দারা সেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন। চাঁদা তুলে কেনেন বাঁশ-খুটি। দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি ছিল স্থানীয়দের। জনপ্রতিনিধিরা দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও পরে আর তা বাস্তবায়ন হয় না বলে অভিযোগ তাদের। তাই ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে একটি সেতু নির্মাণে সরকারের সংশি¬ষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও মহানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন ভূঁইয়া জানান, ‘গত বর্ষায় যাতায়াতের জন্য গ্রামের লোকজন নিজ খরচে বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেন। একটি সাঁকো এক বর্ষার পার করার পর আর ব্যবহার করা যায় না। স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে আমরা বেশ কয়েকবার ধরনাা দিলেও পেয়েছি আশ্বাস। কিন্তু মেলেনি ব্রিজ। এখন অন্তত একটি বেইলি ব্রিজের দাবি করেন শিক্ষক আলাউদ্দিন।’
সাঁকো দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী স্থানীয় কমিনিউটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী নাজমা আক্তার জানান, ‘সাঁকোটি ভাঙ্গা থাকায় পারাপারে সবসময় ভয়ে থাকি। বিশেষ করে বর্ষাকালে বিশালাকৃতির এই সাঁকো পার হতে কষ্ট হয়। কাঁদা-পানিতে একাকার হয় খালের পার। প্রায় সময় পড়ে গিয়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে। কিছুদিন আগেও সম্পূর্ণ ভাঙা ছিল। এলাকার কয়েকজন যুবক তা সংস্কার করে কিছুটা চলাচলের উপযোগী করে।
এসময় স্বাধীনতার ৫০ বছরেও কোনো নেতা কর্মী বা সরকার মিলেও দুই গ্রামের মানুষের জন্য এই কাজটি না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে।
জানতে চাইলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম নিজামী বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর পিআইওকে (প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে) বিষয়টি অবহিত করেছি। তারা আমাদের জানিয়েছেন বদরখালী খালের ওপর অবস্থিত বাঁশের সাঁকোটি ৮০ ফুট লম্বা। তারা সাধারণত ৫০ ফুটের বেশি সেতু তৈরি করে না। এরপর আমি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জিও লেটার দিয়েছি। যদি বাজেট হয় আশা করছি সেতুটি হবে।’
এসএস/এফএম/বাংলাবার্তা